somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শীর্ষ জামায়াত নেতাদের সন্তানরা কেউ মাদ্রাসায় পড়ে না

১৫ ই মে, ২০১৬ ভোর ৬:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য যারা সারা দিন-রাত ওয়াজ নসিহত মায়া-কান্না করে সেই জামায়াত নেতাদের সন্তানরা কেউ মাদ্রাসায় পড়ে না। তারা পড়ে আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। কেউ কেউ আবার উচ্চশিক্ষা নিতে তাদের ভাষায় ইহুদি নাসারা দেশ ইউরোপ আমেরিকায় যায়। শীর্ষস্থানীয় যেসব জামায়াত নেতা তাদের ছেলেমেয়েদের ইসলামী শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিত করে জামায়াতের ধর্ম ব্যবসামুখী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়নি তাদের মধ্যে আছেন যুদ্ধাপরাধের রায়ে আজীবন কারাদ-প্রাপ্ত কারাগারে মারা যাওয়া গোলাম আযম, ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকর করা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, কাদের মোল্লা, মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। যুদ্ধাপরাধী এসব জামায়াত নেতার ছেলেমেয়েদের মাদ্রাসা শিক্ষার দ্বীনি জীবনযাপনের পরিবর্তে পাশ্চাত্য শিক্ষায় দীক্ষিত করে বিলাসী-আয়েশী জীবনের উপখ্যানের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে।

মতিউর রহমান নিজামী ॥
জামায়াত আমির নিজামীকে মঙ্গলবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যুদ্ধাপরাধের রায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়েছে। মতিউর রহমান নিজামী চার ছেলে ও দুই মেয়েসহ মোট ছয় সন্তানের জনক। ছোট ছেলে নাদিম তালহা এখনও ছাত্র হলেও বাকি পাঁচ সন্তানই প্রতিষ্ঠিত। সন্তানদের মধ্যে সবার বড় মেয়ে মোহসিনা ফাতেমা। তিনি পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তার স্বামী সাইফুল্লাহ মানসুর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে বিটিভির সংবাদ পাঠক ছিলেন। তবে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি আর সুবিধা করতে পারেননি। বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারী কলেজে শিক্ষকতা করছেন। বড় ছেলে ড. নাকিবুর রহমান পড়ালেখা করেছেন মালয়েশিয়ার আন্তজার্তিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ ভালই আছেন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনাতে। দ্বিতীয় ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। রাবেয়া ভূঁইয়া একাডেমিতে আইন বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করে লন্ডন গিয়ে বার-এ্যাট-ল’ ডিগ্রী অর্জন করেছেন তিনি। ছেলেদের মধ্যে কেবল নাজিব মোমেনই দেশে অবস্থান করছেন। তিনি বর্তমানে হাইকোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত। নিজামীর তৃতীয় ছেলে ডাঃ নাইমুর রহমান খালেদ। পড়াশোনা করেছেন পাকিস্তানের একটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। ছোট ছেলে নাদিম তালহা মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়ালেখা করছেন। নিজামীর এই ছেলেই কেবল এখনও ছাত্র। ছাত্র হলেও মানবতাবিরোধী আন্তজার্তিক ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম সম্পর্কে রয়েছে তার ব্যাপক বিরোধিতা। প্রায়ই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ট্রাইব্যুনালবিরোধী বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়ে ব্যস্ত সময় কাটান নিজামীর এই ছেলে।

ছোট মেয়ে খাদিজা পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে লন্ডনের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। ছোট মেয়ের স্বামী ব্যারিস্টার নজরুল ইসলাম। তিনি এক সময় শিবির সেক্রেটারি ছিলেন। নজরুল ইসলাম বর্তমানে লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত।

নিজামীর স্ত্রী সামসুন্নাহার নিজামীও পিছিয়ে নেই। তিনি গুলশানে একটি ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে জামায়াতের নারী শাখার আমিরের দায়িত্ব পালনকারী নেত্রীও নিজামীর স্ত্রী সামসুন্নাহার নিজামী।

