somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৈরী বসন্তে

০১ লা মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

- আই লাভ ইউ ইমু।
- দূর হ পোড়া মুখো। সবাই আমাকে ছেড়ে গেছে। তুই যাস না কেন! খাঁচা খুলে দিয়েছি তাও কেন যাসনে। দূর হয়ে যা। আমাকে আর জ্বালাতন করিসনে।
কথা শেষ করে হাতের কাছের দলাবদ্ধ কাগজটা ছুড়ে মারলো। পোষা পাখিটা উড়ে গিয়ে অদূরে বসে বললো, আই লাভ ইউ ইমু।

অনেক কষ্টের মধ্যেও হেসে ফেললো ইমু। পাখিটাকে তারা দুজন একসাথে গিয়ে কিনে আনে কাঁটাবন থেকে। দুজনের নামের আদ্যক্ষর মিলিয়ে নাম রেখেছিলো ইশু। ইমরানের ডাক নাম ইমু আর ফয়সালের ডাক নাম শুদ্ধ। ইমু মজা করে ডাকতো বিশুদ্ধ। যদিও শুদ্ধর সাথে পরিচিত হওয়ার আগে ইমুর জীবনে অনেক কিছু ঘটে গেছে। অনেক ঘটন অঘটনের পরে শুদ্ধ এসেছিলো ইমুর জীবনে। বসন্ত হাওয়ার মতো। শরীর জুড়ানো অনুভূতি নিয়ে। পলাশ শিমুলের আবেশ ছড়িয়ে।

সমকামী জগতে ইমু কিভাবে ঢুকে যায় তার ঠিক মনে নেই। অন্য আট দশজনের মতই সেক্সকেন্দ্রিক ছিলো তার চিন্তা ভাবনা। এলাকার কোন ভাইয়ের হাত ধরেই এমনি কোন উষ্ণরাতে সে পেয়েছিলো প্রথাগত ধারণার বাইরে যৌন অভিজ্ঞতা। একসময় সে এটাকে স্বাভাবিক ভাবেই গ্রহন করে নেয়। আরো অনেক সমকামীর সাথে পরিচিত হয়। কিস, সাক অস্বাভাবিক বলে মনে হতো না কিছুই। কিন্তু একদিন বিপত্তি ঘটে গেলো। কোথায় কে রেকর্ড করেছিলো ইমু বলতে পারবে না। এক ছেলের সাথে ইমুর চুমুর ভিডিও এলাকার সব মোবাইলে ছড়িয়ে গেলো। ছেলেটার মুখ বোঝা না গেলেও স্পষ্ট ইমুর মুখ বোঝা যাচ্ছিলো। বাইরে বেরোনো যায় না। সবাই মুখ টিপে হাসে। ফাজিল ছোকড়ারা বলে আসো চুমু খেয়ে যাও। ইমুর বাবাকে পথে ঘাটে কথা শুনতে হয়। ছেলে কি বাপের কাছে চুমু খাওয়া শিখেছে? বাবা অনেক রাগী। রেগে গেলে হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। বাড়ি এসে সোজা ইমুর গালে ঠাস করে সজোরে এক থাপ্পড় মেরে বললেন, শালা হিজড়ার বাচ্চা হিজড়া। আমার ঘরে হিজড়া জন্মেছে। যা বাজারে গিয়ে শাড়ি চুড়ি পরে ব্যাটা ছাওয়ালগে সাথে ছেনালগিরি করগে। আমার বাড়িতে তোর আর জায়গা হবে না। দূর হয়ে যা। এ আমার ছেলে কিছুতেই হতে পারে না। হিজড়ার বাচ্চা হিজড়া। তুমি কই থেকে এই জিনিস বাধায়া আনছো।

অদূরে মা দাঁড়িয়ে কাঁদছিলো। ইমুর ব্যাগ গোছানোর মানসিকতা ছিলো না। এমনিতে আজ তিনদিন ঘরের মধ্যে বন্দি করে রেখেছিলো। তার উপর জোর থাপ্পড়ে মেজাজ খুব খারাপ করে দিয়েছে। হাতের কাছে যা ছিলো তাই টেনে নিয়ে বেরিয়ে এলো ঘর থেকে। মা অনেক কান্নাকাটি করলেন। ‘যাস নে বাবা যাসনে’।

