১.
সুদানের পাশেই অবস্থিত শাদ। জাতিসংঘের শরণার্থী পুনর্বাসন হাই কমিশনের শুভেচ্ছাদূত হিসাবে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি গিয়েছিলেন শাদের একটি শরণার্থী শিবিরে। লোকজনের সাথে কথা বলার সময় জিজ্ঞেস করলেন তারা কি চায়। জোলি আশা করেছিলেন হয়তো লোকজন তাদের নানা ধরনের বৈষয়িক সমস্যার কথা তুলে ধরবে। কিন্তু একটি কিশোর উঠে দাড়িয়ে গেল। দৃঢ় কন্ঠে বললো- আমরা বিচার চাই। কিশোরটি গণহত্যার বিচার দাবি করলো, কিশোরটি যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি করলো। কিশোরের আবেদনে মুগ্ধ হয়ে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি ‘দি ইকোনমিস্ট’ এ নিবন্ধ লিখলেন। শিরোনাম ‘A year for Accountability’। তিনি সেখানে সাবেক যুগোশ্লাভিয়া এবং রুয়ান্ডায় সংঘটিত গণহত্যার বিচারের প্রসঙ্গ তুলেছেন। কম্বোডিয়ায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গে আলোচনা করেছেন। ফিরে যাই সাহসী কিশোরটি প্রসঙ্গে। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থেকেও শাদের শরনার্থী শিবিরের সেই কিশোরটি দৃঢ়কন্ঠে শুরুতেই বিচারের দাবি করেছে।
পরমুহুর্তেই চিন্তা করি বাংলাদেশের কথা। স্বাধীনতার পর পেরিয়ে গেছে ৩৮ টি বছর। বিচারের দাবি বারবার উঠলেও বিচার হয়নি যুদ্ধাপরাধীদের, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে যুক্ত ব্যক্তিদের, শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধে যুক্ত ব্যক্তিদের, গণহত্যাকারীদের। গণহত্যাসহ অন্যান্য অপরাধে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের দাবি। তারপরেও কেউ কেউ দেশের ঐক্য বিভক্তির ধুয়া তুলে বিচারের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যায়। ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে বিচার প্রসঙ্গ ধামাচাপা দিতে চায়। কেউ কেউ অপরাধীদের বিষয়ে সন্দিহান। ১৯৭১ এ যখন মুক্তিযুদ্ধ হয় তখনও জাতি বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। একটা অংশ তখন মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ বিরোধিতা করেছিল। সুতরাং এখন জাতির ঐক্যবিভক্তির কথা বলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার কোন উপায় নেই।
২.
খারাপ লাগে যখন চিহিৃত যুদ্ধাপরাধী বলে ‘দেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই’। কেউ কেউ আবার বলে ১৯৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখন করা সম্ভব নয়। দেহাই দীর্ঘসময়ের!! একবার কি ভেবে দেখা উচিত না, কি তান্ডব ১৯৭১ এ চালিয়েছিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা? কি অবহেলায় তারা মানুষকে মেরে ফেলেছে! কি অবলীলায় জাতিধ্বংসের রক্তখেলায় মেতেছিল তারা!
১৯৭১ এর মার্চে অপারেশন সার্চলাইট এর মাধ্যমে শুরু হয়েছিল গণহত্যা। চলে নির্বিচারে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ, নির্যাতন, ধর্ষন , জাতিগত বিদ্বেষ! এসবের কি বিচার হওয়া জরুরী নয়?? জাতি হিসাবে কি আমাদের কর্তব্য নয় অপরাধের বিচার করা?
