গত ১০ অক্টোবর-১৭ আমার মোটরসাইকেল ড্রাইভিং টেষ্ট ছিল। রাত্রে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে, সকালেও হচ্ছে। খুবই চিন্তায় ছিলাম সকাল ৮টায় ডিসি অফিসে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে কারবো কিনা? অবশেষে পেরেছি, রেইন কোর্ট পরেই ঢুকেছি। বিআরটিএ -এর ট্রাফিক ও রোড সাইনের একটি লিফলেট সহ প্রশ্ন পত্র হাতে পেয়েই লেখা শুরু এবং শেষ। "ট্রাফিক ও রোড সাইন" লিফলেটটি লিখিত ও দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষায় অনেক কাজে লেগেছে নি:সন্দেহে। এই এক পাতার লিফলেটটি হাতে ধরিয়ে দিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০ টাকা করে নিয়েছে তারা। আমার কাছে টাকা চাইলে পকেট হাতড়ে ৪টা ৫০০ টাকার নোট ছাড়া আর কোন ভাংতি টাকা না থাকায় ১০ টাকা দেয়া থেকে বেঁচে গেলাম।
দুপুর ১:৩০ দিকে ফিল্ড টেষ্ট, মাঠ ভেঁজা থাকায় রাস্তার উপরেই পরীক্ষা নেয়া হলো। আমার পালা আসলে যথানিয়মে প্যাচ পুচ মেরে চলে আসলাম। বাসায় ঢোকার পথেই পাশের বাসার আংকেলের সাথে দেখা, রিটায়ার্ড পার্সন।
তিনি আমাকে বললেন কোথায় গিয়েছিলেন?
আমি উত্তর দিলাম: ড্রাইভিং এক্সাম ছিল।
তিনি বললেন: "আপনি লাইসেন্স পাবেন না।"
আমি বলি: কেন? আমি কি রোহিঙ্গা? লাইসেন্স পাবো না!
আংকেল: আপনি পরীক্ষায় যতই ভালো করেন না কেন, ওরা আপনাকে ফেল করিয়ে ছাড়বে। আপনি যতই ভাল মানুষ হন না কেন, লাইসেন্স আপনি পাবেন না।
আমি: তাহলে উপায় কি?
আংকেল: টাকা লাগবে। মানি ইজ দ্যা সেকেন্ড গড।
আমি: আর কত টাকা দেবো?
আংকেল: কত টাকা দিয়েছেন?
আমি: ৬০০০/-
আংকেল: ও ওও, তাহলে পাবেন। কিচ্ছু করার নেই্। টাকা আপনাকে দিতেই হবে।
তাহলে আমি লাইসেন্স পাচ্ছি। আশা করা যায়। উল্লেখ্য: সাভাবিক ভাবে মোটরসাইকেলের লাইসেন্স পেতে ৩০০০/- থেকে ৩৫০০/-
টাকার মত লাগে।
এই লেখাটার একমাত্র উদ্দেশ্য-
বাংলাদেশের সামাজিক অবক্ষয়, সাভাবিক জীবন যাত্রার মান কতটা নিচে নেমে গেলে একজন মুরুব্বি লোকের মাথায় এই কথা বদ্ধমূল হয় যে, টাকা ছাড়া কিছুই হয়না।
এ কারনেই আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, আহা! ফখরুদ্দিনের সরকার যদি দীর্ঘজীবি হতো।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২১