মূল দাবি একটাই, ‘যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই’৷ এই দাবি নিয়ে পাঁচই ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগ চত্বরে অবস্থান করছে তরুণ প্রজন্ম৷ তাদের সমর্থন জানাচ্ছে সবশ্রেণির মানুষ৷ ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে ১৪০ ঘণ্টা৷ কিন্তু এক চুল নড়েনি তারা৷
ব্লগার এন্ড অনলাইন অ্যক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক
‘ট্র্যাইবুনালে কাদের মোল্লার প্রহসনের রায়ের বিরুদ্ধে মহাসমাবেশ’ - এই শিরোনামে পাঁচ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল ব্লগার এন্ড অনলাইন অ্যক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক৷ ব্লগারদের আহ্বানে সেদিন শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করে সাধারণ মানুষ৷ এখন এই আন্দোলন আমজনতার৷
১৪০ ঘণ্টা ধরে আন্দোলন
শাহবাগে অবস্থান নেওয়া তরুণ প্রজন্ম টানা ১৪০ ঘণ্টা ধরে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে৷ ‘ছেলেবুড়ো’ নামক এক টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকেও আমাদের জানানো হয়েছে সেকথা৷ ডয়চে ভেলের ওয়েবসাইটে নিয়মিত সেখানকার হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে৷
জাতীয় দলের আগমন
রবিবার প্রজন্ম চত্বরে এক টুকরো আনন্দের উপলক্ষ্য হয়ে এসেছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়রা৷ আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল, শাহবাগে অবস্থান নেওয়া ব্লগার, তরুণ সমাজের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে আসছেন তাঁরা৷ রবিবার সেই খবরের সত্যতা প্রকাশ পেলো৷
টুইটার লড়াই
হ্যাশট্যাগ #shahbag, কেউ কেউ ব্যবহার করছেন #shahbagh - আসলে শাহবাগের ইংরেজি বানান নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে৷ উইকিপিডিয়া শেষের এইচটি বাদ দিলেও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার সেটি ধরে রেখেছে৷ এই বিভ্রান্তি অবশ্য টুইটার লড়াইকে পেছনে ফেলেনি৷ বরং সমানতালে দু’টি হ্যাশটাগ দিয়েই জানানো হচ্ছে আন্দোলনের অগ্রগতি৷
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে ‘শোধরানোর’ চেষ্টা
শাহবাগের প্রতিবাদ কি যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে না ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে? বিবিসি ইংরেজি বিভাগে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের শিরোনামে এই বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল৷ টুইটারে আন্দোলনকারীদের অব্যাহত দাবির পর সেই শিরোনামে বদল এসেছে৷ ইসলামপন্থী বাদ দিয়ে যুদ্ধাপরাধ শব্দটি জোড়া হয়েছে সেখানে৷ এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে আমারব্লগ৷
‘শাহবাগ সাইবার যুদ্ধ’
প্রজন্ম চত্বরে অবস্থান করছেন ‘শাহবাগ সাইবার যুদ্ধ’ দলের অনেক সদস্য৷ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইট ব্যবহার করে যুদ্ধাপরাধীদের চরম শাস্তির দাবিকে আরো সোচ্চার করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা৷ পাশাপাশি প্রজন্ম চত্বরের সর্বশেষ পরিস্থিতিও ইন্টারনেটে তুলে ধরা হচ্ছে এদের মাধ্যমে৷
জিন্নাত গোনিম নামক ঢাকার এক বাসিন্দা টুইটারে লিখেছেন, ‘‘আমরা কোন রাজনৈতিক দল, ধর্ম বা জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি নই৷ আমরা বাংলাদেশি৷ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাচ্ছি, আমার মায়ের হত্যাকারীর, বোনের ধর্ষকের বিচার চাচ্ছি৷ আমাদের আপনার সহায়তা প্রয়োজন৷’’
এই প্রজন্মের নারী মুক্তিসেনাদের লড়াই
গত কয়েকদিন ধরেই গণমাধ্যমের শিরোনামে জায়গা করে নিচ্ছেন লাকি আক্তার৷ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী আন্দোলন শুরুর দিন থেকে রয়েছেন শাহবাগে৷ তাঁর মতো আরো কয়েকজন নারী মুহুর্মুহু শ্লোগানে কাপিয়ে তুলছেন প্রজন্ম চত্বর৷ বিভিন্ন স্কুলকলেজের ছাত্রীরা মাঝেমাঝে হাজির হচ্ছেন আন্দোলনে৷
‘ফাঁসির মঞ্চ’ প্রস্তুত
‘রাজাকারের ফাঁসি চাই’ - এই হচ্ছে প্রজন্ম চত্বরে আন্দোলনরতদের মূল দাবি৷ যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করলে তা প্রত্যাখ্যান করে তরুণ প্রজন্ম৷ তারা চায় ফাঁসির আদেশ৷ শাহবাগে প্রতীকী ‘ফাঁসির মঞ্চ’ তৈরি করে যুদ্ধাপরাধীদের চরম শাস্তির অপেক্ষায় আছে ব্লগাররা৷
সপরিবারের শাহবাগে
শাহবাগে অনেকেই হাজির হচ্ছেন সপরিবারে৷ ক্রিকেটার থেকে শুরু করে সাহিত্যিক, অধ্যাপক অনেকেই এসেছেন সপরিবারে৷ এই ছবিতে এক শিশুকে দেখা যাচ্ছে শাহবাগ চত্বরে, প্রতিবাদী ব্যানার মাথায় জড়িয়ে৷
সংগৃহীত
সূত্র: জেগে আছে প্রজন্ম চত্বর