এমন মানবজনম আর কি হবে ।
মন যা করো ত্বরায় করো এই ভবে ।।
অনন্ত রূপ সৃষ্টি করলেন সাঁই
শুনি মানবের উত্তম কিছু নাই
দেব-দেবতাগণ করে আরাধন
জন্ম নিতে এই মানবে ।।
কত ভাগ্যের ফলে না জানি
পেয়েছ এই মানব-তরণী
বেয়ে যাও ত্বরায়, তোমার সুধারায়
যেন ভারা না ডোবে ।।
মানুষে করতে মাধুর্য ভজন
তাইতে মানবরূপ গঠলেন নিরঞ্জন
এবার ঠকলে আর না দেখি কিনার
লালন কয় কাতরভাবে ।।
-লালন ।
এই বাংলার মাটিতে বাউলগন গেয়ে গেছেন মানবতার গান , লালনগীতি, মারফতি , জারিগান সহ নানা গানের বানী তে ছিল , মানবতা, প্রেম বিরহ , আবহমান বাংলার লোকগাথা । তাদের মরমী বানীতে গাথা আছে গ্রাম-বাংলার জীবনের রূপ কথা ।
প্রায় বছর খানিক আগে নিউজে দেখেছিলাম , উত্তর বঙ্গে অনেক গুলো বাউল শিল্পীর বেশরীয়তির অভিযোগে চুল কেটে দেয়া হয় সেই সাথে করা হয় অপমান । অথচ এই বাউল শিল্পীগন আমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতির একটা অংশ ।
মোল্লাগন বিভিন্ন ওয়াজে বয়ান দিয়ে পশ্চিমা সাংস্কৃতির কঠোর ভাবে সমালোচনা করেন , এবং সেই সাথে ছাগুর পঙ্গপাল নাউজুবিল্লাহ বলতে বলতে মুখে থুবড়ি ফুটান !! পহেলা বৈশাখ পালন করলে পাপ কিন্তু আরবী বছরের প্রথম দিন উদযাপন করলে সওয়াব । জন্মদিন পালন করা হারাম কিন্তু ঈদ-উল-মিলাদ্দুন নবী পালন করা পূন্য । বিধর্মী কে বিয়ে করলে জাহান্নাম কিন্তু কাফের কে হত্যা করলে জান্নাত । ৪ টি বিয়ে করা জায়েয কিন্তু প্রেম-ভালবাসা হারাম ।
মোল্লাগন বলে থাকেন ইসলামের মাঝেই মানবতা !! কই আমি তো মানবতা দেখি না । আমি তো ইসলামের মাঝে খুজে পাই মরুভুমির রুক্ষতা । ওয়াজ করতে যেয়ে যখন কোন হুজুর চিৎকার করে বলে " ভাইয়েরা আমার , আপনারা কি বাংলাদেশী নাকি মুসলিম ? ছাগুর পাল চিৎকার করে বলে মুসলিম "
আমার ও তখন গর্ব নিয়ে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে আমি এই বাংলার কোমল পলিমাটির সন্তান , আমি বাংলাদেশী !!!!