ভাবি ভাবি করে লেখা হয় না। লিখতে চেয়েছিলাম খাতা-কলমে। কিন্তু এখন তা অচল।
প্রিয় সেঁওতি, মনের ভেতর জমাট বাধা কথারমালাগুলো কিলবিল করছে। কীভাবে বলি, কীভাবে লিখি- ভাবতে ভাবতে পার হয়ে গ্যালো শতবছর!
বরষাশেষে শরতের ঝিরিঝিরি বৃষ্টি কিংবা সোনারঙা রোদ্দুরে কেমন আছো তুমি?
তোমার ভোর, সকাল একটু বেলা- কিংবা দুপুর, সন্ধ্যা, রাত কেমন কাটছে বলোতো?
সময়ের সাথে চলার মতো বাস্তবতা নিশ্চয় এতদিনে রপ্ত করেছো, না কি আগের মতই শত-সহস্র ভুল করে পরে আফসোস করো?
তোমার যে দুর্বলতা ছিল, সব মানুষকে এক মুহূর্তেই আপন করে নেওয়ার মানসিকতা- এখনও কি তা আছে? না কি মানুষের কাছে বারবার ঠক খেয়ে নিজেকে শুধরে নিতে পেরেছো?
তোমার ভাললাগা সময়গুলোর মধ্যে কি এখনও শীতবিকেল বা সন্ধ্যার স্মৃতি মনে পড়ে? হাতড়ে কি পাওয়া যায় সেই মধুক্ষণ?
তোমার চলারপথে কাপড়ের দোকান, খাবারের দোকান, সাজগোজের দোকান পড়ে/ এখন কি যেতে হয় সৌন্দর্যচর্চার !! দোকানের মেয়েগুলো কি এখনও তোমায় জিজ্ঞেস করে, আপু- তোমার চুলগুলো কীভাবে এমন বরষার কালোমেঘের মতো হয়েছে?
চুলে কি পাক ধরেছে একটু, কপালে একটু ভাঁজ? বিশ্বাসের জায়গাগুলো তো ক্ষয়েই গেছে, ঠিক বললাম তো?
তোমার কি এখনও যখন তখন ইচ্ছেমত ঘোরাঘুরির বাসনা জাগ্রত হয়? চটপটির দোকানে হৈ হুল্লোড় করে সবার আগে প্লেটটা নিতে যুদ্ধ করা লাগে?
জানো, সেঁওতি- রাতজাগা সময়ে সেইসব স্মৃতি রোমন্থন করেই পার করি। কখনো হারিয়ে যাই, সেই কৈশোরে- দুরন্ত তারুণ্য এখন আমার রোগ বলতেই পারো।
জানো, সেদিন আয়নার সামনে দাড়িয়ে মাথার চুলগুলো পর্যবেক্ষণ করছিলাম। আমার কপালটা এখন দু’ইঞ্চি বেড়েছে, গালটা নেমে গেছে বেশ খানিকটা- চুলগুলো পেকে রূপার সূক্ষ্ম তারের মতো হয়ে গেছে।
চামড়ার ভাঁজগুলো বেশ স্পষ্ট; মনের জোর কমেছে অর্ধেকের বেশি।
এখন আমার স্মৃতি হাতড়েই দিন চলে, ভাবনার রাজ্যে ভর করেছে নানা আয়োজন। সেখানে বিমূর্ত হয়ে থাকা স্বপ্ন ধরাছোঁয়ার বহুদূরে অবস্থান নেয়...
সেঁওতি, তুমি সুখে আছো তো? তোমার অধরা স্বপ্নগুলোর সফল বাস্তবায়ন হয়েছে কি না- খুব জানতে ইচ্ছে করে...
বয়স বেড়ে গেলে কি ইচ্ছেরা সব মুখ ভেংচি করে হাসে, দূরে দাড়িয়ে?
ভাল থেকো, তোমার একসময়ের চেনা একজন
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১:২১