কিছু কিছু মানুষের হুইল বরশিতে মাছ মারার ভীষণ শখ। মাছকে আকর্ষিত করবার জন্য বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তারা মাছের চার বানায়। মাছ শিকারী মাছ শিকারের এক দুই ঘন্টা আগে পুকুরে চার ফেলে। বরশিতে টোপ লাগিয়ে চারের আশেপাশে টোপসহ বরশিটাকে নিক্ষেপ করে। তারপর হুইলে সুতাকে আস্তে আস্তে করে টেনে ফাতাটাকে খাড়া করে দাঁড় করায়। মাছ টোপ গিললে ফাতার নড়াচড়ায় মাছ শিকারী যেনো বুঝতে পারে। ফাতা স্থির, মাছ শিকারীর মাছ শিকারে লক্ষ্যও যেন স্থির।
এরপর অপেক্ষা বরশিতে গাঁথা টোপ কখন মাছে গেলে। তাই মাছ শিকারী তাকিয়ে থাকে এক দৃষ্টিতে ফাতার দিকে। কখন মাছে টোপ গিলে ফাতা ডোবায়। প্রথমে চলে প্রলুব্ধ মাছের ফাতা নড়াচড়া। নড়াচড়ায় বরশি থেকে টোপ খুলে নেবে, নাকি গিলেই মারবে দৌড়! প্রলুব্ধ মাছ কতোক্ষন পারে প্রলোভন ধরে রাখতে। টোপ গিলেই দেয় ছুট ফাতা ডুবিয়ে। একবার ডুবালেই মাছ শিকারী ছিপে দেয় সপাৎ করে টান। টোপে গাঁথা বরশি হয় গলায়, নয় তো কালসায় গেঁথে যায়। নিরুপায় হয়ে অসহায় মাছ দেয় ছুট। মাছ শিকারীও হুইলের গিট দেয় খুলে। আর মনে মনে বলে, 'যা কতো দূর যাবি যা, বরশি তো আমার হাতে!'
গলায় বা কালসায় বরশি গাঁথা মাছ, মুক্তি পাওয়ার জন্যে ছুটতে থাকে পুকুরের এ প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে। এদিকে মাছ শিকারী সুতাও ছাড়তে থাকে। ছুটতে ছুটতে যখন একটু ক্লান্ত, মাছ শিকারী ধীরে ধীরে হুইলে সুতা টানে। সুতার টানে মাছের গলা বা কালসায় ব্যথা পেলে আবার দেয় ছুট। মাছ শিকারী আবারও সুতা দেয় ছেড়ে। এভাবেই চলতে থাকে মাছ শিকারী ও মাছের মাঝে সম্মোহন খেলা। মাছ শিকারীর সম্মোহন কৌশলে সম্মোহিত হয়ে ক্লান্ত মাছ এক সময় দেয় গা ছেড়ে। তখন ধীরে ধীরে সুতা গুটিয়ে মাছ শিকারী মাছকে তুলে আনে জালে। ঠিক যেমন সম্মোহনকারী নিজের স্বার্থে কুক্ষিত করে সম্মোহিতকে। সম্মোহন প্রক্রিয়াও ঠিক যেন হুইল দিয়ে মাছ মারার মতোই।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৩:১৪