১. বাড়িতে ভাল খানা পিনা হত। পোলাও, মাংস, ফিরনি জর্দা আরও অনেক কিছু। কারণ ঐতিহ্যগত ভাবে বিশ্বাস করা হত যে বছরের প্রথম দিন ভাল কিছু খেলে সারা বছর ভাল মন্দ খাওয়া যায়।
আর বর্তমানে হাজার তিনের টাকা দিয়ে একটি ইলিশ মাছ কেনা হয়। তারপর গরম ভাতের সাথে মিনারেল ওয়াটার দিয়ে এক বিশেষ ধরণের পান্তা খাওয়া হয়। যার অস্তিত্ব আছে রমনার পথে প্রান্তরে।
এই পান্তা কালচার যে কোথা থেকে এলো তা আমার মাথায় ধরে না।
২. তেমন কিছু কেনা কাটা হত না। কারণ অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার মত ইচ্ছে ও সাধ কোনটিই ছিল না।
এখন? লাল সাদা শাড়ি, সালোয়ার কামিস কিংবা পাঞ্জাবি না কিনলে কি মান সম্মান থাকবে? আড়ং ফারং এর বৈশাখী কালেকশন না হলে কি চলে। আর শাড়ির কাপড় যত সচ্ছ ততই ভাল, নাকি?
সমকাল পত্রিকায় এই পোশাক পরতে বলেছিল বৈশাখে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন
৩. মেলা হত। সে মেলায় তেমন কিছু পাওয়া যেত না। মাটির জিনিস পত্র, খেলনা, বাশি, প্লাস্টিকের নানান জিনিস পত্র। এই থাকতো মেলায়। আর খাবারের জন্য থাকতো লাল জিলাপি। কি স্বাদ সেই জিলাপির। এখনো যেন মুখে লেগে আছে।
আর এখন নানার রকম খাবার পাওয়া যায়। বিরিয়ানি, হট ডগ, বার্গার, কোক, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। আর আমরা সেগুল খাই। যতক্ষণ পারি পেটে চালান করি।
৪. মানুষ বেড়াতে যেত। আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে। তাতে আত্মার বাঁধন দৃঢ় হত।
এখন? বেড়ানোর সময় কই এখন। গার্লফ্রেন্ড কে নিয়ে ঘুরতে হবে না।
আমার মাঝে মাঝে মনে হয় পহেলা বৈশাখে দুই শ্রেণী যায় রমনাতে। একদল যাদের গার্লফ্রেন্ড আছে। আরেক দল যাহারা গার্লফ্রেন্ড নিয়ে এসেছে তাদের গার্ল কে দেখতে।
এ যেন আরেক ভালেন্টানস ডে। ঘুর ফির আর প্রেম কর।
অস্বীকার করে লাভ নেই যে কর্পোরেট দুনিয়া তার স্বার্থেই পহেলা বৈশাখ কে জমাতে সাহায্য করছে। কারণ এ লাভ টি তাদেরই।
তবে সব মন্দেরিই তো কোন না কোন ভাল দিক আছে। এই পহেলা বৈশাখ না থাকলে কি বাচ্চারা জানতে পারত যে বাংলা আলাদা পঞ্জিকা আছে। একটি উৎসব যা শুধু আমাদের। কারণ এ উৎসব কিন্তু আমাদের প্রাণের উৎসব ই শেষ পর্যন্ত। আমরা শত দুঃখ কষ্টের মাঝে দিনানিপাত করি। একদিন না হয় একটু উৎসব ই করলাম। ভুলে থাকলাম সব কষ্ট, বেদনা।
বাংলা নববর্ষ ভোরের সূর্য উদয়ের সাথে সাথে শুরু হয়। তাই অগ্রিম জানিয়ে গেলাম
শুভ নববর্ষ
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:৫৮