somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর সবচেয়ে সল্পকালীন প্রেমঃ ২য়- পর্ব

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আসলে ঠিক দিনক্ষন মনে নাই তবে ওকে আমি প্রথম দেখেছিলাম যখন আমি ক্লাস এইটে পড়ি । আগের বছর বিজ্ঞান বিভাগ না পাওয়াতে ইয়ার লস দিয়ে ক্লাস এইটে থেকে যায়। প্রথম দেখায় হয়তো প্রেমে পরে যাইনি তবে ওর মুগ্ধ দর্শক ছিলাম আমি। আমার চোখ শুধু ওকেই অনুসরন করতো। যখন ক্লাস চলতো তখন বেঞ্চে মাথা রেখে অপলক ওর দিকে তাকিয়ে থাকতাম। মাঝে মাঝে ও যখন বুঝে ফেলতো আমি ওর দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছি তখন মারাত্বক ক্ষেপতো। আমার সারাদিন যেতো শুধু ওকে দেখে দেখেই। কখনো কথা বলতাম না শুধু দেখতাম। বলা চলে ঠিক আমার চোখের ওকে অনুসরন করার যতটুকু ক্ষমতা ছিলো ঠিক ততটুকুই অনুসরন করতো। যখন ওর বাসার সামনে দিয়ে যেতাম তখন ততক্ষন বারান্দার দিকে তাকিয়ে থাকতাম যতক্ষন বারান্দাটা ইট পাথরের দালানের ভিতর হারিয়ে যায়। একবার কথা বলার সুযোগ এলো। ক্লাস এইটের ২য় সাময়িক পরীক্ষার শেষ দিনে। পরীক্ষা শেষে ও রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে চলছিলো আর আমি তখন আমার এক বন্ধুর সাথে মোটামুটি একটা দূরত্ব রেখে ওর পিছে পিছে হাটছিলাম। বন্ধু ঘুণাক্ষরেও জানতো না যে ২য় সাময়িক পরীক্ষা শেষে আমি না খেলে কেনো বাসার দিকে রওয়ানা দিছি। যাই হোক হটাত দেখে ও উলটো ঘুরে আমার দিকে আসছে। কাছাকাছি এসে ও যখন আমায় ডাক দিলো তখন আমি বাতাসে ভাসতেছি। ও আমাকে ডাক দিয়ে বললো, আজকে সকালে কি বলছো? আমিতো অবাক হয়ে গেলাম কারন আমিতো এম্নিতেই কখনো ইভটিজিং করি না সেখানে ওকে তো কিছু বলার প্রশ্নই আসে না। তাই আমি ওকে বললাম, কই নাতো!!! ও বললো তুমি না তোমার বন্ধু আমাদের রিক্সা যখন অতিক্রম করছিলো তোমাদের তখন কি বলছিলো। তখন আমার মনে পড়লো তাই আমি বললাম , ‘‘ ও প্রেমের তাজমহল???? এইটাতো ও সবসময়ই বলে । তোমাকে দেখে আলাদা ভাবে কিছু বলে নাই।’’ এই কথা শুনে ও একটু ফিক করে হাসলেও পরমুহূর্তে আবার মুখে গাম্ভীর্য এনে বললো, এমন যেনো আর কোন দিন না দেখি। আর আমার দিকে তুমি আর তাকাবা না। আরো কিসব হাবিজাবি বললো মনে নাই। কারন আমি তখন মুগ্ধ হয়ে ওর ঝারি খাচ্ছিলাম। ও ঝারি দিয়ে চলে গেলো কিন্তু আমি ব্যাপক খুশিতে নাচতে থাকলাম কারন অবশেষে তার সাথে আমার কথা বলা হল। পরীক্ষার পরের ছুটির দিনগুলোতে সেই সল্প সময়ের ঝারির কথাই শুধু ভাবতাম। আবার ক্লাস শুরু হলো আমি আবার আমার আগের রুটিন কাজ বেঞ্চে মাথা দিয়ে ওকে দেখা শুরু করলাম। আমি