প্রথমেই বলে নেই,আমার এই লেখাটা বিশ্বকাপ কে নিয়ে নিতান্তই একটি ব্যাক্তিগত পর্যবেক্ষন। যাই হোক বিশ্বকাপ শুরু হবার আগে আমি একটা পোস্ট দেখিছিলাম যেখানে কার মতে কে বিশ্বকাপ জিততে পারে তার তালিকা জানতে চাওয়া হয়েছিলো। এবং সেই পোস্টের প্রতি উত্তরে বেশীরভাগই বাংলাদেশের নাম বলেছিলো। বিষয়টা দেখে খুব ভালো লেগেছিলো। আবার আরেকটা পোস্টে একজন জানতে চেয়েছিলো বাংলাদেশ ছাড়া কার ২য় সমর্থিত দেশ কোনটি ,তবে মজার ব্যাপার হলো এই পোস্টে কেউ কোন ২য় সমর্থন এর কথা বলে নাই। সবার কথা মোটামুটি একটাই ছিলো “বাংলাদেশ আছে তো বিশ্বকাপ আছে,বাংলাদেশ নেই তো বিশ্বকাপ নেই,এবং কারো কোন ২য় সমর্থন নেই”। এই বিষয়টা দেখেও খুব ভালো লেগেছিলো,এবং বস্তুত এটাই সত্যি যে নিজের দেশ বাদ পরে গেলে বিশ্বকাপের প্রতি আর আকর্ষন না থাকাটাই স্বাভাবিক।
কিন্তু কিছুদিন ধরে একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম যে বাংলাদেশ বাদ পরে যাবার পরও বিশ্বকাপের আকর্ষনে একটু ভাটাও পরেনি,বরং অনেক ক্ষেত্রে বেড়েছে। আজব ব্যাপার হচ্ছে এই যে কয়েকদিন ধরে ব্লগ ফেসবুকে সবাই একটা জিনিসই জানতে চাচ্ছে যে বিশ্বকাপ কে জিতবে অথবা কোন একটা সেমি ফাইনাল কে জিতবে এবং সেইসব পোস্টে সবাই ব্যাপক সারা দিচ্ছে । সবাই অত্যন্ত আনন্দের সাথে তার মতামত জানিয়ে দিচ্ছে এবং ক্ষেত্র বিশেষে অন্য আরেকটা দলকে গালাগালি দিতেও ভুল করছেনা। এবং আমি একটু খেয়াল করে দেখলাম সেইসব পোস্টে তাদের মন্তব্যই বেশী যারা বিশ্বকাপ শুরুর আগে বলছিলো “বাংলাদেশ ছাড়া আর কোন দলকেই সমর্থন করিনা” অথবা “বাংলাদেশ নেই তো বিশ্বকাপ নেই”।
আবার দেখা যায় কোন এক বা একাধিক বিশেষ দলকে সমর্থন করাকে কেন্দ্র করে অনেক কথা হয় ,অনেক বিদগ্ধ যুক্তিতর্ক হয়,আবার ক্ষেত্র বিশেষে কোন একটি বা একাধিক দলকে নিয়ে কথা বললে কেউ কেউ খুব বেশী আঘাতপ্রাপ্ত হয়,মাঝে এতই বেশী কস্ট পায় যার ফলে হিতাহিত জ্ঞ্যান শূন্য হয়ে চরম আক্রমনাত্নক হয়ে ওঠে। আচ্ছা ধরুন কেউ আপনার বাবাকে গালি দিলো ,আবার কেউ আপনার দুঃ সম্পর্কের চাচাকে গালি ,আপনি কোনটায় বেশী আঘাতপ্রাপ্ত হবেন?
কিন্তু আমাদের অনেক দেশপ্রেমিক জনতা চাচাকে গালি দিলে বেশী কস্ট পায়। তার মানে কি এই নয় যে আমাদের দেশপ্রেমিকরা বাবার থেকে চাচাকে বেশী ভালোবাসে।
যাই হোক আর কিছু বলার নাই ,শুধু একটাই প্রশ্ন আমাদের সমস্ত আবেগ কি লোক দেখানো ,নাকি চক্ষু লজ্জার জন্য আবেগ দেখাই?