আমি যদি আসিফ মহিউদ্দিনের মত মিথ্যাবাদী, অসভ্য, ইতর, ভন্ডের ব্যাপারে কিছু লিখি সেটা আমার জন্য সময়ের অপচয় বই আর কিছুই না! তারপরও আমার মনে হলো কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার এই অনবরত ভাবে বলে যাওয়া মিথ্যাগুলো নিয়ে লেখার দরকার আছে কেননা সে এই মিথ্যার উপর দাড়িয়েই আরো অসংখ্য মানুষকে ধোকা দিয়ে যাচ্ছে এবং কিছু মানুষকে পথভ্রষ্ট করছে। হুমায়ুন আহমেদের একটি বইতে পড়েছিলাম মিথ্যা বার বার বললে সত্যের মত শুনায় এই জন্য মানুষ মিথ্যা বার বার বলে অপর দিকে সত্য একবারি বলতে হয়।
কতবড় ইতর আর ছোটোলোক হলে নিজের অনাগত সন্তানের আগমনের মত আনন্দঘন মূহুর্ত্বেও মানুষের মনে বিষবাষ্প ছড়ানো স্ট্যাটাস দেয়া থেকে বিরত থাকে না! বিদ্বেষ আর ঘৃনার উপর দাড়িয়ে যেই ছেলেটার আজকের এই অবস্থান সেই কিনা অন্য মানুষকে সবক দিয়ে বেড়ায় কি করতে হবে, কিভাবে সমাজ পরিবর্তন করতে হবে। আমার থেকে আরো বড় বড় মানের লেখক এই ছেচড়ার মিথ্যাচার নিয়ে অতীতে লিখতে লিখতে হাল ছেরে দিয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে আসিফ মহিউদ্দিন শুধু সেই সমস্ত মানুষকেই নিজের প্রফাইলে রাখে যারা তাকে গালিগালাজ করে কমেন্ট দেয় এবং সেই গালিগালাজ গুলোকে প্রমান হিসেবে ব্যবহার করে নিজের স্বার্থ হাসিল করে। অপর দিকে যারা তার এই মিথ্যাচার গুলোকে কাউন্টার দিয়ে লজিক্যাল লেখা লিখে করে তাদেরকে ব্লক লিস্টে রেখে দেয়। মহা ধুরন্ধর এবং পিছলা এই বান্দা। বাটপারির উপর যদি কোনো পুরস্কার থাকত নিঃসন্দেহে সেটাতে তিনি প্রথম হতেন।
আসিফ মহিউদ্দিনের বউ সম্ভবত সন্তান সম্ভবা এবং সেই আনন্দে নাম রাখা বিষয়ক এবং কিভাবে বাচ্চা পালবেন সেইটা নিয়ে এক বিশাল স্ট্যাটাস প্রসব করেন! এবং আমার ফ্রেন্ডলিস্টের কোনো একজনের কল্যানে সেই স্ট্যাটাস খানা আমার ওয়ালে আসে অতঃপর সেই স্ট্যাটাসখানা পড়বার পর বুজতে পারলাম যে আসিফ মহিউদ্দিন যেই লাউ সেই কদুই রয়ে গেছেন! আমি, আমি করা মানুষিক ভাবে অসুস্থ এক রোগী! যদিও তার প্রত্যেকটি স্ট্যাটাসই বিদ্বেষমূলক এবং নতুন কোনো কিছু নেই তারপরও ভেবেছিলাম যে বাবা হওয়ার আনন্দে হয়ত নিজের কুৎসিত অন্তরখানা কিছুক্ষনের জন্য আলোকিত হবে!
আমার লেখার শুরুতেই তার আনবর্ন বেবীর জন্য রইল একরাশ শুভকামনা এবং এই লেখার কোনো জায়গায় সেই অনাগত বাচ্চার ব্যাপারে কোনো কিছু লেখা থাকবে না! যাই হোক এখন মূল প্রসন্গে আসি, আসিফের স্ট্যাটাসের শুরুটা খুব সুন্দর করেই শুরু করেছিলেন নিজের বাবা হওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করে এবং সেই বাচ্চার কি নাম হবে সেটা নিয়ে কিন্তু একটু নিচে যেতেই তার চিরাচরিত মিথ্যাচার শুরু হলো! তার নমুনা গুলো একে একে নিচে তুলে ধরা হলো!
