আমি ইমু। বাবা ডাকতেন ইমরুল। এখন আমি একটা মাঠে আছি। ব্যাট করতেছি। আমার ব্যাটে কোন স্ট্রোক নেই। ইমুদের ব্যাটে স্ট্রোকের প্রয়োজন পড়ে না। গার্ডও পরি নাই। দমবন্ধ দমবন্ধ লাগে। অবশ্য এক্ষেত্রে শব্দটা দমবন্ধ হবে কি না জানা নাই।
বল করার জন্য একজন লেগস্পিনার দাঁড়িয়ে আছে। ওর বল করা দেখে আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ছে। স্কুলের স্যার একবার লেগস্পিনের মত হাত ঘুরিয়ে আমার কান মলে দিয়েছিলেন। বোলার বল করলো। সে আসে ধীরে। আমার একদম ব্যাট উঠাতে ইচ্ছে করছে না। কিন্তু পৃথিবী গোল, বলও গোল। বলের সাথে ব্যাটের দেখা হয়ে গেলো। তবে পুরোপুরি ব্যাটে লাগলো না, ব্যাটের কানায় লেগেছে। বুঝলাম, পৃথিবী পুরো গোল না। খানিকটা চ্যাপ্টাও। বল একদিকে, আমি একদিকে, ব্যাট আরেকদিকে। বল যে কই গেলো খুঁজে পাচ্ছি না। আপনাকে আমি খুঁজিয়া বেড়াই। অন্য পাশ থেকে দৌঁড়ে এসে অপরপ্রান্তের ব্যাটসম্যান বলতে লাগলো, "ইমুদা, দৌঁড়ান।রান নিতে হবে।" আমি বলে দিলাম, তুমি ফিরে যাও। আজ আমি কোথাও যাবো না। বোলার আবার বল করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। সব ব্যাটসম্যানই রানের পিছনে ছুটে। ছোটবেলায় বাবা শিখিয়েছেন, তোকে মহাব্যাটসম্যান হতে হবে। রানের পিছনে ছুটলে হবে না। রানের মায়া ত্যাগ করতে হবে। বাবার কথা আমি মেনে চলছি। আমার রানের গড়, এডে দেখানো ডেটল ব্যবহারের পর যত পার্সেন্ট জীবাণু বেঁচে থাকে, তার সমান। বোলার বল করলো। বলটা পিংক কালারের। বলের কালার দেখে স্বর্ণার কথা মনে পড়লো। স্বর্ণা আমার প্রেমিকা। ওকে পিংক কালারের শাড়িতে অপার্থিব লাগে। ও আমার ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গে বলেছিলো, আমি নাকি এক বলে দুইবার আউট হওয়ার ক্ষমতা রাখি। এসব ভাবতেই বোল্ড আউট হয়ে গেলাম। কিপার বললো, "এই বলে কেউ আউট হয়!"
"ইমুরা সব বলেই আউট হয়, আউট হতে হয়। " এই কথা বলে মাঠ থেকে চলে এলাম
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৫৪