মা, আমার পরতে পরতে তুমি,
জন্মভূমি যেমন বুকের উপরে।
তুমি বলবে-পাগল কোথাকার
আমার চেয়ে তুই অনেক সুন্দর।
আর সাথে তোমার পাগল করা হাসি,
রাশি রাশি ভালোবাসা,
ভালোবাসায় ভালোবাসাময়।
যে হাসি ভরিয়ে দেয় বুকটা আমার,
আবার শীতার্ত করে বিচ্ছেদ বেদনায়।
এইতো সেদিন হাসপাতালের বেডে,
বসে আছ তুমি,
আমি গুনছি সময়
তোমার আসন্ন অপারেসনের।
তুমি বলছ-অপারেসনের পরে,
চলে যাস ঘরে।
থেকে আর করবি টা কী।
আমি মুখে সাহসের ছবি এঁকে,
হারানোর ভয় বুকে অ্যালবামে ঢেকে
বলছি তোমায়-মাইক্রো তো,
বুঝতে পারবে না কিছুই।
হাসছিলে তুমি কথার ফাঁকে
আমাকে বুঝতে না দেবার অভয়-হাসি।
তবু সব কিছু ছাপিয়ে,
হারাবার বেদনা মেলেছে ডানা
আমার বুকে।
আসন্ন ফাঁসির আসামী যেমন প্রতীক্ষায়।
মা, আমাকে কেন সাহসী কর নি অনেকের মতো ?
এইতো শশাঙ্ক, আমার স্কুল-কলিগ,
সাহসী কতটা দেখ ছেলেবেলা থেকে।
বাবার পুলিশের চাকুরি,
আজ এখানে তো, কাল সেখানে,
শশাঙ্কও তাই পরিণত সেই ছেলেবেলা থেকে।
বললো আমাকে ডেকে এইতো সেদিন,
“বুঝলে তো, বাবা বেশিদিন করবে না লাস্টিং,
শোনে নাতো কথা কোনোদিন”।
অবাক চোখে আমার তাকাবার পালা,
চোখে জ্বালা নিয়ে আমি তাকিয়েই থাকি।
এমনটা হ'তো যদি বেশ ভালো হ'তো,
কষ্ট কখনো এসে বাধতো দানা এই বুকে,
সুখে হিমালয় এসে জোগাতো সাহস এই বুকে,
আটকে দিয়ে সকল ব্যথা।
মা, সাহসী না করে আমায়
কেন মানুষ করেছ ?
হারানোর ব্যথা তাই,
হারিয়েই দিল সকল সময়,
কেবল আমাকে, মানুষ আমায়।
ছবি কৃতজ্ঞতা: গুগল