কোলাহল ফেলে দূর বহুদূর;
কোন এক পড়ন্ত বিকেলে
সঙ্গী ছিল, বুকের ভেতর নীলাকাশ এক
কিংবা একরাশ একাকীত্ব
উড়ে যেতে চেয়েছিলুম, চিলের মতো ডানা মেলে
সেই কোলাহল মুক্ত বিকেলের অলস সময়ে
তোমাদের একজন হতে না পারলেও
একদিন আমি দাঁড়িয়েছিলুম তোমাদের এই দূষিত আকাশের নিচে
ভেবেছিলুম তোমাদের মত করে, হেটেছিলুম তোমাদেরই সাথে
অথচ যা হওয়ার কথা তা হয়নি
নিঃশব্দে এক এক করে চলে গেলে সব
পিছন ফিরে তাকাবার প্রয়োজনও বোধ না করে
আর সে কিনা চিরকাল জোছনাই রয়ে গেল
যা থাকার থাকবে, যা যাওয়ার যাবে
আমি ছায়াহীন এই প্রান্তরে বসে চেয়ে রবোবন্দিনী রাজকুমারীর মতো; ঐ দূর আকাশে
জীবনের লেনদেন চুকিয়ে আজ আমি নিষ্প্রাণ
অথচ একদিন এই আমিই স্বপ্ন দেখেছিলুম;
পৃথিবীটা হাতের মুঠোই বন্দী করবার স্বপ্ন
সবাই দেখে,
বাস্তবতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা জীবনের রঙিন আভায় মুগ্ধ হয়ে
যা একদিন ভেঙ্গে পড়ে এমনি কোন বিষন্ন বিকেলে
আমি আজ তাই নিঃসঙ্গ দাঁড়কাক এক,
আবেগের শেষ ট্রেনের যাত্রী, বেঁচে থাকার অর্থের খোঁজে,
এই লালচে রোদের মেলায় ছিঁড়ছি আবেগের সব সুতো,
ইচ্ছেঘুড়ি উড়ে যাও, ছন্নছাড়া ঐ দাঁড়কাকটির মতো
পথ সাজিয়ে দেবার বোধটুকুও নেই আর; হারিয়েছে শূন্যতায়
বিদায় নাও বেঁচে থাকার যত ইচ্ছে,
স্বপ্নের কারখানায় বুনে যাওয়া যত স্বপ্ন
স্বপ্নের কারিগর আমি হতে পারিনি,
পারিনি খুঁজে পেতে জীবনের কোন অর্থ
উইপোকারা খেয়ে ফেলো তাকে ঘিরে লেখা যত স্মৃতির পাতা
আমি ব্যর্থ প্রেমিক এক, মুছে যাওয়া শব্দহীন আর্তনাদ
এই হারিয়ে যাওয়া গন্তব্যহীন পথে
তাই আমি আজ একাকী বসে নদীতীরে
এই ক্লান্ত বিকেলের শেষ আলোয়; নির্জন নিরালায়
স্মৃতির পাতা উল্টে, হাহাকারে পূর্ণ
চাতক পাখির তৃষ্ণার্ত দৃষ্টির মতো
তাকিয়ে ঐ দূর আকাশে
মুছে যাওয়া মেঘদলের মতো
বিলীন হয়ে, তার ভীষণ নীল বিষন্নতায়
তবু তৃষ্ণা জাগে অতৃপ্ত হৃদয়ে
তোমাদের এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর কোন এক পার্থিব মুহূর্তে