পেলাম আরও কিছু ভাল বন্ধু। সবাই বুঝে গেলো যে আমার বয়সে তাদের থেকে অনেক ছোট। আমাকে তারা অণুপ্রেরণা দিতে লাগলো। আমিও ব্লগিং চালিয়ে গেলাম। ব্লগিং ছিল নেশার মতো। আমার বন্ধুদের কাছে ব্লগিং-এর কথা বললে তারা বলতো ভুয়া কাজ। সময় নষ্ট। কিন্তু সেটা ছিল আমাকে শুনানো। তারাও ভিতরে ভিতরে ব্লগিং করার জন্য ব্যাকুল ছিল। কিন্তু সামহোয়ারের নতুন নিয়ম তাদেরকে বন্দি করে রাখে। আমার এক বন্ধু সেইদিন আমাকে বলল। "ব্লগিং আসলে মজার। কিন্তু সামহোয়ারে লেখা দিই। তারা ছাপেনা। তখন মেজাজ খারাপ করে লগইন করাই ছেড়ে দিয়েছি।" আমি বললাম, "এখন বোধহয় তোকে এক্সেস দিয়েছে।" ও বলল, "এক্সেস দিলেও কি? আমিতো পাসওয়ার্ড, ইউজারনেম সব ভুলে গেছি।" আমি বললাম, "ঠিক আছে। তোকে আরেকটা খুলে দেব।" ও বলল, "ঠিক আছে।"
এইবার আসি আমার ব্লগাভিজ্ঞতায়। অন্য প্রসঙ্গেই চলে গিয়েছিলাম।
ব্লগিং শুরু করলাম নিয়মিতভাবে। একসময় সামহোয়ারের নিয়মিত ব্লগার হয়ে গেলাম। একদিন ব্লগে না বসতে পারলে মন খারাপ হয়ে যেত। কিন্তু এই নিয়মিত হওয়া ছিল অস্থায়ী। আমার বড়ভাই যেইদিন কম্পিউটার খোলা রেখে যেত সেইদিন ব্লগিং করতে পারতাম। বন্ধ করে রেখে গেলে মনখারাপ করে বসে থাকতাম । যাইহোক, ব্লগিং আমাকে অনেক মজা দিল। শুরু করলাম ব্লগ ঘাটাঘাটি। বিভিন্ন ব্লগাররের আগের পোস্টগুলো পড়তে লাগলাম। আবিষ্কার করলাম আরও অনেক ভালো ব্লগারের। আইরিন সুলতানা, উদাসী স্বপ্ন, রাগইমনের মতো অনেক ভালো ভালো লেখক পেলাম। ব্লগে ঢুকে প্রায়সময়েই মনখারাপ হয়ে যেত। সবাই দেখি ঝগড়া করে । একদিন একজনের একটা মন্তব্য পড়লাম। সেটা ছিল এরকম, "আমি খাইতে পারুমনা তো তোরেও খাইতে দিমু না। শেষে কাকে খাইবো।" আমি বুঝলাম কথাটা পুরোপুরি সত্য।
এভাবে চলতে লাগলো ব্লগিং। একসময় আবিষ্কার করলাম যে ব্লগে আমার বয়সি কেউ নাই। সবাই সিনিয়র । তখন সাইফুর ভাই বলল, "সিনিয়র জুনিয়র কোন ব্যাপার না। আমার সকল ব্লগার বন্ধু।" তারপর মন ভাল হল। কিন্তু বয়স বলে কথা। শুরু করলাম আমার বয়সী ব্লগার খোজা। বের করলাম মুতাসিমকে (আমার থেকে এক বছরের ছোট) এবং আহমাদ মুজতবাকে (আমার চেয়ে ১/২ বছরের বড়)। এভাবে চলতে লাগলো আমার ব্লগিং। আমার এক ফুফাত ভাই একদিন আমাকে বলল, "তুমিতো হাইফাইভ ওপেনই করোনা।" আমি বললাম, "হাইফাইভের দরকার নাই। ব্লগই আমার হাইফাইভ।" সে শুনে থ। আসলেই ব্লগ আমার কাছে হাইফাইভের মতো কাজ করেছে। এখানে পেয়েছি অনেক বন্ধু। লিখতে শিখছি আস্তে আস্তে। সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা বিদ্যালয়ের পরীক্ষার মধ্যে একটা গুরুত্তপূর্ণ কাজ। এখান থেকে সেটার প্রাকটিসও হয়ে যাচ্ছে।
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১০:৫৫