সাধারণত কোন সংসদীয় আসন হতে নির্বাচিত প্রার্থী মৃত্যু বরণ করার পর সে আসনে উপনির্বাচন হয়। সম্প্রতি আমরা একটা আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হইতে দেখেছি। আসনটি হুইল চট্টগ্রাম- ৮। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী 'নোমান আল মাহমুদ সাহেবই যে জয় লাভ করবেন সে ব্যাপারে কারও সন্দেহ ছিলোনা। প্রার্থী নিজেও নিশ্চিত ছিলেন তিনি জিতবেন। এক কথায় সম্পূর্ণ বাংলাদেশ নিশ্চিত ছিল আওয়ামী লীগ থেকে জনাব কলা গাছ দাঁড়ালেও তিনিই জয়যুক্ত হইবেন। যদিও এসব হাস্যকর জয়ে তৃপ্তি তো দূরে থাক মিছে স্বস্তি পর্যন্ত মিলবেনা। চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা এক বিবৃতিতে দলের নেতা-কর্মীসহ স্থানীয় ভোটারদের অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং এই বিজয় বর্তমান সরকারের প্রতি মানুষের আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছেন। হু হু করে হাসবেন নাকি গলা ফাটাইয়া কাঁদবেন এদের কথায়?
একনজরে চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক চট্টগ্রাম- ৮ উপনির্বাচন। তিন বছরের মধ্যেই এই আসনে উপনির্বাচন হয়েছে দুবার। জাসদ নেতা ও সংসদ সদস্য মঈন উদ্দীন খান বাদলের মৃত্যুর পর ২০২০ সালে একটি উপনির্বাচন হয়েছিল। সেই নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ নেতা মোছলেম উদ্দিন আহমদও সংসদ সদস্য হিসেবে মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই মৃত্যুবরণ করলে আরেকটি উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো।এটি জয় লাভ করছে লীগ মনোনীত প্রার্থী নোমান সাহেব জিতছেন। উক্ত নির্বাচনি এলাকায় সর্বমোট ভোট কেন্দ্র ২০ টি। ভোটার বেড়েছে ৪৪ হাজার। ভোট কমেছে ৮ শতাংশ। তার চেয়েও বড় কথা, ২০২০ সালে বিজয়ী আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন ভোট পেয়েছিলেন ৮৭ হাজার ২৪৬, যা মোট ভোটের ১৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ।২০২৩ সালে এসে একই দলের জয়ী প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ পেয়েছেন ৬৭ হাজার ২০৫ ভোট, যা মোট ভোটের প্রায় ১২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। তার মানে, নৌকার বাক্সেও ভোট কমে গেছে ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
কেন ভোটার উপস্থিতি কম তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা যে সব যুক্তি দেখিয়েছেন তাতে মনে হল তাদের চেয়ে হিরো আলম বেশী যোগ্য। হিরো সাহেব এসব যুক্তির নামে অজুহাত অন্তত দিতেন না। নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করার মত যথেষ্ট সাহসী হিরো আলম। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের বলেছেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল ভোটার উপস্থিতি আরও ভালো হবে।’ পাশাপাশি কিছুটা সান্ত্বনা খোঁজার চেষ্টা করেছেন তিনি, ‘ঈদের লম্বা ছুটি ও শহর অংশের ভোটার নির্দিষ্ট ঠিকানায় না থাকায় এমনটি হয়েছে।...ভোটকেন্দ্রের দূরত্বের কারণেও অনেক ভোটার যাননি।’ এ ছাড়া প্রচণ্ড দাবদাহ, দলীয় নেতা-কর্মীদের একাগ্রতার অভাব, প্রবাসী ভোটারদের অনুপস্থিতি ইত্যাদি সমস্যার কথাও বলতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা।
তথ্য উপাত্ত ও ছবি - দৈনিক প্রথম আলো।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০২৩ রাত ৯:০৯