কিছুদিন আগে গোলাম মাওলা রনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন যেখানে তিনি দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে সবার সামনে মহান ধর্মীয় নেতা বুঝিয়ে তাকে রক্ষার জন্য জিহাদের ডাক দিয়েছেন। আসুন দেখি তার স্ট্যাটাসের বিভিন্ন ধাপে সে কিভাবে দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ওরফে দেইল্ল্যা রাজাকারকে মহান ব্যাক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেনঃ-
প্রথম ধাপঃ
//সাঈদী সাহেবের ওয়াজের একেকটি ভিডিও ১৪/১৫ লাখ লোক পর্যন্ত দেখেছে। কোন বাঙ্গালী শিল্পী কিংবা বক্তা কিংবা ওয়াজেজীনের ভিডিও এতো মানুষ আজ অবধি দেখেনি।//
- রনি এর মাধ্যমে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন সাঈদী বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যাক্তি।
জবাবঃ সানী লিউনের ভিডিও লাখ লাখ মানুষ দেখে কিন্তু তাতে সে মহান ব্যাক্তি হয়ে যায় না।
দ্বিতীয় ধাপঃ
//তাসাউফের আলোচনায় কেউ কেউ জনাব সাইদীর পান্ডিত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন কিন্তু সামগ্রীকভাবে ইসলামের খেদমতে তার ধারের কাছে দাঁড়াতে পারেন এমন আলেম বাংলাদেশে একজনও নেই।//
- রনি এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মুসলিমদের ভিতর তাকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন।
জবাবঃ যার পান্ডিত্যই প্রশ্নাধীন তাকে কিভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামের খেদমতদার হিসেবে লেখক বুঝাতে চেয়েছেন তা বোধগম্য নহে। ইসলাম সুনির্দিষ্ট কিতাব আল কোরআনের উপর চলে তাই এখানে পান্ডিত্য অবশ্য দরকারি জিনিষ।
তৃতীয় ধাপঃ
তিনি যখন আর রহমান শব্দ নিয়ে তাফসীর শুরু করলেন তখন সাইদী সাহেবের গলার আওয়াজ ছাড়া আমি আর কিছু শুনতে কিংবা দেখতে পাচ্ছিলাম না।
- রনি এর মাধ্যমে বুঝাতে চেয়েছেন সাঈদী আধ্যাত্বিক শক্তির অধিকারী।
জবাবঃ এই ধরনের হালকা কথা শুধুমাত্র অন্ধ ভক্তদের কাছেই ভালো লাগবে আর বাকিদের কাছে মনে হবে হাস্যকর যেমন মানুষ হাসে চরমোনাই পীরের ওয়াজে মানুষকে লাফাতে দেখলে।
চতুর্থ ধাপঃ
//আমার মতো লক্ষকোটি মানুষ যারা- সাইদী সাহেবের ওয়াজের মাধ্যমে আত্মার খোরাক পেয়ে জীবন ধারা বদলাতে পেরেছে এবং বিশ্বজাহানের রবের নিকট আত্মসমর্পন করতে শিখেছে তারা হয়তো ধরে নিয়েছে বর্তমান পরিস্থিতিতে সাইদী সাহেবের হয়তো ইমতেহান অর্থাৎ আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা হচ্ছে।//
- রনি এর মাধ্যমে বুঝাতে চেয়েছেন সাঈদী নির্দোষ এবং এখনকার তার পরিস্থিতি শুধুমাত্র নবী রাসূলদের আল্লাহ্ যেমন কঠিন পরীক্ষা নেয় তেমন একটি পরীক্ষা মাত্র।
জবাবঃ জীবন বদল হয়েছে হয়তো শিবিরদের এবং তাদের রগ কাটার ধরন দেখেই বুঝা যায় সাঈদী আসলে কেমন জীবন পাল্টে দিয়েছে তাদের।
পঞ্চম ধাপঃ
