আপনার আমার সন্তানেরা নিরাপদেই পৃথিবীতে অবতরণ করেছে। তাদের এই অবতরণকে ঝুঁকিমুক্ত করতে ব্যয়বহুল হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের সামনে কত উত্তেজনা নিয়েই আমি আপনি নখ কামড়াতে কামড়াতে পায়চারি করেছি। তারপর সেই কাঙ্খিত অতিথি ভূমিষ্ঠ হয়ে যখন প্রথমবার কেঁদে উঠেছে, সাথে সাথে মিষ্টি বিতরণের ধুম পড়ে গেছে। ফেনীর রবীন্দ্র দাসের স্বপ্নগুলো হয়ত আপনার আমার মত রঙ্গিন ছিলনা। কিন্তু কমতি ছিলনা তার উত্তেজনার, কমতি ছিলনা তার বাবা হবার প্রজাপতি স্বপ্নে।
২০-২৫ জন সশস্ত্র যুবক তাদের পাড়ায় হঠাৎ ঢুকে চালাল ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট। বাধা দেয়ায় তার সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী তুলসি রানী দাসের(১৮) উপর করা হল মধ্যযুগীয় নির্যাতন। প্রচণ্ড রক্তক্ষরণের পর তুলসি দাস পরদিন ভোরে জন্ম দিল একটি মৃত শিশুর। বাবা হবার খুশিতে মিষ্টি বিতরন করা আর হলনা রবীন্দ্রর।
কিন্তু কেন? ওরা হিন্দু বলে? ওদের প্রতিরোধ করবার ক্ষমতা নাই বলে? এই আমার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ? এইকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?
আর লজ্জা লাগেনা। ঘেন্না লাগে। মুখের মধ্যে থুথু জমিয়ে ইচ্ছে করেই আকাশের দিকে ছুঁড়ে মারি, যাতে সেই থুথু আমারই মাথায় এসে পড়ে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:১৬