কেমন ছিল সেই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, উপলব্ধি করা যাক উদ্ধৃতিটি থেকে-
“এক সকালে পাকি হানাদারবাহিনীর সহযোগী দালালরা প্রায় ১৫শ’ পুরুষ লোককে বরইতলা (কিশোরগঞ্জ) গ্রামের রেল লাইনের ধারে জড়ো করে। ...... উপস্থিত লোকদের একজনের বাহু অন্যের বাহুর সঙ্গে বেঁধে লাইনে দাড় করিয়ে দেয়া হয়। তারপর হুকুম দেয়া হয় ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করার। কিন্তু এত লোককে এভাবে হত্যা করা সম্ভব হচ্ছিল না বলে তাদেরকে রেল লাইনের উপর বসিয়ে ত্রিশ কেশি ওজনের বিশেষ ধরনের শাবলের আঘাতে একে একে চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলা হয় তাঁদের প্রত্যেকের মাথা। এরপর মৃতদের উপর ব্রাশ ফায়ার করা হয়। এত কিছুর পরও যাঁদের দেহ একটু আধটু নড়াচাড়া করছিল তাঁদেরকে বেয়নেট চার্জ করা হয়।
এদিন বরইতলায় পাকি হানাদারদের বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের নির্মম শিকারে পরিণত হয় ৩৬৬ জন গ্রামবাসী, মারাত্বক আহত হয় আরও ১৩৪ জন।”
(যুদ্ধাপরাধ গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ, ডা. এম এ হাসান, পৃষ্ঠা ৭,৮)
এটা কি গণহত্যা ছাড়া অন্যকিছু? এর বিচার কি হওয়া জরুরী নয়? বিবেক কি বলে?
৩.
১৯৭১ সালে নারীর উপর চালানো হয়েছিল নারকীয় অত্যাচার। গর্ভবতী যুবতীদেরও রেহাই দেয়নি হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা।
খ্যাতনামা ম্যাগাজিন নিউজউইকের প্রতিবেদনের দিকে খেয়াল করি-
নিউজউইক ২৮ জুন ১৯৭১ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে ব্রাইটন জন হেস্টিংস লিখেছেন-
“I am certain that troops have raped girls repeatedly, then killed them by pushing their bayonets up between their legs. All this savagery suggests that the Pakistani army is either crazed by blood-lust or, more likely, is carrying out a calculated policy of terror amounting to genocide against the whole Bengali population.”
নারীর প্রতি এই নারকীয় অত্যাচারযজ্ঞের বিচার কি হবে না? বিচার হওয়া কি উচিত নয়?
“প্রতিদিন রাজারবাগ পুলিশলাইনের ব্যারাক থেকে এবং হেডকোয়ার্টার অফিসের ওপর তলা থেকে বহু ধর্ষিতা মেয়ের ক্ষত-বিক্ষত বিকৃত লাশ ওরা পায়ে রশি বেঁধে নিয়ে যায় এবং সেই জায়গায় রাজধানী থেকে ধরে আনা নতুন মেয়েদের চুলের সঙ্গে বেঁধে ধর্ষণ আরম্ভ করে দেয়।”
(বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ : কয়েকটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন, শামীমা বিনতে রহমান, পৃষ্ঠা- ২৬)
ধর্ষণ আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধকে গুরুতর অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয়। এই অপরাধের কি বিচার হবে না?
সুসান ব্রাউনমিলার তার ‘Against Our Will : Men, Women and Rape” বইয়ের ৮৩ পৃষ্টায় লিখেছেন-
“Rape in Bangladesh had hardly been restricted to beauty, girls of 8 and grand mother of 75 had been sexually assaulted. Pakistani Soldiers had not only violated Bangalee women on the spot, they abducted tens of hundred and held them by force in their military barracks for nightly use. Some women have been raped as many as 80 times in a night.”
নারীর প্রতি এই ঘৃণ্য অত্যাচার কি আমাদের বিবেককে নাড়া দেয় না? এই অপরাধের বিচার হওয়া কি উচিত না?