//ইসলামের ১৪শ’ বছরের ইতিহাসে আমি এমন কোন মুফাস্সির কিংবা মুহাদ্দিসের নাম শুনিনি যার বক্তব্য শোনার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ একটি মাহফিলে হাজির হয়ে অসাধারণ নীরবতা নিয়ে কয়েক ঘন্টা ধরে কোরআন এবং হাদিসের মর্মবানী শুনেছে।//
- রনি এর মাধ্যমে বুঝাতে চেয়েছেন ইসলাম কায়েমের পর সাঈদীই হচ্ছে সবচেয়ে
বড় ধর্মীয় নেতা।
জবাবঃ এইটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক এবং ইসলামের জন্য কাজ করা সাহাবী এবং বড় বড় আল্লাহের ওলীদের অপমান করা ছাড়া কিছু না।
ষষ্ঠ ধাপঃ
//একবিংশ শতাব্দীর অস্থির সমাজে কোন একক ভাষা ভাষী জাতি গোষ্ঠীর এমন কোন ধর্মীয় নেতা নেই যার বক্তব্য জনাব সাইদী সাহেবের চেয়ে বেশী সংখ্যক মানুষ শোনে এবং অনুসরন করে।//
- রনি এর মাধ্যমে বুঝাতে চেয়েছেন সাঈদী বর্তমান সময়েরও সবচেয়ে বড় ধর্মীয় নেতা।
জবাবঃ একক ভাষাভাষীর জাতি গোষ্ঠীর ভিতর সাঈদীকে সাঈদীকে যত মানুষ ভালোবাসে তার চাইতেও বেশী মানুষ ঘৃণা করে।
সপ্তম ধাপঃ
আজ যারা জমিনের বুকে উদ্ধত আচরন এবং অহংকার করে বেড়ায় এবং জমিনে অবিচার এবং অনাচার করে বেড়ায় তাদের সম্পর্কে আল্লাহ পাকের সতর্ক বানী যিনি দরাজ গলায় বাংলার আনাচে কানাচে পৌছে দিয়েছেন সেই ব্যক্তিটি যদি মজলুম হয়ে পড়েন তবে তার মালিক তাকে কিভাবে সান্তনা দিবেন সে কথাও কোরআনে বলা আছে বহু যায়গায়-বহুবার। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের-আমরা জেনেও না জানার ভান করি কিংবা দেখেও না দেখার ভান করি। ফলে-সবশেষে-আল্লাহর পক্ষ থেকে যখন ফয়সালা এসে পড়ে তখন না পালাবার কোন পথ খুঁজে পাই- না ভাগবার কোন রাস্তার সন্ধান লাভ করতে পারি!
- রনি এই জায়গায় এসে তার আখ্যায়িত বড় ধর্মীয় নেতাকে রক্ষার জন্য প্রকারান্তে সসস্র জিহাদের ডাক দিয়েছেন।
জবাবঃ হা হা ম গে।
জনাব রনি যদি সাঈদীর মুক্তিযুদ্ধের অপকর্মের কথা বাদও দেই তারপরও সে কিন্তু কম অপকর্ম করে নাই।
• রনি আপনি অনেক কাল্পনিক কথা বললেও বলেন নাই যে সাইদীকে সৌদিতেও ওয়াজ করতে দেওয়া হয় না, কারন তার আকিদ্বা সঠিক নয়। সাইদী তার ওয়াজে ভুল হাদিস, জাল হাদিস, মওজু হাদিস বাতিল হাদিস এবং কিচ্ছা কাহিনী দ্বারা ওয়াজ করে বেড়ান। কোরান ও হাদিসে এসবের কোন ভিত্তি নাই।
• রনি আপনি অনেক কাল্পনিক কথা বললেও বলেন নাই যে কাতারের এক ওয়াজে মহানবী (সা.) এর বিশিষ্ট সাহাবি আ’মর ইবনুল আস (রা.) কে গালি দিয়ে ‘ধোঁকাবাজ’ ‘প্রতারক’ বলে আখ্যায়িত করে বসেন (নাউজুবিল্লাহ)সাঈদী।এবং কাতারের র্ধম মন্ত্রণালয় এবং ফানার তখনই কাতারে অবস্থানকালীন আর কোনো সমাবেশে কিংবা সভায় মাওলানা সাঈদীর বক্তৃতা দেওয়ার ওপর নিষেধোজ্ঞা জারি করে।
• রনি আপনি অনেক কাল্পনিক কথা বললেও বলেন নাই যে সাঈদী যেন ভবিষ্যতে আর কোনোদিন কাতারে ঢুকতে না পারে- সে মোতাবেক তার নামে স্থায়ীভাবে নিষেধোজ্ঞাও জারি করা হয়। এ সংক্রান্ত নির্দেশ দেশটির ইমিগ্রেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। জানা গেছে, এ নিষেধাজ্ঞা এখনও বলবৎ আছে।
