দেশ হল মা। সেই মায়ের ওপর একাত্তুরে আক্রমণ চালিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার ও দেশি রাজাকার-আলবদর-আলশামস শুয়োরেরা। একাত্তুরে যারা যুদ্ধ করেছে তাঁরা মাকে বাঁচাতে, মায়ের সম্ভ্রম রক্ষা করতেই যুদ্ধ করেছে। বিনিময়ে কোন কিছু পাওয়ার জন্য নয়। তারা এটাও জানতো মা ভাল থাকলে মায়ের সন্তানেরাও ভাল থাকবে। তাই তাঁরা মাকে ভাল রাখতেই সংগ্রাম করেছিল, যুদ্ধ করেছিল।
যারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছে নিঃসন্দেহে তারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাঁদের বিপদে-আপদে সাহায্য করা রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান কর্তব্য। কিন্তু তাঁরা দুঃখ-দুদর্শা ও অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করবেন, না খেয়ে, না পেয়ে আত্মহত্যা করবেন আর তাঁদের নাম ভাঙিয়ে অন্যরা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সুখে-শান্তিতে জীবনযাপন করবেন এটা কেমন কথা! প্রতিবছর বাড়ছে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা! এর কারণ কি? খোঁজ নিলে দেখা যায় প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ধুঁকে ধুঁকে মরছে অথচ তেলবাজরা সার্টিফিকেট বাগিয়ে সুবিধা নিচ্ছে!
কোটা সিস্টেম আছে অনেক আগে থেকেই। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ ৩০%! এর বাইরে আবার দুইবছর পরপর স্পেশাল বিসিএস (শুধুমাত্র কোটাধারীদের জন্য) তো আছেই। চিন্তা করা যায়? তারওপর নতুন নিয়ম করা হয়েছে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরাও এই সুবিধা পাবে! কি হাস্যকর! আরও ব্যাপার আছে। কোটা সিস্টেমটি নির্বাচিত হত লিখিত পরীক্ষার পর। কিন্তু এ বার কোন রকম পূর্ব ঘোষনা ছাড়াই প্রিলিতেই কোটা রেখে রেজাল্ট দেয়া হয়েছে! এটা কি রকম ধৃষ্টতা!
পরীক্ষার খাতা কত নাম্বার ধরে মূল্যায়ন হবে সে বিষয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। আপনার সর্বনিম্ন নাম্বার ৯০ ধরেন দুঃখ নাই। আমি ৮৮ পেয়েছি বলে চান্স পাই নাই তাতেও আমার কিছু বলার নাই। কারণ ৯০ যারা পেয়েছে তারা অবশ্যই আমার চেয়ে ভাল, মেধাবী। কিন্তু একই পরীক্ষায় আপনি কাউকে ৮০ পাওয়ার পরেও বাদ দিবেন আবার অন্যদেরকে ৫৫ পাওয়ার পরেও নেবেন সেটা কেমন কথা! আন্দোলনটা ফেল করা নিয়ে নয়, আন্দোলন টা এখানেই।
অবিলম্বে কোটা ব্যাবস্থা সংশোধণ করে, সকল ধরনের কোটা ৫-১০ ভাগের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে প্রকৃত মেধাবীদের বিভিন্ন চাকুরিতে নিয়োগ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় যুক্ত করুন। অন্যথায় যে জোয়ার শুরু হয়েছে তাতে আপনারা যে দলই হোন না কেন, টিকতে পারবেন না, মুহূর্তেই ভেসে যাবেন স্রোতের সাথে। সকলের শুভবুদ্ধির উদয় হোক!