“ক্যাম্পে আটক নিরীহ নারীদের ওপর পাকি সেনাদের বর্বরতার বিবরণ পাওয়া যায় ঝিনাইদহের নাজিয়া খাতুনের জবানবন্দী থেকে। যুদ্ধের শুরুতে পাকিবাহিনীর আক্রমণ থেকে জীবন বাঁচাতে পরিবার নিয়ে পালিয়ে যাবার সময় ধরা পড়েন নাজিয়া খাতুন। শৈলকুপার রাণীনগরের কাছে পাকিদের এক ক্যাম্পে তিনি বন্দী হন। দুর্বিষহ এবং ভয়ংকর ছিল সেই বন্দী জীবন। আলোবাতাসহীন ছোট একটা কক্ষের মধ্যে আরও মেয়েদের সঙ্গে তাকে থাকতে হত। কিল, ঘুষি, লাথি এসব ছিল খুব সাধারণ ব্যাপার। এর পাশাপাশি চলত পাকিদের উন্মুক্ত পাশবিক নির্যাতন। এই দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে নাজিয়াসহ অনেকেই আত্নহত্যার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু গলায় দেবার মতো দড়ি তো দূরে থাক, কাপড়টুকু পর্যন্ত তিনি পাননি। পাকিরা তাঁদেরকে কাপড় পরতে দিত না। এভাবে নির্যাতনের এক পর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে উঠেন।
পাকিদের বীভৎস পাশবিক লালসা থেকে ন’বছরের শিশু সন্ধ্যাও রেহাই পায়নি। একাত্তরের জুন মাসে ঝালকাঠির কুড়িয়ানা আক্রমণ করে পাকিরা। সন্ধ্যা তার মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ছুটে পালাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁরা সবাই ধরা পড়ে আটক হন কুড়িয়ানা স্কুলে পাকিদের ক্যাম্পে। তাঁরা চারদিন ঐ ক্যাম্পে আটক ছিলেন। কিন্তু পাকিদের নির্মম নির্যাতন থেকে কেউই রক্ষা পাননি। ঐ জানোয়াররা শিশু সন্ধ্যার ওপর এমন বীভৎস নির্যাতন চালিয়েছিল যে, কষ্ট, যন্ত্রনা আর বিরামহীন রক্তপাতে সে নির্জীব ও ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছিল। এর ক’দিন পরে সে মারা যায়।”
(বাংলাদেশের অভ্যুদয়ঃযুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা, ডা. এম এ হাসান, পৃষ্টা ১২-১৩)
এই বিভৎস নির্যাতনের বিষয়টি কি বিবেককে নাড়া দেয় না। মানবতার বিরুদ্ধে, নারীর বিরুদ্ধে যে অপরাধ সংঘটিত হলো তার কি বিচার হওয়া জরুরী নয়?
৪.
১৯৭১ এ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসররা দেশের বিভিন্ন জায়গায় গণহত্যা চালায়, যুদ্ধের রীতিনীতি ভঙ্গ করে সাধারণ মানুষের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়, বন্দীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।
“১৩ জুন পাকিস্তানী আর্মি সৈয়দপুরের ১৫০ জন লোককে ক্যান্টনমেন্ট ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাঁদেরকে ভারতে পৌছে দেয়ার নাম করে স্থানীয় রেলওয়ে স্টেশনে নেয়া হয়। কৌশলে বন্দিদের পরিবারের বাকি সদস্যদেরকেও স্টেশনে আনা হয়। এই ফাঁকে চালানো হয় নির্বিচার লুটপাট।
ট্রেনের চারটি বগির পেছনের দুটোতে উঠানো হয় নারী ও শিশুদের এবং বাকি দুটোতে পুরুষদের। দু’কিলোমিটার যাবার পর রেলওয়ে ওয়ার্কশপের একটি কালভার্টে এসে ট্রেনটি থেমে যায়। তারপরই শুরু হয় বীভৎস হত্যাযজ্ঞ। একজন একজন করে নামানো হয় আর খোলা তলোয়ারের কোপে দু’খন্ড করে ফেলা হয় তাঁদের দেহ। জানালা ভেঙে যাঁরা পালাতে চেষ্টা করেছিলেন তাঁদেরকে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করা হয়। গোলাহাটে পাকিস্তানিদের এই হত্যাযজ্ঞ থেকে সেদিন তেইশজন পুরুষ পালাতে সক্ষম হলেও নারী ও শিশুদের কেউ পালাতে পারেনি। উপর্যুপরি ধর্ষণ শেষে নারীদেরকে হত্যা করা হয়। ঐদিন গোলাহাটে পাকিবাহিনী ৪১৩ জনকে হত্যা করে।”
(বাংলাদেশের অভ্যুদয়ঃযুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যা, ডা. এম এ হাসান, পৃষ্টা ১২)
নারকীয় এই কর্মকান্ড কি যুদ্ধাপরাধ ছাড়া অন্যকিছু? যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কি শাস্তি হবে না, হওয়া উচিত নয়?