মাদ্রাসার ছাত্রদের নিয়ে মিথ্যাচার:-
আসিফ মহিউদ্দিনের মতে মাদ্রাসার ছাত্রদের নাকি কাফের নাস্তিকদের কুপিয়ে মারার নির্দেশ দেওয়া হয়, তারা বউ পেটায় আরো অনেক অনেক অপবাদ তার সর্বশেষ স্ট্যাটাসটিতে করেছে(সবসময় করে থাকেন)।
এবার একটু ভেবে বলুনতো শেষ কবে বাংলাদেশে কোনো মাদ্রাসার ছাত্র একসাথে ৫০জন মানুষকে কুপিয়ে বা অন্য কোনো ভাবে হত্যা করেছে? আচ্ছা ৫০ তো অনেক দূরের সংখ্যা আমাকে বলুন শেষ কবে কোনো মাদ্রাসার ছাত্র পাঁচ জন বেধর্মী বা ভিন্নধর্মী মানুষকে হত্যা করেছে। তাহলে এই যে বার বার কুপিয়ে হত্যা করার কথা বলা হয় সেটা কিসের ভিত্তিতে বলা হয়। অপর দিকে কিছুদিন আগে আমেরিকার লাস ভেগাসে এক লোক যার সাথে ধর্মের দূরতম সম্পর্ক নেই সেই ব্যাক্তি একসাথে গুলি করে ৫৮ জন মানুষকে খুন করেছে এবং আর ৩০০ জন মানুষকে হত্যা করেছে। এমনকি সেই ব্যাক্তি আধুনিক সমাজে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন এবং জানা গেছে বাস্তব জীবনে তিনি কোনো ধর্ম পালন করতেন না। আরো তথ্য দেই আমেরিকাতে ১৯৮০ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত যতগুলো সন্ত্রাসী হামলা সংঘটিত হয়েছে তার ৯৪% করেছে অমুসলিমরা। উনি যেখানে থাকেন মানে ইউরোপে গত পাঁচ বছরে ১০০০ এর উপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এবার একটু ধারনা করুনতো কত শতাংস মুসলিম এর পিছনে জড়িত! মাত্র ২% এরো কম। এবার আবার বাংলাদেশে ফিরে আসি, বাংলাদেশে মাদ্রাসা ছাত্রের সংখ্যা কতজন! প্রথম আলোর জরিপ অনুযায়ী সারা বাংলাদেশে মোট চৌদ্দলাখ মাদ্রাসার ছাত্র পড়াশোনা করেন। এবং বাংলাদেশে মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় ৮৯% অমুসলিমের সংখ্যা হচ্ছে প্রায় এক কোটি ৩০ লক্ষ। এখন যদি এইসব মাদ্রাসা ছাত্রদের আসলেই কাফের কুপিয়ে মারার হুকুম দেওয়া হত তাহলে প্রতিদিন কত জন করে অমুসলিম মারা যেতো একটু ধারনা করুনতো! এবং প্রতিদিন খবরের পাতায় কয়জন করে অমুসলিম মৃত্যুর খবর আসত।
আর বউ পেটানোর যেই কথা সেটাও অসত্য। নারী নির্যাতনের ঘটনা বরং ইউরোপ আমেরিকার মত উচ্চ শিক্ষিত দেশের লোকদের মধ্যেই বেশি। প্রতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর ২২ শতাংশ মহিলা তাদের পুরুষ পার্টনার কতৃক নির্যাতনের শিকার হন এর মধ্যে ডেনমার্কে এর পরিমান ৩২% ফিনল্যান্ডে ৩০ এবং সুইডেনে ২৮ শতাংশ।
শিশু নির্যাতন:
আসিফ মহিউদ্দিন শিশু নির্যাতনের যে অভিযোগ করেছেন সেটাও একটা মিথ্যা ক্লেইম। উনি যেভাবে একেবারে স্পেসিফিক ভাবে অভিযোগ করলেন যে জার্মানীতে আরব পরিবারের লোকজনরা তাদের বাচ্চাদের পিটিয়ে চোখ লাল/নীল করে ফেলেন এবং স্কুল থেকে অভিযোগ আসে এই তথ্যটা তিনি কোথা থেকে পেলেন। বরং আমি লন্ডনে থাকতে দেখেছি আরব পরিবারের ছেলে মেয়েরা অনেক ধনী হয়। আমার সাথে কিছু এরাবিয়ান ছেলে ক্লাস করত। এদের সবাই দামী দামী স্পোর্টস কার নিয়ে ইউনিভার্সিটিতে আসত এবং সবাই দামি ব্রেন্ডের পোশাক আশাক পরত। আর বাচ্চাদের শাষনের ব্যাপারটা সব সমাজেই করা হয়। ছোটো বেলায় দোষ করলে আমাদের শাষন করত দেখেই আজকে আমরা ঠিক মত মানুষ হয়েছি। আমার আব্বা আমার গায়ে কোনো দিন হাত তুলেন নাই তারপরও আমি ছোটো বেলায় আব্বাকে জমের মত ভয় পেতাম। এটা আসলে সম্মান থেকে।
বৃদ্ধাশ্রম:
