সাবেক এ বাড়ি প্রশেড়ব এ যাবৎ ২টি হরতাল হয়েছে।
আহত-নিহত, গাড়ি পোড়াপুড়ির ঘটনাও ঘটেছে। ঈদে ঘর
ফেরত মানুষের অবর্ণনীয় কষ্ট হয়েছে।
পরীক্ষার্থীদের অনেক কষ্ট হয়েছে। অপরদিকে বাড়িটির
সাথে খালেদার ৪০ বছরের ব্যক্তি স্মৃতি জড়িত রয়েছে।
জড়িত রয়েছে স্বামী জিয়াউর রহমানের সাথে থাকার স্মৃতি।
নিন্দুকেরা অবশ্য বলে, যে বাড়িতে স্বামী জিয়াউর রহমান
ছিলেন, স্বামী স্মৃতিকাতরতা থাকলে তো সে বাড়িতে একাকী
খালেদার থাকা সম্ভব ছিলো না।
প্রসঙ্গত খালেদা জিয়াকে প্রকাশ্যে দেশবাসী তিনবার
কাঁদতে দেখেছে।
এক. স্বামীর মৃত্যুর সময়।
দুই. তত্ত্বাবধায়ক আমলে ছেলের উপর নির্যাতনের
কারণে।
তিন. বাড়ি ছাড়ার সময়।
তবে স্বামীর চেয়ে বাড়ির প্রশেড়বই খালেদার কানড়বার আবহটা
ছিলো বেশি গভীর। অর্থাৎ বাড়িটি ম্যাডাম জিয়ার
অন্তরের অন্তঃস্থলে স্থান করে নিয়েছিলো। কিন্তু তা
সত্ত্বেও বাস্তবতা বলে কথা। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, বর্তমান
বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা তার নিজ ভাষায়, ‘এক কাপড়ে
বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন’। ম্যাডাম খালেদা এবং তার
ভক্ত ও অনুরক্তরা বাড়ি ত্যাগে বিচিত্র অনুভূতি, গভীর থেকে
গভীরতর ব্যথাতুর অনুভব তথা প্রতিশোধের সংকল্প
ইত্যাদিতে ঘুরপাক খেয়েছেন।
কিন্তু তারা সবাই আরো একটি অতি বাস্তবতাকে
চরমভাবে এড়িয়ে গেছেন।
এমনও কী হতে পারত না যে, খালেদা জিয়া যেদিন
সরকারি বাহিনীর তোড়ে বাড়ি ছাড়লেন ঠিক সেদিনই বা
তার আগের দিনই মালেকুল মউত হযরত আযরাইল
আলাইহিস সালাম উনার মুখোমুখি হলেন।
হযরত আযরাইল আলাইহিস সালাম তার জান কবয
করলেন। সেক্ষেত্রেও কিন্তু খালেদা জিয়া বাড়ি ছাড়া
হতেন।
বলাবাহুল্য, হাইকোর্ট যদি নির্দেশ না দিত, সুপ্রিম কোর্ট
যদি নির্দেশ না দিত তাহলেও কিন্তু হযরত আযরাইল
আলাইহিস সালাম উনার সাক্ষাতের কারণে খালেদাকে
ঠিকই বহুল আলোচিত ওই ক্যান্টমেন্টের বাড়ি ছাড়তে
হতো।
উল্লেখ্য, খালেদার এই বাড়ি ছাড়ার ঘটনা একটা
মাইলফলক। যারা এমপি-মন্ত্রী হয়ে অথবা কালো টাকার
মালিক হয়ে ২৫টা, ৫০টা বাড়ি বানান তারা কিন্তু থাকেন
কেবল একটা বাড়িতেই।
যেমনটি বিরোধী দলীয় নেত্রীর মিন্টু রোডের বাড়ি,
গুলশানের বাড়ি এবং ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি পাওয়া সত্ত্বেও
খালেদা জিয়া এক ক্যান্টনমেন্টের বাড়িতেই থাকতেন।
কিন্তু ভাগ্যলিপি তাকে ওই এক বাড়িতেই থাকতে দিলো
না এবং চূড়ান্তভাবে কোনো বাড়িতেই থাকতে দিবে না।
মৃত্যু তাকে নিয়ে যাবে সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে কবরের
বাড়িতে।
খালেদার এ বাড়ি ছাড়া হয়েছে যেন ওই রকম, মৃত্যুর
আগে মৃত্যুবরণ করা। অর্থাৎ বাড়ি ছাড়ার আগেই বাড়ি
ছাড়ার প্রস্তুতি নেয়া।
আর কুরআন শরীফ-এ আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ
করেন, ‘প্রত্যেককে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে।’
আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা কবরকে
একটা মাটির গর্ত মনে করো না। হয় এটা জানড়বাতের অংশ
অথবা জাহানড়বামের টুকরা।’
বলাবাহুল্য, যারা দেশবাসীর দায়িত্বে থাকে হক্কুল ইবাদ
যথাযথ আদায় না করার কারণে তাদের জন্য জানড়বাতে
যাওয়া খুব কঠিন।
সে চিন্তা করে যত কানড়বাকাটি করা যায়, তাতে কোনো
সমালোচনার দায় থাকে না এবং সে কানড়বা যত বেশি হবে
ততই মঙ্গল। দেশবাসীর জন্যও বড় নছীহত।