সুত্রঃ Click This Link
• রনি আপনি অনেক কাল্পনিক কথা বললেও বলেন নাই যে সাঈদীর ওয়াজে ধর্মান্তরকরণ নাটকের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের অবমাননা করেন সাঈদী।
সূত্রঃ Click This Link
• রনি আপনি অনেক কাল্পনিক কথা বললেও বলেন নাই যে সাইদীর বিখ্যাত ফোন সেক্স তথা লইট্যা ফিসের কথা।
সূত্রঃ Click This Link
• রনি আপনি অনেক কাল্পনিক কথা বললেও বলেন নাই যে সাঈদী তার বয়স নিয়ে মিথ্যাচার করেছিলো।
সূত্রঃ Click This Link
• রনি আপনি অনেক কাল্পনিক কথা বললেও বলেন নাই যে সে বিশাল অংকের কালো টাকার মালিক।
সূত্রঃ Click This Link
• রনি আপনি অনেক কাল্পনিক কথা বললেও বলেন নাই যে বিগত জোট সরকারের সময় সে অবৈধ এমপি ছিলো।
সুত্রঃ Click This Link
• রনি আপনি অনেক কাল্পনিক কথা বললেও বলেন নাই যে ২০০৬ সালে সাঈদী ইংল্যান্ডের এক অনুষ্ঠানে জনসমক্ষে বলেছিল "ইংল্যান্ডে ও আমেরিকায় বোমা মারা একদম সঠিক । ইংল্যান্ড বোমা খাওয়া ডিজার্ভ করে" তখন ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ট্যাবলয়েড The Sun সাঈদী কে নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে ১৫-ই জুলাই ২০০৬ সালে । লেখাটির শিরোনাম ছিলো- Ban this beast and Kill Brits Hate Cleric let into UK, এখানে সাঈদীকে "জানোয়ার" হিসেবে অভিহিত করা হয় ।
• রনি আপনি অনেক কাল্পনিক কথা বললেও বলেন নাই যে ১৯৯৯ সালে সাঈদী লন্ডনে বসবাসরত সিলেটি অভিবাসী সাধারণ নাগরিকদের কাছে জুতাপেটার মুখোমুখি হয় । ১৯৯৯ সালের ১৫জুলাই সাঈদী ওল্ডহামের কুইন এলিজাবেথ হলের এক সভায় বলেন যে সিলেটি সম্মানিত অধিবাসীরা লন্ডনে যদি না আসত তবে বাংলাদেশে থাকলে তারা নাকি রিকশাচালক হতো কিংবা ড্রাইভার হতো । সেই সাথে সাঈদী আরো বলে যে, এইখানকার তরুনীরা ইউনিভার্সিটি যাবার নাম করে কি করছে তা তাদের অভিভাবকেরা নাকি খোঁজ নেন না । লন্ডনের বাঙালী মেয়েরা নাকি খুবই পাতলা কাপড় পড়ে যাতে তাদের শরীর দেখা যায় এবং এইসব কাপড় নাকি হিন্দু মেয়েরাও পরে না। সাঈদী আরও বলেন যে এই দেশের ৯০ ভাগ মেয়েদের নাকি বয়ফ্রেন্ড আছে বলে তার কাছে তথ্য আছে ।সভাতে এইসব কথা বলার সাথে সাথেই সাঈদীর ওয়াজ শুনতে আসা ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিরা সাঈদীর দিকে জুতা ছুঁড়ে মারতে থাকে এবং এক পর্যায়ে সাঈদীকে মারতে উদ্যত হয় । এসময় জামাত-শিবিরের কর্মীরা সেখান থেকে সাঈদীকে রক্ষা করে ।এই ঘটনার পর সাঈদীকে রাতের আঁধারে চুপিশারে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় । এই ঘটনাটি পরবর্তীতে সাংবাদিক মোহাম্মদ শাহজাহান লিখেন লন্ডনের সাপ্তাহিক সুরমায় ২৬ আগস্ট ১৯৯৯ সালে ।
গোলাম মাওলা রনি আমরা বুঝি যে এইসব আপনি করতেছেন কেনো।
রনি তবে থাকুন জামাত-শিবির হয়েই মানুষ হওয়া লাগবে না।