ইউরোপ আমেরিকায় বৃদ্ধাশ্রমের আইডিয়াটা সবাই মাথায় রাখে। আসিফ যেহেতু সাদা চামড়ার লোকেদের প্রভু শিকার করে এবং দিনরাত পা চাটাচাটি করে তাই তারো সেটা মাথায় রাখা উচিত। কারন সেখানে পরিবারের মধ্যে কোনো বন্ডিং থাকে না। ছোটো বেলার থেকে যেমন আমাদের একটা পারিবারিক শিক্ষা দিয়ে আসা হয় পরিবার সম্পর্কে, বাবা মাকে সম্মান দেওয়ার প্রতি, মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত, বাবা মায়ের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন, নিজ স্ত্রী ছারা অন্য কোনো নারীর সাথে সম্পর্ক না করার বেপারে, এই ব্যাপারগুলো ওদের সমাজে নেই। ওরা বয়স ১৮ হওয়ার সাথে সাথেই নিজেদের মত চলতে শুরু করে। আঠারো বছর হওয়ার আগেই এরা যৌনসংগমে লিপ্ত হয়।বিয়ের আগেই বাচ্চা হওয়ানো তাদের কাছে নরমাল বিষয়। একজন ছেলের তিন-চারজন বাবা থাকে কারন ওদের মধ্যে ডিভোর্সের প্রবনতাও বেশি। ছোটা বেলা থেকেই বাচ্চারা তাদের বাবা মাকে সম্মান করতে শিখে না, কারন শাষনের অভাব এবং উত্তম শিক্ষার অভাব। এবং সন্তানের সাথে পিতামাতার সম্পর্ক খুব হালকা থাকে। এদের মধ্যে আমি একটা জিনিস খেয়াল করেছি যে একই পরিবারের সবাই কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে যার যার বিল সে সে পরিশোধ করে। এ সমস্ত কারনে দেখা যায় অধিকাংশ সাদারাই বৃদ্ধ বয়সে বৃদ্ধাশ্রমে একাকী জীবন কাটায়। এটার সাথে আত্নসম্মান বোধের কোনো সম্পর্ক নেই।
মানব জাতির শিক্ষক:
তিনি মানব জাতির শিক্ষক নামক একটা প্যারা লিখেন। সেখানে তিনি লেখার মধ্যে একটি বড় ফাক রেখে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন ধর্ম পালন না করলে। কিন্তু মূল বিষয়টা হচ্ছে কোনো অন্যায় কাজ করলে কি শাস্তি হবে সেটার বর্ননা সেখানে দেওয়া আছে। কেউ যদি মানব হত্যা করে, কেউ যদি চুরি করে, কেউ যদি খুন করে, কেউ যদি গরীবের হক মেরে দেয় তাহলে তাদের কি শাস্তি হবে সে বিষয়ে বর্ননা করা হয়েছে। এখন আপনি কি বলেন ইহকালে যদি আপনি পাপ কাজ করেন তাহলে পরের জীবনে কি এইসব সাজা আপনার প্রাপ্য নয়?
আর এই যে আসিফ মহিউদ্দিন বার বার উন্নত বক্ষের হুরের কথা বলে বেড়ায় এটাও একটা মিথ্যা প্রচার। আমারতো মনে হয়। সে নিজেই সারাদিন উন্নত বক্ষের হুরের কথা চিন্তায় মগ্ন থাকেন দেখে বার বার এই কথা গুলো বলেন।
যাই হোক একটা ইতরকে নিয়ে লিখে আমার এবং আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করলাম। শেষ করার আগে এই ইতরের কিছু অতীতের কিছু কার্জকলাপ মনে করিয়ে দেই। এই ইতর এক সময় যৌবনযাত্রা নামক একটি ওয়েবসাইটের এডমিন ছিলো এবং চটি গল্প লিখে বেড়াতো। এই আসিফ মহিউদ্দিন খুবই গরীব ঘরের ছেলে ছিলো। সম্ভবত অভাব অনটনে বড় হওয়ার ফলে ছোটো বেলাই তার মানষিক বিকৃতি ঘটে এমনকি নিজের বাবা মাকেও জীবিত অবস্থায় কোনো সম্মান জানায়নি। তার বিরুদ্ধে অন্যের লেখা চুরি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ারো বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে থাকাকালীন একটি প্রাইভেট কম্পানীতে কম বেতনে চাকরি করত। ধর্মবিদ্বষী লেখা লেখি করেই মূলত লাইম লাইটে আসে এবং পরবর্তীতে সেটাকে কাজে লাগিয়ে জার্মানীর এসাইলাম ভিসা পায় এবং বর্তমানে সেখানেই বসবাস করছে। ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো, মিথ্যা বলা এসবই তার মূল কাজ এবং পেশা।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:৩০