ব্লগ লিখার সুবিধে হচ্ছে কবে কি করলাম, কোথায় কোথায় ঘুরতে গেলাম তার সব কিছু বিস্তারিত তথ্য জমা করে রাখা যায়। কখনো স্মৃতির পাতায় ধুলো জমে গেলেও সমস্যা নেই। ভুলে যাওয়া মানুষের সহজাত পবৃতী। কিন্তু ভুলে যাওয়ার আগেই সেটাকে স্বযত্নে কোথাও তুলে রাখা আমাদের দ্বায়িত্ব। আমার ঘুরতে ভালো লাগে। যখনি সুযোগ মিলে বউকে সাথে নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে যাই। বিয়ে করার আগে অবশ্য একাই বের হতাম। সাথে সবসময় ক্যামেরা রেডি থাকে আর যখনি সুযোগ মিলে টুপ করে সেটা ব্লগে টুকে রাখি ভুলে যাওয়ার আগেই। এ পর্যন্ত নিজ দেশ বাদে আরো পাঁচটি দেশ ঘুরা হয়ে গেছে। কিন্তু আফসোস প্রথম দিগকার ভ্রমন গুলো সেভাবে কোথাও লিখে রাখা হয়নি। কিন্তু এখন ব্লগে লিখে রাখা ছারাও ভিডিও বানিয়ে রেখে দেই। যা আমার ভ্রমনগুলোকে সবসময় প্রানবন্ত করে রাখতে সাহায্য করবে। আপনারা যদি কেউ সেই ভিডিও গুলো দেখতে চান তবে আমার ইউটিউবের চ্যানেলে গিয়ে দেখে আসতে পারেন। লিংক দিয়ে দিচ্ছি এখানেঃ- https://www.youtube.com/user/asifitproduction
ইংল্যান্ড, ওয়েলস, ফ্রাস্ন, কানাডা আর আমেরিকা এখন পর্যন্ত এ পাঁচটি দেশ ভ্রমন করা হয়েছে। তাই ভ্রমনের অভিজ্ঞতা মোটামুটি ভালোই হয়েছে। লন্ডনে আমি ছিলাম প্রায় সাত বছর। এইতো গেলো বছরেই আমেরিকা আসলাম। তাই লন্ডনের স্মৃতি এখনো বেশ তরতাজা। লন্ডন বেশ পুরানো একটা শহর। বাড়িঘর গুলো ছোটো ছোটো আর খুব ঘিন্জি। কিছু কিছু বাড়ি প্রায় দুই তিনশ বছরের পুরানো। আর অধিকাংশ বাড়ি কাঠের তৈরি। গৃষ্মের তিন মাস বাদে বাকি পুরাটা সময় জুড়েই ঠান্ডায় জমে থাকতে হয়। পুরান বাড়িঘর আর শ্যাত শ্যাতে পরিবেশের কারনেই অধিকাংশ বাড়িতেই দেখা মেলে ছারপোকাদের। উফ ছারপোকা যে কি জিনিস যারা এর ভুক্তভুগী কেবল মাত্র তারাই বুঝে। পুরা রাতের ঘুম হারাম করে দেয়। এই ছারপোকার কারনে আমাকে একবার পুরা বাসাই ছেরে দিতে হয়েছিল। সাথে ফেলে আসতে হয়েছিল সব লেপ তোশক। জামা কাপড় কিছু ফেলে দিয়েছি আর কিছু তিনবার ধুয়ে নতুন বাসায় এনেছিলাম। আরেকটা জিনিস হচ্ছে ইদুর। হ্যামিলনের বাসি ওয়ালা গল্পটার উৎপত্তিও কিন্তু এই লন্ডনেই হয়েছিল।
এবার লন্ডনের আবহাওয়া নিয়ে দুয়েকটা কথা বলি। এখানে একটা কথার প্রচলন আছে যে লন্ডনে থ্রি ডাব্লিও এর উপর কখনো বিশ্বাস রাখা যায় না। প্রথম ডাব্লিও ওম্যান, দ্বিতীয় হচ্ছে ওয়ার্ক আর তিন নাম্বারটি হচ্ছে ওয়েদার। এই ঝলমলে রোদ্র তো দুই তিন ঘন্টা পর বৃষ্টি। এই জন্যই ঘর থেকে বের হওয়ার সময় সব সময় ছাতা হাতে বের হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে কেউ যদি সামারে আসে তাহলে সবচে সুন্দর সুন্দর দৃশ্য গুলো দেখতে পারবে। সামারের তিন/চার মাস ইউরোপীয়ানদের জন্য পুরা ঈদ। এরা একটু সুর্য দেখলেই বাইরে মাদুর বিছিয়ে শুয়ে রোদ পোহায়। সমুদ্র সৈকত গুলোতো থাকে লোকে লোকারন্য। তবে দিনে যতই গরম থাকুক রাতে আপনার গায়ে হালকা শুয়েটার কিন্তু রাখতেই হবে।
লন্ডনের রাস্তাঘাটো অনেক সরু। কিছু কিছু রাস্তা এমন যে একটা গাড়ি গেলে আরেকটা গাড়ির আসার পথ বন্ধ হয়ে যায়। এত সরু রাস্তা হওয়ার পরও লন্ডন টিকে আছে কেবল মাত্র এর আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেন সার্ভিসের কারনে। ওয়ান অব দা ফাইনেস্ট ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম। লন্ডনের মেট্রো রেলে উঠলে দুটি বাক্যের সাথে আপনি পরিচিত হবেন। একটি হচ্ছে "মাইন্ড দা গ্যাপ" আরেকটি হচ্ছে "টেক অল ইউর বিলোন্গিংস উইথ ইউ।" যদিও ব্যাস্ত সময়ে এই আন্ডারগ্রাউন্ডের ট্রেনে উঠতে রিতিমত যুদ্ধ করতে হয়। লন্ডনের মানুষ নিজের প্রাইভেট গাড়ির থেকে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করতে বেশি সাচ্ছন্দ বোধ করে।
যাই হোক আজকে আর লিখতে ভালো লাগছে না। পরবর্তীতে আরেকদিন লিখতে বসব। আমি জানিনা লেখাটা কেমন হচ্ছে। যদি পড়ে ভালো লাগে তবে জানাবেন। আজকের মত বিদায় ভালো থাকবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৪২