জামাত শিবির নিয়ে চিন্তা করতে গেলে অবাক হতে হয় , তাদের সাংগঠনিক কাঠামো অন্য দল গুলোর চেয়ে অনেক মজবুত । আর সমর্থক গুলো এমন অন্ধ বিশ্বাসী যারা না মিশেছেন তারা ছাড়া অন্য কেউ বলতে পারবে না ।
প্রাথমিক দিকে শুধু মাত্র ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে শুরু হয় জামাত সমর্থকদের ব্রেইন ওয়াস ! এবং তাদের কর্ম পদ্ধতি এমন ভাবে সাজানো একজন মানুষ তার চিন্তা চেতনা মনুষ্যত্ব বিসর্জন দিতে বাধ্য । তাদের কে এমন ভাবে গড়ে তোলা হয় , প্রয়োজনে দলের জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত ।
তাদের সাংগঠনিক কিছু গুরুত্বপূর্ন বিষয় তুলে ধরছিঃ
সংগঠনের মৌলিক বিশ্বাসঃ
১) মানুষ আল্লাহ ব্যতীত আর কাহাকেও নিজোর পৃষ্ঠপোষক , কার্য সম্পাদনকারী, প্রয়োজন পূরণকারী, বিপদ দূরকারী, ফরিয়াদ শ্রাবণকারী ও গ্রহণকারী এবং সাহায্যদাতা ও রক্ষাকর্তা মনে করিবে না। কেননা তিনি ব্যতীত আর কাহারও নিকট কোন ক্ষমতা নাই।
২)আল্লাহ ব্যতীত আর কাহাকেও কল্যাণকারী মনে করিবে না, কাহারও সম্পর্কে অন্তরে ভীতি অনুভব করিবে না, কাহারও উপর ইনর্ভর করিবে না, কাহারও প্রতি কোন আশা পোষন করিবে না এবং এই কথা বিশ্বাস করিবে না যে, আল্লাহর অনুমোদন ব্যতীত কাহারও উপর কোন বিপদ-মুসীবত আপর্তিত হইতে পারে। কেননা সকল প্রকার ক্ষমতা ও ইখতিয়ার একমাত্র আল্লাহরই।
৩)আল্লাহ ব্যতীত আর কাহারও নিকট দোয়া বা প্রার্থনা করিবে না, কাহারও নিকট আশ্রয় খুঁজিবে না, কাহাকেও সাহায্যের জন্য ডাকিবে না এবং আল্লাহর ব্যবস্থাপনায় কাহাকেও এতখানি প্রভাবশালী বা শক্তিমান মনে করিবে না যে, তাহার সুপারিশে আল্লাহর ফায়সালা পরিবর্তিত হইতে পারে। কেননা তাঁহার রাজ্যে সকলেই ক্ষমতাহীন প্রজা মাত্র।
উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যঃ
১)ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবন ও ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সর্বপ্রকার আভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক হুমকি এবং বিশৃংখলা হইতে রক্ষা করিবার প্রচেষ্টা চালান।
২)দায়িত্বশীল নাগরিক এবং চরিত্রবান ও যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে শোষনহীন, ইনসাফভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করিয়া জনসাধারণের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন করা।
৩)ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্ব গড়িয়া তোলা এবং বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সংগে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা।
উপরের লেখা গুলো পড়ে যে কেউ ( ধরে নেই একজন নিরপেক্ষ মুসলিম ব্যাক্তি যে কিনা বাংলাদেশের ইতিহাস ও রাজনীতি সম্পর্কে সম্পুর্ন অজ্ঞ ) বলবে জামাতের মত দলই হয় না ।
ধর্মীয় ও নৈতিকতার যে বুলি জামাত দিচ্ছে তাতে করে একজন সাধারন মানুষ কে খুব সহজেই প্রভাবিত করা সম্ভব ।
আসুন এই দলটির পিছনে ফেলে আসা ইতিহাস এক নজর চোখ বুলিয়ে নেই।
২৫শে মার্চ ১৯৭১ সাল , অপারেশন সার্চলাইট নামে যখন পাকিস্থানী হানাদার বাহিনী নিরস্র মানুষের উপর ঝাপিয়ে পড়ে তার ঠিক তার ৬ দিন পর গোলাম আজম পাকিস্থান সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা বেতার কেন্দ্র থেকে ভাষন দেন এবং মুক্তিযুদ্ধ কে উল্লেখ্য করেন ভারতের ষড়যন্ত্র হিসাবে । এই দলটিই পাকিস্থান সেনা বাহিনী কে সাহাজ্য করার জন্য গঠন করে রাজাকার, আলবদর, আলশামস্ নামের বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনী । পাকিস্থানের শান্তি নষ্ট করার অপবাদে, দুস্কৃতকারী আখ্যা দিয়ে কত মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারন মানুষ কে হত্যা করেছে তা শুধু ইতিহাসের পাতায় বন্দী ।
দেশের সাথে বেইমানী করা এই দল টি পুর্নজন্ম পায় ১৯৭৬ সালে। ধর্ম কে পুঁজি করে শুরু হয় তাদের ক্ষমতা দখলের খেলা। তাই তো তাদের দলের ভুমিকায় লিখে
"১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কাজ শুরু করে। জন্মলগ্ন থেকে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠা ও কল্যাণ সাধণের লক্ষ্যে আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল (সা প্রদর্শিত ইসলামী জীবন বিধান অনুযায়ী আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীন সাফল্য অর্জনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবন ও জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দায়িত্বশীল নাগরিক এবং চরিত্রবান ও যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, আইনের শাসন, গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচার, ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার সুরক্ষা, সব মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, জান-মাল ও সম্মানের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সম্পদের সুষম বন্টন, জাতীয় আয় ও উৎপাদন বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবন মান উন্নত করে শোষণ, দুর্নীতি, সন্ত্রাসমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।"
এমন নির্লজ্জ মিথ্যাচার , ভন্ডামীতে নিরক্ষর , অজ্ঞ , বিবেকহীন মানুষ কেই প্রভাবিত করা সম্ভব , একজন সচেতন নাগরিক কে নয় । ইসলামের ইতিহাস বলে ধর্ম হচ্ছে ক্ষমতা দখলের একটা হাতিয়ার , আর সেই হাতিয়ার জামায়তে ইসলামী ব্যাবহার করছে বাংলাদেশের মানুষের উপর । যাদের প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে ক্ষমতা দখল ।