গোলাম আযম ॥
সদ্যপ্রয়াত শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর অন্যতম গোলাম আযম। তার ছয় ছেলের একজনও মাদ্রাসায় পড়েননি। বড় সন্তান আব্দুল্লাহ হিল মামুন আল আযমী রাজধানীর খিলগাঁও গবর্নমেন্ট স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার থেকে অর্থনীতিতে এমএ করেছেন। দ্বিতীয় ছেলে আব্দুল্লাহ হিল আমিন আল আযমী খিলগাঁও গবর্নমেন্ট স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় বাংলাদেশ স্বাধীন হলে দেশত্যাগ করে লন্ডনে নিটিং ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন। তৃতীয় ছেলে আব্দুল্লাহ হিল মোমেন আল আযমী সিদ্ধেশ্বরী স্কুল থেকে এসএসসি ও রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজ থেকে এইচএসসি ও বিকম পাস করেছেন। চতুর্থ ছেলে আব্দুল্লাহ হিল আমান আল আযমী ১৯৭৫ সালে সিলেট সরকারী অগ্রগামী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় বিভাগে এসএসসি, ঢাকা সেন্ট্রাল কলেজ থেকে তৃতীয় বিভাগে এইচএসসি পাস করে ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। শুধু তাই নয়, সবার জন্য নির্ধারিত তারিখের এক মাস পর তিনি মিলিটারি একাডেমিতে যোগদান করেন। ২০০৯ সালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদে কর্মরত অবস্থায় অবসরে যান। পঞ্চম ছেলে আব্দুল্লাহ হিল নোমান আল আযমী ঢাকা গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন। ছোট ছেলে আব্দুল্লাহ হিল সালমান আল আযমী মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল থেকে এসএসসি ও ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী অনার্সে ভর্তি হয়েছিলেন কিন্তু শেষ করতে পারেননি। এরপর আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স করেন।

আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ ॥
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী মুজাহিদের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সবাই আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত। বড় ছেলে আলী আহমেদ আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে অনার্স সম্পন্ন করেন। এরপর অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ইউনিভার্সিটিতে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়েছেন। দ্বিতীয় ছেলে আহমেদ আহকিক রাজধানীর মগবাজার আইএস স্কুল কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি করেছেন ঢাকা কলেজ থেকে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে উচ্চশিক্ষা নেন। আরেক ছেলে আহমেদ মাবরুর আইএস স্কুল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি শেষ করেন। এরপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজীতে অনার্স করার পর আল মানারাত ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজীতে মাস্টার্স করেছেন। একমাত্র মেয়ে তামরিনা রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি পাস করেন। আল মানারাত ইউনিভার্সিটিতে ইংলিশে অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেছেন একমাত্র মেয়েটি।

কাদের মোল্লা ॥
শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর রায়ে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লা জামায়াতের সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল। তার চার মেয়ে ও দুই ছেলে পড়েছেন আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায়। কাদের মোল্লার মেয়ে আমাতুল্লাহ পারভীন ইস্পাহানী গার্লস স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। এরপর ইডেন কলেজ থেকে অর্নাস ও মাস্টার্স করেছেন। বড় ছেলে হাসান জামিল এসএসসি পাস করেছেন বাদশাহ ফয়সাল স্কুল থেকে। তেজগাঁও কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ করেছেন। আরেক ছেলে আমাতুল্লাহ সায়মিন এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছেন ইস্পাহানী স্কুল ও কলেজ থেকে। অনার্স করেছেন হোম ইকোনমিক্স কলেজ থেকে। একই কলেজে ফুড এ্যান্ড নিউট্রেশন বিষয়ে মাস্টার্সে অধ্যয়ন শেষ করেছেন। সেজো ছেলে হাসান মওদুদ রাইফেলস্ পাবলিক স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি পাস করে মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন। আরেক মেয়ে আফতুল্লাহ লারদীন ইস্পাহানী গার্লস স্কুল ও কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে বর্তমানে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করছেন। ছোট মেয়ে আমাতুল্লাহ নাজনীন ইস্পাহানী গার্লস স্কুল ও কলেজে অধ্যয়ন শেষে একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় পড়ছেন।

মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ॥
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। তার ৫ ছেলে, এক মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে হাসান ইকবাল ওয়ামী এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন ন্যাশনাল ব্যাংক স্কুল ও কলেজ থেকে। ইসলামী ইউনিভার্সিটি থেকে মিডিয়া এ্যান্ড ম্যাস কমিউনিকেশনে অনার্স করেছেন, মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। অপর ছেলে হাসান ইকরাম এসএসসি ও এইচএসসি ন্যাশনাল ব্যাংক স্কুল ও কলেজ থেকে, অনার্সে ভর্তির অপেক্ষায় ছিলেন। আরেক ছেলে হাসান জামান এসএসসি ও এইসএসসি ন্যাশনাল ব্যাংক স্কুল থেকে, অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ছেন মাল্টিমিডিয়া ইউনিভার্সিটিতে। আরেক ছেলে হাসান ইমাম এসএসসি ও এইচএসসি ন্যাশনাল ব্যাংক স্কুল অধ্যায়ন করে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ অধ্যয়ন করছেন। আরেক ছেলে আহম্মদ হাসান জামান ও লেভেল পরীক্ষা দেবেন একাডেমিয়া ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে। মেয়ে আতিয়া মিরপুর লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে পড়ছে।

মীর কাশেম আলী ॥
সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে ফাঁসির দন্ডে দন্ডিত জামায়াতের অর্থ যোগানদাতার শীর্ষনেতা ধনকুবের মীর কাশেম আলী। তার দুই ছেলে তিন মেয়ে। ছেলে মোহাম্মদ বিন কাশেম (সালমান) আল মানারাত ইংরেজী মিডিয়াম থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল করেছেন। এরপর পাকিস্তান ডেন্টাল কলেজে পড়েছেন। আরেক ছেলে মীর আহমেদ বিন কাশেম (আরমান) আল মানারাত থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল সম্পন্ন করেন। এরপর লন্ডনে বার এট ল’ সম্পন্ন করেছেন। মেয়ে হাসিনা তাইয়্যেবা অনার্স এবং মাস্টার্স করেছেন হোম ইকোনমিক্স কলেজ থেকে। অপর মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া আল মানারাতে স্কুল ও কলেজ থেকে এ লেভেল এবং ও লেভেল সম্পন্ন করার পর আল মানারাত ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ পড়ছেন। আরেক মেয়ে তাহেরা হাসনিন আল মানারাতে অধ্যয়নরত।