বাবা হুংকার ছাড়লেন। ‘যেতে দাও ওকে। ওরকম কুলাংগার ছেলের দরকার নেই আমার।যাদের ছেলে থাকে না তারা কি বাঁচে না। আজ থেকে আমার শুধু এক মেয়ে’।

কোথায় যাবে ইমু! ভেবে কিছুই পেলো না। বিকেলের বাস ধরে খুলনা চলে এলো। শফিক ভাইয়ের সাথে দেখা হলো। এলাকার ভাই। ইমুর সাথে বেশ কয়েকবার হয়েছে। শফিক ভাই এলাকার ঘটনা জানতেন সব। ইমুকে জিজ্ঞেস করলো,
- তো এখন কি করবি ঠিক করলি?
- জানিনা। উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।
- আমার সাথে ঢাকা চল। আমার মেসে থাকিস। একটা কাজ টাজের ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
- ইন্টারমিডিয়েট পাশ সার্টিফিকেটে কি কাজ হবে?
- কিছুনা কিছু হবে। যাবি কিনা বল।

শফিকের সাথে ইমু ঢাকা চলে এলো। দেখতে শুনতে মন্দ ছিলো না ইমু। বিভিন্ন জনের সাথে পরিচিত হওয়ার সুবাদে স্মার্ট ব্যবহার শিখে ফেলেছে। বসুন্ধরা সিটিটে মোবাইল শোরুমের আউটলেটে একটা চাকরি জুটে গেলো। মাস শেষে দশহাজার টাকা। চলার মতই। শফিক ভাইয়ের সাথে বেড শেয়ার করা যাচ্ছে। কিন্তু সারাদিন পরিশ্রমের পরে শফিক ভাইয়ের চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। মাস না পেরোতেই শফিক ভাইয়ের বন্ধুরা আসতে শুরু করলো। শফিক সরাসরি ইমুকে গে বলেই পরিচয় করিয়ে দিতো। সিংগেলের বদলে গ্রুপ সেক্সের মাত্রা বাড়তে লাগলো। ইমু অসহ্য হয়ে গেলো। থাকার মত জায়গার ব্যবস্থা না করতে পারলে তার মুক্তি নেই ইমু বুঝে গেছে। এরা সব শফিকের বন্ধু নাকি শফিক ভাই ইমুকে ব্যবহার করে টু পাইস কামাচ্ছে। পর্নোম্যুভিতে যেরকম দেখা যায়, সেলিং মাই জিএফ টাইপ।

বসুন্ধরা সিটির সাপ্তাহিক ছুটি মংগলবার। প্রতি মংগলবার ইমু ওভারব্রিজের গায়ে গায়ে সাইনবোর্ড সিট খালি আছে টাইপ বিজ্ঞপ্তি দেখে বেড়ায়। আর যাই হোক নতুন কোন পরিবেশে গিয়ে নিশ্চয় তাকে এই যৌন নিপীড়ণের শিকার হতে হবে না। বেশ কয়েকটা বাসা দেখা হয়ে গেছে। অত্যাধিক ভাড়া। আজ একটা বাসায় যাচ্ছে। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ইমু ঢোক গিললো। এত সুন্দর বাসা। ভাড়া না জানি কেমন চায়। ভাবছিলো ফিরে যায়। এতটা পথ হেঁটে এসেছে। ঘেমে গেছে। রিকশাভাড়া বাঁচিয়ে কিছু সঞ্চয় করার চেষ্টা করছে। তার গতি নিজেকেই করতে হবে। একটা কিছু হয়ে গেলে কে দেখবে তাকে। ফুটপাতে পড়ে মরতে হবে। বিশাল এই পৃথিবীতে গনমানুষের ভিড়ে বড্ড একা সে।

পকেট থেকে মোবাইল বের করে ফোন দিলো, হ্যালো আমি ইমু। ইমরান। আপনার সাথে আমার কথা হয়েছিলো। বাসা দেখার ব্যাপারে। আজ আসার কথা ছিলো।
ফোনের ওপাশ থেকে গলা ভেসে এলো, ওহ আপনি এসে গেছেন। আচ্ছা আমি এখনি আসছি।

