somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আশরাফুল | ভালবাসি আশরাফুল ভাইয়া(অ্যাাশ,৯৮) |

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গ্রামের এক মধ্যবিত্ত ফ্যামিলিতে আশরাফুল’র জন্ম।বাবা স্কুল শিক্ষক।গ্রামে ‘মাস্টার ভাই’ নামে পরিচিত।আর মা গৃহিণী।ওয়াসিফা ও ওয়ানিয়া এ দু’বোনের এক ভাই আশরাফুল।মধ্যবিত্ত ফ্যামিলিতে জন্মালেও এমন কোন ইচ্ছা নেই যা আশরাফুল’র পূরণ হয়নি।দাদা’র সুমধুর কুরআন তিলাওয়াতের শব্দে ঘুম থেকে জাগা।ঘুমু ঘুমু চোখে দাদা’র সাথে মক্তবে যাওয়া, গোসল করা,ভাত খাওয়া।বাবার হাত ধরে স্কুলে যাওয়া।বিকেলে খেলাধুলা।ভোর সন্ধ্যে দাদা’র মুখে চাঁদের আলোয় গল্প শুনা।এবং পড়তে বসা।আর সারাদিন ফাঁকে-ফাঁকে বোনদের সাথে ঝগড়া-মুখে ভ্যাংচি কাটা,খুনশুটি আর দুষ্টুমি করা।সাথে রুটিনের এদিক-সেদিক হলে মায়ের মুখের বকুনি।সে কি দুরন্ত শৈশব আশরাফুল’র।

শৈশবের সাথে আশরাফুল’র প্রাইমারী পর্যায়ের পড়ালেখাও দুর্দান্ত কাটে।সাথে ছোট বেলা থেকে দাদা’র হাত ধরে শুক্রবার মসজিদে আসা-যাওয়ার কারণে নামাজের প্রতিও আশরাফুল’র অনুরাগ জন্মে।***তবে ছোটকালে একদিন শুক্রবারের এক ঘটনায় আশরাফুল’র হৃদয়ে দাগ কাটে***।সেদিন এলাকার মুরুব্বিরা দুষ্টুমির অভিযোগে শুধু শুধু হেনস্থা করছিল আশরাফুলকে।সেদিনের পর থেকে মসজিদকে নিয়ে একটা অজানা ভয় কাজ করত আশরাফুল’র মনে।

হাই স্কুলে উঠার পর আশরাফুল খেলাধুলায় জড়িয়ে পড়ে।তবে পড়ালেখা ঠিক ভাবে চালিয়ে নেওয়ায় তা কারো দৃষ্টিগোচর হয়নি।পড়ালেখা হোক কিংবা খেলাধুলা ।প্রথম স্থান কিন্তু আশরাফুল’র।যা হোক,অষ্টম শ্রেণী সফলতার সাথে শেষ করে নবম শ্রেণীতে উঠতেই আশরাফুল সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে নিজেকে জড়িয়ে নেয়।গেল বছরের বন্যা পরবর্তী সময়ে সামাজিক সংগঠন ‘সুন্দর আগামী’র পক্ষ থেকে আশরাফুল’র কার্যক্রম সবার নজর কাটে।দিনে দিনে অসহায়,দরিদ্র,অবহেলিত মানুষগুলোর বন্ধু হয়ে উঠে।সকলের আপদে-বিপদে পাশে থাকার চেষ্টা করে আশরাফুল।আশরাফুল’র ভাল সবার হাঁসির উপলক্ষ এবং আশরাফুল’র মন্দ সবার কান্নার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সময়ের সাথে সাথে ‘সুন্দর আগামী’র সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়ে আশরাফুল।সাথে পড়াশোনাও দারুণভাবে চালিয়ে নেয়।যে কারণে পরিবার তার সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে নিজেকে জড়ানোর ব্যাপারে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি।উল্টো তার বাবা আরও ভীষণ খুশি।কারণ ঐ মানুষগুলো তো আশরাফুলকে চিনে ‘মাস্টার ভাই’র ছেলে নামেই।