যে ওকে ভালোবেসে ফেলেছি তা ওকে তো দূরের কথা কাউকেই বললাম না। এভাবে দিন কাটতে কাটতে একসময় খেয়াল করলাম আমাদের ক্লাসের একটা ছেলের সাথে ওর সখ্যতা। এমনকি বন্ধুদেরকেও দেখলাম আমার ওই ক্লাস মেটের পক্ষ নিয়ে ওর সাথে ভাব জমানোর প্রচেষ্টা । তখন শুধু দেখতাম আর ছটফট করতাম। এমনি করেই আমাদের শেষ ক্লাস ঘনিয়ে এলো , নিজের মনকে প্রস্তুত করলাম শেষ ক্লাসের দিন ওর সাথে কথা বলার জন্য। তো লাস্ট ক্লাস পার্টিতে আমিতো সকাল সকাল আইসা বইসা ওর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম কিন্তু ও তো আসেই না। আমার তো মন বিশাল খারাপ হয়ে গেলো কিন্তু প্রথম ঘন্টার একেবারে শেষ মুহূর্তে ও উপস্থিত হলো। ওকে সেই মুহূর্তে দেইখা মনে এমন একটা প্রশান্তি আসছিলো যা এখনো আমার স্পষ্ট মনে আছে। তো ক্লাস পার্টিতে খুব মজা করা শুরু করলাম। জানি না কতক্ষন ওর দিকে খেয়াল করি নাই কিন্তু হটাত করেই আবিস্কার করলাম ও নাই। নাই নাই নাই। এবং সাথে সাথে দেখলাম আমার সেই ক্লাসমেটও নাই যার সাথে ওর সখ্যতা বেড়েই চলছিলো। আমি ক্লাস পার্টি থেকে বের হয়ে এলাম। স্কুলের আশেপাশে কোথাও পেলাম না। কিছুক্ষন পর দেখলাম ও আসছে। সাথে আমার সেই ক্লাস মেট। সেই মুহূর্তে আমার মাথা পুরো খাঁ খাঁ করতেছিলো। শুন্যতা কি জিনিষ সেইদিন প্রথম উপলব্ধি হইছিলো। আর সবার মতো সেই মুহূর্তে নিজের উপর রাগ লাগতেছিলো। আমার শরীর পুরো অবশ হয়ে গিয়েছিলো তাই আমি দূর থেকেই দেখলাম ওদের দুইজনের একসাথে করা পায়চারী। তারপর ক্লাসে প্রবেশ, কিছুক্ষন পর দুইজন দুইজনের থেকে বিদায় নিয়ে চলে যাওয়া। আমি দূর থেকে শুধু দেখলাম । ধীরে ধীরে সব ক্লাস খালি হয়ে গেলো আমি উঠলাম। পা গুলোকে অনেক ভারী মনে হচ্ছিলো তাও পা টেনে টেনে ক্লাস থেকে ব্যাগ নিয়ে বাসায় ফিরলাম।
তারপর বার্ষিক পরীক্ষা শেষে রেজাল্ট দিলো। ও এবার সায়েন্স পেলো আমিও পেলাম কিন্তু খবর নিয়ে জানতে পারলাম আমরা ভিন্ন ভিন্ন শাখায়। আমি ভাবলাম সবকিছুর পরিসমাপ্তি। কিন্তু বিধাতার একটু অন্যরকমই ইচ্ছা ছিলো তাই পরিসমাপ্তি ঘটলো না ।
বাকীটা পরের পর্বে।

পৃথিবীর সবচেয়ে সল্পকালীন প্রেমঃ ২য়- পর্ব
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখানে সেরা ইগো কার?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪






ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।

লিখেছেন চারাগাছ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮

‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:২৪


আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×