সূত্র মতে, সম্প্রতি চীনের ইউনান প্রদেশের পশ্চিমের শহর রুইলিতে আইএসআই-এর দুই কর্মকর্তা ও পরেশ বড়-য়ার সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেছে জনবলের দিক দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই গোয়েন্দা সংস্থাটি।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র এবং উলফার একটি সূত্র আমাদের অর্থনীতিকে এ তথ্য দিয়েছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও এ ধরনের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বলে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে।
সূত্রটি জানায়, চীনের ইউনান প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের শহর রুইলিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এমএসএসের তিনজন, আইএসআই-এর দুই ও উলফা নেতা পরেশ বড়-য়া ছাড়াও তার এক বান্ধবী উপস্থিত ছিলেন। যিনি চীনের আরেকটি গোয়েন্দা সংস্থার অফিসার।
সম্প্রতি বাংলাদেশে চীনের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট অনেক ব্যবসায়িক কাজ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে এমএসএস-এর কর্মকর্তারা শেখ হাসিনা সরকার উৎখাতে অর্থায়নের আশ্বাস দেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের সরকার উৎখাতে জঙ্গি ও উগ্রবাদী সংগঠন, বিরোধী একাধিক রাজনৈতিক সংগঠন কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য উলফা নেতা পরেশ বড়-য়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইকে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়-য়াকে কাজে লাগানো হচ্ছে। পাকিস্তানি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এ কাজে পরেশ বড়ুয়াকে আর্থিক সহায়তা করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএসআইয়ের সঙ্গে পরেশ বড়-য়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে চীনা গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা রয়েছে। সম্প্রতি চিনের কুনমিংয়ে আইএসআইয়ের সঙ্গে এই উলফা নেতার গোপন বৈঠক হয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের উগ্রবাদী সংগঠনগুলোর সঙ্গে পরেশ বড়-য়ার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। আইএসআই তার মাধ্যমে এসব সংগঠনকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। তাছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সরকারবিরোধী একটি গ্রুপের সঙ্গেও পরেশ বড়-য়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে আইএসআই পার্বত্যাঞ্চলে নতুন করে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় দ-প্রাপ্ত আসামি পরেশ বড়-য়াকে ধরতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি রয়েছে। গত দেড় যুগ ধরে ভারত সরকারও এই উলফা নেতাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। কিন্তু তাকে ধরতে পারেনি। কয়েক মাস আগে উলফার আরেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা অনুপ চেটিয়াকে ভারতের হাতে তুলে দেয় বাংলাদেশ। তিনি দেড় যুগেরও বেশি সময় বাংলাদেশে কারাবন্দি ছিলেন।
সূত্র
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৬ রাত ১:৪৭