এইতো সেদিন ঐ মানুষগুলো ঈদ উতসব পালন করল।কারণ ‘মাস্টার ভাই’র ছেলে এ+ পেয়েছে।কিন্তু এই এ+ কিছুদিন পর তাদের জন্য বিষাদের কারণ হয়ে দাঁড়াল।কারণ আশরাফুলকে সরকারী কলেজে পড়ার জন্য শহরে পাড়ি জমাতে হবে।যা হোক,সেদিন সবাই আশরাফুল হাঁসি মুখে বিদায় জানাতে আসল।কিন্তু হয়ত জোর করে মুখে হাঁসির রেখা ফুটান যায় কিন্তু চোখের পানি তো আর ধরে রাখা যায় না।কারণ পানি নিজ থেকেই নিজের জায়গা তৈরী করে নেয়।নাহ!কেউ পারেনি।আশরাফুলও না।

সবকিছু ঠিকঠাক মত চলছে।আশরাফুল পড়ালেখা চালিয়ে নিচ্ছে।কারণ আশরাফুল বড় কিছু হবে এটা শুধু আশরাফুল’র স্বপ্ন নয়ই অনেকগুলো মানুষের স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।এটা আশরাফুলও উপলব্ধি করতে পেরেছে।এবং আশরাফুল কর্তব্যজ্ঞান সম্পন্নও বটে।

আশরাফুল মাঝে-মধ্য গ্রামে আসে।গ্রামের ঐ মানুষগুলোর টান,আবেগ আর তার প্রতি ভালবাসা দেখে আশরাফুল অভিভূত হয়।এবং সামাজিক কর্মকান্ডে সময় দিতে না পারায় নিজে নিজেকে ভৎর্সনা দেয়।

সামনে আশরাফুল’র এইসএসসি পরীক্ষা প্রাইভেট,কোচিং আর পড়ালেখা’র চাপের কারণে আশরাফুল এই প্রথমবারের মত নামাজ থেকে দূরে থাকে।সেই থেকে শুরু।

আবারও গ্রামে ঈদ উতসব।কারণ ঐ একই।‘মাস্টার ভাই’র ছেলে আবার এ+ পেয়েছে।সাথে যেন অনেকগুলো মানুষের স্বপ্নযাত্রার প্রায়ই শেষ হল।এবং আবার আগের মত করে স্বপ্নযাত্রার নাবিককে সবাই বিদায় দিল।

সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত।দেশের সবচেয়ে ভাল ইউনিভার্সিটিতে জায়গা হল আশরাফুল’র।অনেকগুলো মানুষের স্বপ্নধরা শেষ।এবার কিছুদিন পর সুফল ভোগের পালা।

কিন্তু নাহ!ওরিয়েন্টেশান ক্লাসের প্রথম দিনের মোগজ ধোলাইয়ে কুপোকাত আশরাফুল।নিজের ও সাথে অনেক মানুষের স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করে অন্ধকার জগতে পা বাড়াল আশরাফুল।

বিশেষ পয়েন্টঃ থ্রি-স্টার মার্ক দ্বারা চিহ্নিত।

আশরাফুল’র বখে যাওয়ার কারণঃ

ওরিয়েন্টেশান ক্লাসের মোগজ ধোলাইয়ে মসজিদে বড় কর্তৃক ছোটদের হেনস্থা হওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছিল।যা আশরাফুল’কে বিপথে নিয়ে যাওয়ার প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল।

শিক্ষাঃ

মসজিদে ছোটরা দুষ্টুমি করলে তাদের না শাসিয়ে আদর করে,সময় নিয়ে,সুন্দর করে বুঝিয়ে দিতে হবে।

না হলে গল্পের আশরাফুল’র মত অনেক আশরাফুল অঙ্কুরেই ঝরে পড়বে।

ধন্যবাদ সবাইকে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×