‘তুমি যাবে ভাই,
যাবে মোর সাথে,
আমাদের ছোট গাঁয়।
গাছের ছায়ায়
লতায়-পাতায়
উদাসি বনের বায়’।
পল্লী কবি জসীমউদ্দিনের (জানুয়ারি ১, ১৯০৩ – মার্চ ১৩, ১৯৭৬) এই কবিতার পংক্তিগুলো মনে করিয়ে দেয় মাটি ও মানুষের সাথে কবির নিবিড় সম্পকের গভীরতা। আবহমান গ্রাম বাংলার কবি, পল্লী কবি খ্যাত জসীমউদ্দিনের আজ ১১৩তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুর শহরতলির তাম্বুলখানা গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
তার বাবার বাড়ি ছিলো একই জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। বাবার নাম আনসার উদ্দিন মোল্লা। তিনি পেশায় একজন স্কুল শিক্ষক ছিলেন। মা আমিনা খাতুন ওরফে রাঙাছুট। জসীম উদ্ দীন ফরিদপুর ওয়েলফেয়ার স্কুল, ও পরবর্তীতে ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে পড়ালেখা করেন। এখান থেকে তিনি তার প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১৯২১ সনে উত্তীর্ন হন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি. এ. এবং এম. এ. শেষ করেন যথাক্রমে ১৯২৯ এবং ১৯৩১ সনে। ১৯৩৩ সনে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. দীনেশ চন্দ্র সেনের অধীনে রামতনু লাহিড়ী গবেষণা সহকারী পদে যোগ দেন। এরপর ১৯৩৮ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।
১৯৬৯ সনে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মান সূচক ডি লিট উপাধিতে ভূষিত করেন। তিনি ১৩ মার্চ ১৯৭৬ সনে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাকে তাঁর নিজ গ্রাম গোবিন্দপুরে দাফন করা হয়।
কাব্যগ্রন্থঃ
রাখালী (১৯২৭)
নকশী কাঁথার মাঠ (১৯২৯)
বালু চর (১৯৩০)
ধানখেত (১৯৩৩)
সোজন বাদিয়ার ঘাট (১৯৩৪)
হাসু (১৯৩৮)
রঙিলা নায়ের মাঝি(১৯৩৫)
রুপবতি (১৯৪৬)
মাটির কান্না (১৯৫১)
এক পয়সার বাঁশী (১৯৫৬)
সকিনা (১৯৫৯)
সুচয়নী (১৯৬১)
ভয়াবহ সেই দিনগুলিতে (১৯৬২)
মা যে জননী কান্দে (১৯৬৩)
হলুদ বরণী (১৯৬৬)
জলে লেখন (১৯৬৯)
কাফনের মিছিল ((১৯৮৮)
নাটকঃ
পদ্মাপার (১৯৫০)
বেদের মেয়ে (১৯৫১)
মধুমালা (১৯৫১)
পল্লীবধূ (১৯৫৬)
গ্রামের মেয়ে (১৯৫৯)
ওগো পুস্পধনু (১৯৬৮)
আসমান সিংহ (১৯৮৬)
আত্মকথা
যাদের দেখেছি ((১৯৫১)
ঠাকুর বাড়ির আঙ্গিনায় (১৯৬১)
জীবন কথা ( ১৯৬৪)
স্মৃতিপট (১৯৬৪)
উপন্যাসঃ
বোবা কাহিনী (১৯৬৪)
ভ্রমণ কাহিনী
চলে মুসাফির (১৯৫২)
হলদে পরির দেশে ( ১৯৬৭)
যে দেশে মানুষ বড় (১৯৬৮)
জার্মানীর শহরে বন্দরে (১৯৭৫)
সঙ্গীতঃ
জারি গান (১৯৬৮)
মুর্শিদী গান (১৯৭৭)
অন্যান্যঃ
বাঙালির হাসির গল্প
ডালিমকুমার (১৯৮৬)
পুরস্কারঃ
প্রেসিডেন্টস এওয়ার্ড ফর প্রাইড অফ পারফরমেন্স ১৯৫৮
একুশে পদক ১৯৭৬
স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ১৯৭৮ (মরণোত্তর)
১৯৭৪ সনে তিনি বাংলা একাডেমী পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেন।
রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি. লিট ডিগ্রি (১৯৬৯)
জসীমউদ্দীনের লেখা কবর কবিতাটি বাংলা সাহিত্যে এক অবিস্মরণীয় অবদান।
নকশী কাঁথার মাঠ কবির শ্রেষ্ঠ রচনা যা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
দেখবেন নাকি সেই নকশী কাঁথার মাঠ?
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৪৮