গোয়েন্দা প্রতিবেদন ॥
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইসলাম ধর্মকে বিক্রি করা জামায়াতের বড় ব্যবসা। ইসলামী শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে পারলেই ইহকাল ও পরকাল দুটোই নিশ্চিত। ইসলামী বিপ্লবের জন্য বাংলাদেশের মানুষকে ইসলামী শিক্ষা নিতে হবে। মাদ্রাসায় পড়তে হবে। দেশের কোমলমতি দরিদ্র ঘরের সন্তানরা জামায়াতের প্রচারণায়, অনেকে আবার বাধ্য হয়েই মাদ্রাসা শিক্ষায় পাঠায়। জামায়াতের ভাষায় নাস্তিক্যবাদী বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যালগুলোতে পড়ানো হয়। বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসা থেকে পাস করার পর দরিদ্র ঘরের সন্তানদের কোথাও ঠাঁই হয় না। সারাজীবন দারিদ্র্যের কশাঘাতে এই মওলানারা জীবন পার করেন অন্যের অনুগ্রহে। কোথাও মিলাদ পড়াতে বা কোরআন খতমে এসব মওলানাদের ডাক পড়ে। কেউ কেউ আবার ঝাড়ফুঁক করে কিছু আয় করেন। আর আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষিত তরুণদের কাছে এই মওলানারাই সমাজের অনগ্রসর। এ কারণে যে রাজনৈতিক দল ও মতাদর্শ দায়ী সে কারণের দিকে মধ্যবিত্ত শিক্ষিত তরুণের কমই নজর, হয়ে ওঠে জঙ্গীবাদী। অথচ জামায়াত বাংলাদেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে নাস্তিকদের শিক্ষা হিসেবে প্রচার করে থাকে। আধুনিক শিক্ষার বিপরীতে দলটি মাদ্রাসা শিক্ষার পক্ষে জোর দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু দলটির নেতাদের সন্তানেরা কেউ মাদ্রাসায় পড়েন না। জামায়াত মাদ্রাসা শিক্ষার কথা বলে দরিদ্র ঘরের সন্তানদের মাদ্রাসা শিক্ষার দিকে ঠেলে দেয়। এ সুযোগে দলটি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের নিজেদের দলে টানে। দরিদ্র ঘরের এসব মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের টেনে আনা হয় হরতাল, পিকেটিং, পুলিশের গুলির সামনে। জামায়াতের মূল নেতৃত্বের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সন্তানেরা পড়াশোনা করেন আধুনিক পশ্চিমা ধাঁচের- তাদের ভাষায় ‘নাস্তিক শিক্ষা’র আধুনিক পাশ্চাত্য ধাঁচের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।

গোলাম আযমের বইয়ে যা আছে,

শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধী কারাবন্দী অবস্থায় মারা যাওয়া জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের একটি বই শিবিরের রাজনীতির হাতেখড়ি হওয়ার সময় পড়ানো হয়। গোলাম আযমের প্রণীত ‘শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামী রূপরেখা’ পুস্তিকার ৭ নম্বর পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন, ‘ইংরেজ প্রবর্তিত আধুনিক শিক্ষাই যদি আদর্শ শিক্ষা বলে প্রচারিত হয়, তাহলে এ শিক্ষার ফল দেখে কোন ইসলামপন্থী লোকই সন্তুষ্টচিত্তে এ ধরনের শিক্ষাকে সমর্থন করতে পারে না।’ ওই গ্রন্থের ১২ নম্বর পৃষ্ঠায় গোলাম আযম উল্লেখ করেন, ‘পাশ্চাত্য মতাদর্শে বিশ্বাসীরা মানুষকে অন্যান্য পশুর ন্যায় গড়ে তুলবার উপযোগী শিক্ষাপদ্ধতির প্রচলন করেছেন। এ শিক্ষা দ্বারা মনুষ্যত্বের বিকাশ অসম্ভব।’ এই গ্রন্থের ২১ নম্বর পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন, ‘আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের গোটা পরিবেশ একেবারেই ইসলামবিরোধী।’ জামায়াতের শীর্ষনেতার এ বইটি শিবিরের প্রতিটি স্তরে পড়ানো হলেও বাস্তবে জামায়াতের নেতাদের সন্তানদের কেউ মাদ্রাসা শিক্ষা ও পেশা বেছে নেয়নি। এমনকি গোলাম আযম তার বইয়ে ইসলামের দর্শন নিয়ে পাশ্চাত্য শিক্ষাকে ব্যঙ্গ করলেও তার ছয় ছেলের একজনকেও মাদ্রাসায় পড়াননি।
সূত্র
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১৬ ভোর ৬:২২
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

তুমি তাদের কাছেই যাবে তারা তোমার মূল্য বুঝবে....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৪


মৃত্যুর পূর্বে একজন পিতা তার সন্তানকে কাছে ডেকে বললেন, 'এই নাও, এই ঘড়িটা আমি তোমাকে দিলাম। আমাকে দিয়েছিলো তোমার দাদা। ঘড়িটা দুইশত বছর আগের। তবে, ঘড়িটা নেওয়ার আগে তোমাকে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×