“৭১-এর সকালে তেজগাঁওয়ে নিজেদের বারান্দায় দাঁড়িয়ে এক শিশু বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়। রাস্তায় টহলরত পাকিবাহিনী এই স্লোগান শুনে সাথে সাথে ছেলেটির বাসার মধ্যে ঢুকে যায় এবং পতাকার লাঠিটি তার মাথার তালুতে সজোরে সেঁধিয়ে দেয়। এরপর বাসায় অবস্থানরত ছেলেটির বাবা ও দাদাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে তাদের সামনেই মা ও দাদীকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। ধর্ষণ শেষে হতভাগ্য দাদা ও বাবাকে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে রেখে চলে যায়।”
(যুদ্ধাপরাধ গণহত্যা ও বিচারের অন্বেষণ, ডা. এম এ হাসান, পৃষ্ঠা ৯)
আন্তর্জাতিক আইনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী এটি নিঃসন্দেহে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। এই অপরাধের কি বিচার হওয়া উচিত নয়? বিবেক কি বলে?
৫.
১৯৭১ এর পর অনেক বছর পেরিয়ে গেছে। পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর সহযোগি শক্তি এই বাংলাদেশেই আবার পুনর্বাসিত হয়েছে। এই বাংলাদেশেই মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধাপরাধসহ অন্যান্য অপরাধের অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি না করতে পারলে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঠিক পরিস্ফুটন সম্ভব নয়।
যারা এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, অমানবিক নির্যাতন সমন্ধে জেনেও যুদ্ধাপরাধসহ অন্যান্য অপরাধের দায়ী ব্যক্তিদের বিচার চান না তাদের প্রতি ঘৃণা হয়। মানবতা বলে কিছু থাকলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাইতেই হবে। এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতেই হবে এ বাংলাদেশের মাটিতে।
১৯৭১ সালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধসহ অন্যান্য অপরাধে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করার দায়িত্ব বাংলাদেশের সরকারের। ‘The International Crimes (Tribunal) Act, 1973’ এর ধারা ৬ অনুযায়ী সরকারকেই গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে।
পরিশেষে, “Convention of the Prevention and Punishment of the Crime of Genocide” এর একটি অনুচ্ছেদ মনে করিয়ে দিতে চাই বাংলাদেশের সরকারকে।
Article 1
The Contracting Parties confirm that genocide, whether committed in time of peace or in time of war, is a crime under international law which they undertake to prevent and to punish.
চুক্তিকারী পক্ষসমূহ দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে যে , শান্তি অথবা যুদ্ধকালে যখনই সংঘটিত হউক না কেন, গণহত্যা আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে একটি অপরাধ এবং তার (জেনোসাইড কনভেনশনের) পক্ষসমূহ উহার নিরোধ ও শাস্তিবিধান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিনীতভাবে বাংলাদেশ সরকারকে আরো একটি বিষয় মনে করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশ এই জেনোসাইড কনভেনশনের একটি স্বাক্ষরকারী পক্ষ।