এক বছরের বেশী সময় ধরে সামহোয়্যারইনের "বাঁধ ভাঙার আওয়াজ" ব্লগের সদস্য। ঠিক মনে নেই কি ভাবে এ ব্লগের সন্ধান পেয়েছিলাম, খুব সম্ভবত গুগলের সার্চ করতে গিয়েই! ভালোলাগা থেকেই শুরু। লেগে আছি ব্লগেই হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও।
এক.
বাংলায় টাইপ করার কোনরকম পূর্ব অভিগ্যতা না থাকায় প্রথম প্রথম প্রচন্ড সমস্যা হতো। ৩ শব্দের এক বাক্য টাইপ করতে সময় লাগতো ৩ মিনিট। হাঁটি হাঁটি পায়ে পায়ে শুরু করলাম লেখা। এ সময় বেশ সাহায্য পেয়েছিলাম ব্লগার এস এম মাহবুব মুর্শেদের কাছ হতে। তার উদ্ভ্রান্ত ইয়াহু থেকে বিশাল এক মেইল পেয়েছিলাম যা অনেক কাজে এসেছিলো। অনেক কৃতগ্যতা মামুর কাছে।প্রথম পোস্টের প্রথম কমেন্ট ছিলো শাওনের কাছ হতে, যা পরে অতিথি হয়ে গিয়েছিলো সামহোয়্যারইনের ইউনিকোড কারসাজিতে। কৃতগ্যতা শাওনের কাছ হতেই। শাওনের হাত খুলে লিখে যাবার আহবানে সারা দিতে গিয়ে হাত-পা-মুখ খুলে সেই যে লেখা শুরু করলাম, সে লেখা চলছেই। মাঝে সাজে ব্যক্তিগত-পেশাগত-পড়াশোনা-সাংসারিক ব্যস্ততায় লেখার চেষ্টা কমে গেলেও বন্ধ থাকেনি।
দুই.
ব্লগের মাধ্যমে অনেকের সাথেই পরিচিত হবার সৌভাগ্য হয়েছে যা ব্লগের না আসলে কখনই সম্ভব হতো না।
জামাল ভাস্কর, মৌসুমের মতো সাহসী ও সাদা মানুষকে পেয়েছিলাম ব্লগের মাধ্যমেই।
প্রত্যুৎপন্নমতিত্য এবং তিমুরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ ব্লগের মাধ্যমেই, ব্লগের মাধ্যমেই বন্ধুত্বের সুচনা যা ব্যক্তিগত জীবনেও বন্ধুত্বের সূচনা করেছে।
শুভ ভাইয়ের মমতা-ভাতৃত্ব-ভালোবাসার সন্ধান পেতামই না যদি ব্লগে না আসা হতো।
গুরু আরিফ জেবতিকের স্বেচ্ছা শীষ্যত্ব গ্রহনও ব্লগের মাধ্যমেই।
ঝড়ো হাওয়ার বাসায় গিয়ে মমতা-ভালোবাসার আঘাতে জর্জরিত হবার সৌভাগ্য হতো না ব্লগে না আসলে।
ভাস্করদার বাসায় রাগইমনের সাথে সামনা সামনি দেখা করার সৌভাগ্য-দূর্ভাগ্য দুটোই হয়েছে, মনে হয়েছে ভদ্রমহিলা খোলা মেলা মনের হলেও মাথায় কিন্চিত সমস্যা আছে।
ব্লগ জীবনের প্রথম অংশগুলোতে কৌশিকদার গালা-গালীতে জর্জরিত হতে হলেও সেই মানুষটির হাস্যজ্বল আচরনের সাথে পরিচিত হতে পারতাম না ব্লগে আসলে।
অন্ধকার ভাইয়ের সাথে দেখা হবার সৌভাগ্য ব্লগের মাধ্যমেই। আজিজের অন্তরে উনার সৌজন্যে পেটপূজা বা শর্মা খাবার কথা ভুলো কি ভাবে? ত্রিভুজ ছাগলের সাথে পরিচিত হবার সময় আবিস্কার করলাম দুপেয়ে একজন কিভাবে ব্লগে ছাগলের মতো আচরন ও লেখালেখি করতে পারে। আস্তমেয়ের সাথে পরিচয় ব্লগে, সামনাসামনি দেখাও হয়েছে। তাকে দেখে অবাক হয়েছি একজন মানুষ কিভাবে ইসলামকে জামাতে ইসলামীর সাথে গুলিয়ে ফেলে এবং কিভাবে বিভ্রান্ত হয়ে যায় !! ছোট বোনের মতো দেখি আস্তকে,যদিও তার রাজনৈতিক চেতনার সাথে আপোষ করার দূর্ভাগ্য কোনোদিনই হবে না।
মাশা, আবু সালেহ, জানতে চাই, মাশিদের সাথে পরিচিত হলেও আলাপ করা হয়নি। ফয়সাল আরেফিন "অণৃন্যের" সাথে দোস্তালী থাকলেও তার সাথে দেখা করতে পারিনি দোস্তের কোন এক অজানা কারনে। আড্ডাবাজের সাথে দেখা করার থাকলেও উনার ডিগবাজীতে সেটা সম্ভব হয়নি।
অনেক শখ ও স্বপ্ন ছিলো বিষন্ব মানব নাজমুল আলবাব মামুর সাথে দেখা করার জন্য সিলেট যাবো, সম্ভব হয়নি। মনের টান যখন রয়েছে তখন ইনশাল্লাহ দেখা হবেই মামু ও উনার বাবাইয়ের সাথে। আর অনেকের সাথেই আলাপ আছে মেসেন্জারে, ঘনিস্ঠতা হয়নি। অনেকের সাথেই ফোনালাপ হয়েছে , যেমন; জ্বীনের বাদশা, ইরতেজা।
তিন.
ব্লগে আসা মুলত বাংলার প্রতি পাগলপরা টান থেকেই। বাংলা লেখা ও পড়া থেকে দূরে থাকার যুগের বেদনা কিছুটা হলেও দূর করেছে বাঁধ ভাঙার আওয়াজ ব্লগ। ব্লগে মুলত লেখেন শখের অপেশাদার লেখকরা (যারা ব্লগার হিসেবেই পরিচিত হতে ভালোবাসেন ) যাদের অনেকেই প্রবাসী। দেশে বসেও অনেকেই লিখছেন। মনের যা আসে তাই লেখার চেষ্টা করেছি। হয়তো আনাড়ী সব লেখা মানোর্ত্তীন্ন হয়নি, তবুও নিজের স্মৃষ্টিতে নিজেই মুগ্ধ হয়েছি।
--------
(চলবে...)