মাশরাফি বিন মুর্তজা আজ আর কোন একক ব্যক্তির মাঝে সীমাবদ্ধ নন।তিনি ছড়িয়ে পড়েছেন ষোল কোটি বাঙালীর মাঝে অনুপ্রেরণা হয়ে।“মাশরাফি” শব্দটি মানেই সাহসী,অনুপ্রেরণাদায়ী একজন লড়াকুযোদ্ধা, একজন পথপ্রদর্শক। সারা বিশ্বে এই নামটি এখন বিস্ময়। যার নামটি কানে আসলেই একজন তেজদীপ্ত হার না মানা সেনাপতির ছবি ভেসে ওঠে। যে কিনা ব্যার্থতার ঘোর অমাবস্যা কাটিয়ে এনে দিতে পারেন বিজয়ের হাসি। ব্যক্তি জীবনে নানান শারীরিক, মানসিক সমস্যা কাটিয়ে যিনি হয়ে উঠতে পারেন একটি ক্রিকেট পাগল দেশের স্বপ্নের নায়ক।
একের পর এক ডাক্তারের ছুড়ির নিচে নিজেকে সপে দিয়েছেন, আবার ফিরে এসেছেন মঞ্চ কাপিয়ে। শত বাঁধাও যাকে দমাতে পারে নাই তার লক্ষ্য অর্জনে। প্রচলিত ধারণার বাহিরে এসে যিনি হয়ে উঠেছেন অনন্য এক যোদ্ধা। দেশপ্রেম যার মূল মন্ত্র। বিশ্বকাপের মঞ্চে রমাঞ্চকর জয়ের পড়ে যিনি স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে জয় উৎসর্গ করেন দেশের স্বাধিনতা সংগ্রামে নিবেদিত প্রাণ সকল মুক্তিযোদ্ধাকে। যিনি একজন নিরঅহংকার সাদা মনের মানুষ,শুধু তরুণ প্রজন্ম নয় সকল প্রজন্মের মানুষের আদর্শ হয়ে ওঠেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাকে মাতৃস্নেহে বুকে টেনে নেন এবং মাতৃভক্ত শিশুর মত তিনিও সাড়া দেন।আবার সেই তিনিই সাধারণ মানুষের মাঝে অকপটে মিশে যান নড়াইলের চায়ের দোকান অথবা রাস্তায়।যিনি হার মানান রূপকথার সুপারম্যান কেও।
পুরো বাংলাদেশ দলের মাঝে “মাশরাফি” শুধু নাম না, একজন ব্যক্তি বা শুধু একজন অধিনায়ক নন। এসবের চেয়েও ঢেঁড় বেশীকিছু একজন মাশরাফি।তিনি সবার আশ্রয়স্থল। যিনি সহজে বলে দিতে পাড়েন চিন্তা করিস না শুধু নিজের স্বাভাবিক খেলা খেলে যা। মাশরাফি অফফর্ম এর কোন ব্যাটসম্যান বা বোলারকে জাগিয়ে তুলতে পাড়েন অনেক বেশী শাণিত করে। তিনি কি পরশ পাথর? যা ছুঁয়ে দেন তাই সোনা হয়ে যায় কিভাবে? দলের সিনিয়র জুনিয়র সকল খেলোয়াড়ের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় ও ভালবাসার নাম মাশরাফি।
এই লড়াকু খেলোয়াড়ের নাম কি আমরা বাঙলা একাডেমীর অভিধানে একটি অর্থবহ শব্দ হিসাবে সংযুক্ত করতে পারিনা? আজন্ম যিনি একজন হার না মানা যোদ্ধা,অফুরন্ত অনুপ্রেরণার উৎস, দূর্বলের আশ্রয়স্থল, সকলের নায়ক,মাঠের ভেতরে যিনি সাহসের প্রতীক একজন আগ্রাসী বোলার,ফিল্ডার, ব্যাটসম্যান এবং মাঠের বাহিরে যিনি একজন বিনয়ী ভাল মানুষ। আমরা কি তার নাম “মাশরাফি” শব্দটি বাঙলা একাডেমীর অভিধানে সংযুক্ত করে বাংলা অভিধানকে আরো একটু সমৃদ্ধ করতে পারিনা?
তানজির খান
কবি
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:৫০