গেট ঠেলে সুদর্শন এক যুবক বেরিয়ে এলো। হাফ প্যান্ট আর ম্যাগি গেঞ্জি পরা। একটা সময় ছিলো যখন ইমু এরকম ছেলে দেখলে ফিরে তাকাতো। এখন আর সে ফিলিংস নেই। সময় বড্ড দ্রুত তাকে চেঞ্জ করে দিচ্ছে। সুদর্শন হাত বাড়ালো, হ্যালো আমি শুদ্ধ। আসেন ভেতরে আসেন।

বাড়িটাতে বেশ কিছু ভাড়াটে থাকে। দোতলার ছোট্ট একটা ফ্লাটে এসে ইমু থামলো। একটা বেডরুম, ডাইনিং স্পেস, ছোট্ট কিচেন। শুদ্ধ বললো, আমি মূলত একলা থাকতে ভালোবাসিনে। তাই রূমমেট খুঁজি। আমার সাবেক রূমমেট হঠাৎ রুম ছেড়ে দিয়ে গেলো। সব তো দেখলেন। পছন্দ হলো?

ইমু ঘাড় নাড়ে। হ্যাঁ। ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করে, ভাড়া কত?
- পাঁচ হাজার। সাথে গ্যাস বিদ্যুতের বিল, খাওয়ার খরচ আলাদা।
- ওহ।
- কোন সমস্যা?
- আমার জন্য একটু বেশী হয়ে যায়।
- কি আর করা বলেন। বাড়িওয়ালা তো বোঝে না।
এই রূম নিলে শুভ্র দশহাজার টাকার সবই খরচ হয়ে যাবে। যাক। তবুও তো শফিকের হাত থেকে বাঁচা যাবে। পরের মাসের এক তারিখ থেকে ওঠার কথা। শুদ্ধ বললো চাইলে সে কালকেই উঠতে পারে। ভাড়া পরের মাস থেকে দিলেই হবে। আজ মাসের বারো তারিখ। ইমু উঠে এলো শুদ্ধের ফ্লাটে। শুদ্ধ ছেলেটা অসম্ভব রকম ভালো এবং ফ্রেন্ডলি। ইমু যে বড্ড একা এটা শুদ্ধ বুঝে ফেললো কয়েকদিনে। খুব মন মরা হয়ে থাকে। দুজনের বন্ধের দিন দুই দিন। শুদ্ধ ব্যাংকে জব করে। অনেক পরিশ্রান্ত হয়ে ফেরে তবুও চেষ্টা করে ইমুকে হাসি খুশী রাখতে। একেকদিন রাত নটা দশটার দিকে ইমুকে বাইকের পিছে বসিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসে। টিএসসির মোড়ে, সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে দাঁড়িয়ে ফুচকা খায়। মজা করে ভাসমান পতিতাদের সাথে দামাদামি করে। অনেক সময় অনেক কম দাম বলা সত্ত্বেও কেউ কেউ রাজি হয়ে যায়। তখন তারা বিপাকে পড়ে যায়। শুদ্ধ বলে বুঝে বলো। আমরা কিন্তু দুজন। পরে আবার টাকা নিয়ে হাঙ্গামা করবানাতো।
- ভাইরে দুজন না চারজন দেখার সময় নেই। করে টাকা দাও। সারাদিন কিছু খাইনি। আর পারছি না।
শুদ্ধ মানিব্যাগ বের করে কিছু টাকা গুঁজে দিয়ে মাথা নিচু করে চলে আসে। পতিতা নির্বাক চোখে তাকিয়ে থাকে। ইমু অবাক হয়। শুদ্ধ ছেলেটা এত ভালো কেন। শুদ্ধের প্রতি তার অসম্ভব রকমের টান তৈরী হয়। শুদ্ধকে সে কিছুই বুঝতে দেয় না। বছর খানে কেটে গেলো কোন দিক থেকে টের পেলো না। এরই মধ্যে ইমুর পারফর্ম্যান্সে খুশী হয়ে বেতন বাড়িয়ে পনেরো হাজার করা হয়েছে। ইমুর কাস্টমারকে মুগ্ধ করার ক্ষমতা রয়েছে। বেশ কিছু নামী দামী আউটলেট তাকে ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। শুদ্ধও বলছে জব চেঞ্জ করতে। কিন্তু ইমু যেতে পারে না। তার দুর্দিনে এরা চাকরি না দিলে কি যে হতো আল্লাহই জানেন। শুদ্ধ হাসে, যখন তোমার প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে তখন পাছায় লাথি মারতে কুন্ঠা বোধ করবে না ইমু। জগতটা এরকমই। সময় থাকতে সাবধানী হও।

