মেয়ে, সাবধান খুব!
পৃথিবীতে এমনও লোকের বিচরন, যার উপরের ফিটফাট চেহারা আর বাড়িতে স্টীলের ভারি দরজার আড়ালে, সবার অলক্ষ্যে খাবারে মুখ দেয় ইদুর আর শুঁয়োপোকা! আপাতদৃষ্টির ভদ্র আবরণের আড়ালে তার শিরায় শিরায় পিনিকের বান ডাকে, মুখ দিয়ে ভক ভক করে উগরে আসে পাকস্থলী জ্বালিয়ে দেয়া তরল আগুন!
মেয়ে, খুব সাবধান!
সারি সারি শব্দের বুননে আপাত দৃষ্টির কেতাদুরস্থ ভাব ভঙ্গীর আড়ালে তার জীব্বায় লালার সাথে অন্য কোথাও টুপ করে ফোটা ঝরে! শ্বাপদ চতুষ্পদের থাবার সুচালো নখের মতন সুযোগ পেলেই তোমার শরীরে আঁচড়ে দেবে... তুমি জান?
না জানলে শোন তবে মেয়ে, আমি বলছি; যে ছেলেটা তোমার অজান্তেই হাজার হাজার কথার মাঝে দু’চোখে স্বপ্নের আবীর ছড়িয়েছিল, সে ছেলেটাই আজ সেই অতীত মনে করে মুচকি হাসির পরিবর্তে চোখে ঘৃণার দাবানল নিয়ে আক্ষেপ করে...
“ ইশশ, আরেকটু এসিড পাওয়া যেত যদি, সেদিন!” শুধু তোমার গলা ঝলসে তার ক্ষোভ মেটেনি, মেটে নাকি এইসব ক্ষোভ?
বিয়ের নামে যে তোমাকে আজ পিড়াপীড়ি করছে নিরন্তর; বলছে- “হাতের কাছে যা’পাও, নিয়ে চলে আস; ওটুকুতেই শুরু করে দেই!” জেনে রেখ তুমি, হাতের ওটুকু শেষ হলেই কিন্ত তোমার প্রয়োজন ফুরাবে! তোমার গলা জড়িয়ে ধরত যে সবল বাহু, সেই বাহুতেই টুটি চেপে ধরবে; ঠোটে-চোখের নিচে নরম চুমু’র বদলে উপহার পাবে কালশিটে! থেতলানো ঠোট আর আধবোজা চোখ নিয়ে ভাবতে বসলেও তখন যে অনেক বেলা- অনেক দেরী!
তারচেয়ে আয় আমার সাথে; মাস্তান আমি, ছোটলোক আমি- খিস্তি খেউরের প্রেমে মশগুল হই। সারাদিন ভ্যান-রিকশা চালানো, আদা-পান বেচা অতীব সাধারন থেকে শুরু করে সাধারনের পকেট ফাঁকা করা ত্যালত্যালে উর্ধতন কর্মকর্তা পর্যন্ত, এই নিরীহ চাকু দেখিয়েই দু’পয়সা উপার্জনক্ষম আমার সাথেই নাহয় অসম প্রেমে রাজী হলি! নাহয় একটু নুন আর পান্তার জন্যে গালাগালি করলি-আমার চোদ্দপুরুষের নাম উদ্ধার করলি! মোটা চাল, পোকায় ভরা রুটি খেয়ে আমি নাহয় মোষের মতই ভুসভুসে ঘুমাব এই আশায় যে- কোনদিন তুই আমায় ঠিক টেনে তুলবি- সমাবস্থার আশায়! তার আগে নাহয় আমাদের অসম প্রেমই মতের অমিলে, ছিন্নমুকুলের মত ঝরে ঝরে পরুক। হয়ত আগামী বসন্তের আগে সকল দন্দের অবসানে গুটি বাধবে না এই অসম প্রেম! তাও প্রতি দুপুরে তোর চাপা কান্না আর দীর্ঘশ্বাস, সুবিশাল ওই ফ্ল্যাটের ঘুলঘুলি পথে একদম হারিয়ে যাওয়ার আগে, অন্তত আমার কান ছুয়ে যাবে!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:১৫