somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম এবং সৃষ্টিকর্তার ধারণা,কতটুকু সত্য??

০৭ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যদি প্রশ্ন করা হয়, সৃষ্টিকর্তা বলে কি কেউ আছেন? তাহলে আমি বলবো সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নেই, তবে সৃষ্টিঘটনাকারী শক্তি আছে। সৃষ্টিঘটনাকারী শক্তি আর সৃষ্টিকর্তা এক নন। কারণ সৃষ্টিকর্তা বলতে কোন একটি নির্দ্দিষ্ট সত্তাকে বোঝায় যা অনুভুতি সম্পন্ন কোন বস্তুসরূপ এবং যা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে একটি নির্দ্দিষ্ট স্থান হতে, ফলে এই সত্তা তার একত্ববাদকে প্রকাশ করে থাকে। একত্ববাদই হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের একটি প্রধান শর্ত। কিন্তু প্রতিটি সৃষ্টির প্রক্রিয়াগত আচরণ দেখে বলা যায় যে এইসব সৃষ্টি একই সত্তা দ্বারা সৃষ্টি বস্তু নয় অর্থাৎ সৃষ্টিঘটনাকারী শক্তির আচরণ বা চরিত্র এক ধরনের নয়। অতএব সৃষ্টিকর্তা এক এবং অদ্বিতীয় এই শর্তটি যদি ঠিক না হয় তাহলে সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব প্রমানের যে শর্ত তা পুর্ণতা লাভ করে না। কারণ প্রতিটি ধর্মেই বলা হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা এক এবং অদ্বিতীয়। যদি সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব প্রমানে এই শর্ত না মেলে তাহলে বলতে পারি সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নেই, তবে সৃষ্টিঘটনাকারী শক্তি আছে যা নিয়ন্ত্রিত হয় বস্তুর আভ্যন্তরিন প্রক্রিয়াগত আচরনের উপর। প্রতিটি সৃষ্টির আচরণ এক নয়, ভিন্ন ভিন্ন। অতএব প্রতিটি সৃষ্ট বস্তুর আচরণগত বৈশিষ্ট যদি এক না হয় তাহলে বলা যায় না প্রতিটি বস্তুর সৃষ্টিকর্তা একই। আর সৃষ্টিকর্তা যদি এক না হন, তাহলে সৃষ্টিকর্তার শর্ত ভুল বলে প্রমানিত হয়। অতএব সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ নেই।

এখন আসি প্রভূ বা পালকর্তার বিষয়ে। প্রভু বা পালনকর্তা কি আছেন? এই বিশ্বভ্রমাণ্ডে একক সত্তা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত কোন সৃষ্টিকর্তা নেই ফলে পালনকর্তা বলেও কিছুই নেই। তবে প্রতিটি বস্তুর অবস্থার পরিবর্তন বস্তুর আভ্যন্তরিন বৈশিষ্ট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হায়ে থকে। বস্তু তার ইচ্ছা অনিচ্ছায় তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারে না। তবে শুধুমাত্র মানুষ তার অবস্থার পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রন করতে পারে। আভ্যন্তরিন বৈশিষ্টের উপরই মানুষের পরিবর্তন সম্পূর্ণ নির্ভরশীল নয়। মানুষের ইচ্ছা অনিচ্ছাও এই পরিবর্তনের উপর প্রভাব বিস্তার করে। অতএব মানুষ ছাড়া অন্য কোন বস্তুর পালনকর্তার অস্তিত্ব তো নেই, মানুষেরও নেই। মানুষের পালনকর্তা মানুষ নিজেই। অবশ্য ধর্মগ্রন্থের প্রয়োজনীয়তা দেখে তাই মনে হয়। কারণ ধর্মগ্রন্থের বাণী যে শুধু মানুষের জন্যে পালনীয় তা দেখেই বুঝা যায়। এই বাণী মানুষ ছাড়া অন্য বস্তুর উপর কোন প্রভাব ফেলে না। অতএব এই গ্রন্থের দ্বারা যে পালনকর্তা বা সৃষ্টিকর্তার বর্ণনা পাওয়া যায় তাতে মানুষের জন্যেই তিনি, অন্য বস্তুর পালনকর্তা তিনি নন। অতএব সৃষ্টিকর্তা বলে কেউ কোথাও নেই এবং সৃষ্টিকর্তাধারী পালনকর্তা বা প্রভু বলেও কেউ নেই।

তাহলে কি বলতে পারি ধর্মগ্রন্থ সৃষ্টিকর্তার দ্বারা প্রেরণকৃত? অবশ্যই না, এটা মানুষের দ্বারাই রচিত। যেখানে প্রমান করা সম্ভব যে সৃষ্টিকর্তা বা পালনকর্তা বলে কেউ নেই, সেখানে সৃষ্টিকর্তা বা পলনকারীর বাণী বলে কিছু থাকতে পারে এর কোন অর্থ নেই। এটা মানুষের দ্বারা রচিত একটি গ্রন্থ মাত্র। যা দ্বারা মানুষের আভ্যন্তরিন বৈশিষ্টের আচরণগত পরিবর্তনকে নিয়ন্ত্রন করার কিছু কৌশল বর্ণনা করা হয়েছে। তবে এই কৌশল বর্ণনা সম্পূর্ণ নয়, আংশিক। এটা চলমানগত। তবে রচনা শৈলীতে এতই সূক্ষ কারচুপি করা হয়েছে যে মানুষকে সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে অত্যন্ত রহস্যের মধ্যে রাখা হয়েছে। তবে এ কথা সত্য যে এই গ্রন্থ রচনার উদ্দেশ্য মানুষের অকল্যাণে নয়, মানুষের কল্যানের জন্যে। তবে এটা এখন ব্যবহৃত হচ্ছে কিছু মানুষের জীবিকার উদ্দেশ্যে। যা বলা যেতে পারে, এটার অপব্যবহার করা হচ্ছে।

এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে পারবেন পরবর্তীতে। যেমন: সৃষ্টিকর্তা যদি সর্বশক্তিমান হতেন তাহলে তা জাহির করার জন্যে তার প্রেরিত ধর্মগ্রন্থের কি প্রয়োজন ছিল? তার প্রেরিত ধর্মগ্রন্থ কি তাকে শক্তিমান জাহিরের প্রতি দুর্বলতা প্রকাশ নয়? মানুষই যে মানুষের নিয়ন্ত্রক এটাকে ভুল ধারণা দেয়ার জন্যেই কি ধর্মগ্রন্থের আবির্ভাব নয়? ধর্মগ্রন্থ দিয়ে মানুষকে নিয়ন্ত্রন করার ব্যবস্থা নয়? তাহলে ধর্মগ্রন্থের আবির্ভাব হয়েছে কেন বা প্রয়োজনীয়তা কি ছিল? ইত্যাদি।

আমার ইচ্ছা এই বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা। যদি আপনাদের আগ্রহ থাকে এই বিষয় নিয়ে জানার তাহলে আপনারা জানাতে পারেন।
১৪টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×