এক বিকেলের কথা। বাতাসে বসন্তের আবাহন। শুদ্ধ এসে বললো, ইমু। সে ঘাড় তুলে তাকালো। শুদ্ধ বেশ অস্থির। চোখ ফিরিয়ে নিলো। শুদ্ধ আবার তাকালো। বললো, তোমার কলমটা দাও। ইমু কলম এগিয়ে দিলো। কিচ্ছুক্ষণ আবার ফিরে এলো। ইমু জিজ্ঞেস করলো,
- তুমি প্রেমে পরেছো?
- হ্যাঁ।
- ওয়াও। কে সে ভাগ্যবতী।
- ভাগ্যবতী না।
- না? কেন?
- সে তুমি?
ইমু বিস্ময়ে উঠে দাঁড়ায়, কি বলছো তুমি?
- সত্যি বলছি। তোমার চোখে চোখ রেখে বলছি। আই লাভ ইউ ইমু। তুমি কি আমাকে ভালোবাসবে?
চোখ ফেঁটে কান্না এলো ইমুর।
- তুমি আমার অতীত জানো না শুদ্ধ ভাই। জানলে আমাকে শুধু ঘৃণাই করবে।
- আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমার অতীত না জানলে তোমাকে জানি। আমার হৃদয়কে জানি। এর থেকে বড় সত্য আর কিছু হতে পারে না।
ইমু শুদ্ধকে ফিরিয়ে দিতে পারে নি। সমকামী জগতে যে শুধু সেক্স নয় ভালোবাসাও যায় তা আবিষ্কার করতে শুরু করলো ইমু। ভালোবাসায় উন্মাতাল হয়ে উঠলো দুজন। আর তখনি ইশুর আগমন। ছোট্ট ময়না পাখিটি। তখনো বোল ফোঁটেনি। প্রথম বোল ফুটলে শুদ্ধ তাকে বলতে শেখালো আই লাভ ইউ ইমু। ইমু চেষ্টা করেছে আই লাভ ইউ শুদ্ধ বলাতে। কিন্তু পাজি পাখিটা একদম কথা শোনেনা। সে উলটো বলবে আই লাভ ইউ ইমু।

শুদ্ধ আর ইমুর ভালোবাসার ডালপাশা আশপাশে ছড়ালো। সে এতদিন যেন চোখ বুজে ছিলো। রমনা পার্কে যে এত এত গে দের সমাবেশ ঘটে তা এতদিন দেখতেই পায়নি। কিন্তু এসবের প্রতি সে ফিরেও তাকায় না। তার এখন শুদ্ধ আছে। তার ভালোবাসা।

কিন্তু কপালটাই যে খারাপ। দুবছরের মাথায় আবার কপাল পুড়লো। শুদ্ধ মায়ের একমাত্র সন্তান। বাড়ি থেকে মা বিয়ের চাপ দিচ্ছে। শুদ্ধর মাকে ইমু বেশ কয়েকবার দেখেছেন। স্কুলে শিক্ষকতা করেন। মার্জিত রূচির মানুষ। তাকেও ছেলের মত আদর করেছেন। বাবা মায়ের কথা জিজ্ঞেস করারে ইমু বিব্রত বোধ করলে তিনি পরিস্থিতি হালকা করে দিলেন। ইমুর অতীত এখন শুদ্ধ জানে। দাড়ি কমা সহ। শুদ্ধেরও বেশ মায়া হয়। শুদ্ধ তার মাকে সব বলে দিয়েছে। সে প্রথাগত বিয়ে করতে পারবে না। ইমুকে ভালোবাসে।

এক মংগলবার বিকেলে উদভ্রান্তের মত শুদ্ধর মা এসে হাজির। ইমু দরজা খুলে দিলো। ভেতরে ভেতরে এত কিছু হয়ে গেছে শুদ্ধ তাকে কিছু বলেনি। শুদ্ধের মা আস্তে আস্তে সব খুলে বললেন, পারলাম না বাবা। অনেক বোঝালাম মনকে। ভেবেছিলাম ছেলে যেভাবে চায় বাঁচুক। কিন্তু ছেলে ছাড়া আমার আর কেউ নেই। ওকে ঘিরেই আমার সব স্বপ্ন। এদেশে এখন তোমাদের স্বীকৃতি নেই। এভাবে তোমরা কতদিন বাঁচবে। এই সমাজ তোমাদের বাঁচতে দেবে না। তিলে তিলে মারবে। মা হয়ে কিভাবে মেনে নেবো সন্তানের মৃত্যু। জানিনা তোমাদের কাছে স্বাভাবিকতার সংগা কি। কিন্তু আমি আমার ছেলের স্বাভাবিক জীবন চাই। আর দশজন স্বাভাবিক মানুষের মত। আমার উঠোনে নাতি নাতনীরা খেলা করছে আমার এই স্বপ্ন কি অপূর্ণই রয়ে যাবে বাবা।

ইমু শুদ্ধের মায়ের হাত ধরে, আপনি চিন্তা করবে না। শুদ্ধ বিয়ে করবে। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি।

শুদ্ধ যে এত গোয়ার ইমুর জানা ছিলো না। কিছুতেই রাজী করানো যাচ্ছে না। সপ্তাহ খানেকের প্রচেষ্টায় তাকে রাজী করানো গেলো। শুদ্ধর একটাই প্রশ্ন, তোমার কি হবে ইমু?
- আমার যা হওয়ার হবে। ভাসতে ভাসতে এসেছিলাম। ভাসতে ভাসতে বাঁচবো।
- না। তুমি এই বাসাতেই থাকবে। আমি তোমার সব খরচ বেয়ার করবো।
- না শুদ্ধ। তুমি বিয়ের পর আমার সাথে আর যোগাযোগ রাখবে না। কথা দাও। এই কথা আমি দিতে পারবো না ইমু।
- কথা তোমাকে দিতে হবেই।

ইমু জানেনা ভালোবাসার মানুষকে সরিয়ে দিয়ে ভূল করলো কিনা। বিশাল এই পৃথিবীতে সে বড্ড একলা হয়ে গেছে। তবুও তো একজন মায়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে। যে মা তার সন্তানকে বোঝার চেষ্টা করেছে। শুধু যাসনে বাবা যাসনে বলে চেচায়নি। মা কি পারতো না চলে আসার দিন তার পথ আটকে দাঁড়াতে। নাকি মাও লজ্জা পাচ্ছিলো হিজড়া ছেলের জন্য! ছেলে হয়ে ছেলেকে চুমু খেলেই বুঝি হিজড়া হয়ে যেতে হয়।

আবার বসন্ত এসেছে। শুদ্ধর বিয়ে হয়ে গেলো। ঘরের কোনে কোনে শুদ্ধর স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। বিছানার ভাঁজে, বেলকনির টবে। ইমু বিছানায় শুয়ে আছে। চোখের কোনা বেয়ে জল ঝরছে। পোড়া চোখ আর কত জল ঝরাবি। ইশু উড়ে এসে ইমুর বুকের উপর এসে বসলো, আই লাভ ইউ ইমু। ইমু শব্দ করে কেঁদে উঠলো।

কলিংবেলের শব্দ শুনে ইমু দরজা খুললো। দরজার বাইরে শুদ্ধর মা দাঁড়িয়ে আছে। পাশে ইয়া বড় লাগেজ।
- আপনি?
- হ্যাঁ। আমি। তুমি আমাকে স্বপ্ন দিয়েছো। আমি তোমাকে মা দেবো। মায়ের কি জায়গা হবে নতুন ছেলের ঘরে?

ইমু নিচু হয়ে শুদ্ধের মায়ের পা ছুয়ে কদমবুচি করলো। পোড়া চোখে আবার কেন জল এলো।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×