পৃথিবীতে এমন বহু জায়গা আছে, যেখানে একেবারে একা গেলেও মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও চিন্তাই করতে হবে না। তেমনই ১২টি শহরের নাম দেওয়া হল.।
টোকিও, জাপান: জানেন কি এই শহরে মেয়েদের কান্নার জন্যে আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা আছে! অবাক হবেন না। টোকিও-র মিতসুই গার্ডেন ইয়টসুয়া হোটেলে এমন একটি ঘর রাখা আছে, যেখানে গিয়ে মন খারাপের কিছুটা সময় কাটিয়ে আসতে পারেন কোনও নারী পর্যটক। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পক্ষ থেকে প্রকাশিত ২০১৫ সালের সেফ সিটি ইন্ডেক্সে প্রথম সারিতে রয়েছে টোকিও।
সিওল, দক্ষিণ কোরিয়া: গ্যাংনাম স্টাইলে ছুটি কাটাতে চাইলে এর থেকে ভালো অপশন আর কিছুই হতে পারে না। হান নদীর চারপাশে সাইকেল করে নিজের ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়ানোর মতো অভিজ্ঞতা হাতছাড়া করবেন না। মাঝরাতেও সিওলের রাস্তায় আপনি একেবারে নিরাপদ। তাই অন্তত একবার দংদায়েমুন স্ট্রিট মার্কেটের মিডনাইট শপিংয়ে যান। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পক্ষ থেকে প্রকাশিত ২০১৫ সালের সেফ সিটি ইন্ডেক্সে নাম থাকার পাশাপাশি মহিলাদের জন্যে সেরা ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমের ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে।
টোরান্টো, কানাডা: ২০১৫ সালের সেফ সিটি ইন্ডেক্স অনুযায়ী উত্তর আমেরিকার সব থেকে নিরাপদ শহর হল টোরান্টো। খাদ্য রসিকদের জন্যে আদর্শ গন্তব্য এই শহর। সারা পৃথিবীর নানা রকম খাবারের স্বাদ পাবেন এখানে। কোনও চিন্তাভাবনা না করেই ব্যাকপ্যাক নিয়ে বেড়িয়ে পড়ুন। চায়নাটাউন থেকে শুরু করে রঁসেভাল-এ ঘুরে আসুন।
দুবাই, ইউএই: শপিং-এর নেশা থাকলে দুবাই আপনার জন্যে আদর্শ। একটা শহরে ৫০-এরও বেশি শপিং মল আছে। দুবাই মল হোক বা কারামা শপিং কমপ্লেক্স, আপনি যা চাইবেন সব পাবেন হাতের মুঠোয়। তবে অনেকেই ভাবেন দুবাইতে কতটা নিরাপদে ঘুরতে পারেন মেয়েরা? তাহলে কয়েকটা কথা মাথায় রাখুন, এই শহর এমনতি খুবই নিরাপদ। তবে খুব বেশি খোলামেলা পোশাক না পরাই ভালো।
মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া: বিচ যাঁদের প্রিয় এবং ওয়াটার স্পোর্ট যাঁদের ভালোলাগে তাঁদের জন্যে আদর্শ জায়গা অস্ট্রেলিয়ার এই শহর। সোরেন্টো বিচ হোক অথবা এলউড বিচ উপভোগ করুন প্রাণভরে। সফরের মাঝে একবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডও ঘুরে আসুন। মোলবোর্নকে হোয়াইট রিবন সিটি-ও বলে। মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়ার অঙ্গিকার নিয়েছে এই শহর।
নিউ ইয়র্ক, ইউএসএ: নিউ ইয়র্ক শুনেই ঘাবড়ে যাবেন না। বড় শহর মানেই নিরাপত্তার অভাব এমনটা মনে করার কোনও কারণই নেই। ফিনানশিয়াল কনসালটিং ফার্ম ভ্যালু পিঙ্গুইন আমেরিকার নিরাপদ শহরের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রেখেছে নিউ ইয়র্ককে। মেয়েরা এখানে যথেষ্টই নিরাপদ। নিউ ইয়র্ক শহরে দেখার জিনিস ও জায়গার কোনও অভাব নেই। হাতে রুট ম্যাপ নিয়ে নিশ্চিন্তে বেরিয়ে পড়ুন।
সান ফ্রান্সিসকো, ইউএসএ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরও একটি শহর একই ভাবে নিরাপদ। ফিনানশিয়াল কনসালটিং ফার্ম ভ্যালু পিঙ্গুইন আমেরিকার নিরাপদ শহরের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সান ফ্রান্সিসকো। যাঁরা নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করতে ভালোবাসেন তাঁদের জন্যে পারফেক্ট সান ফ্রান্সিসকো।
জুরিখ, সুইত্জারল্যান্ড: ২০১৫ সালের সেফ সিটি ইন্ডেক্সের মতে ইউরোপের নিরাপদ শহরের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জুরিখ। আলপস পর্বতমালার সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো অভিজ্ঞতা মিস করবেন না। আপনি একা তো কি হয়েছে! এই শহরে আপনি একেবারে নিরাপদ। মিউজিয়াম থেকে নাইটলাইফ সবই পাবেন হাতের মুঠোয়। আর সুইস চকোলেটের স্বাদ নিতে ভুলবেন না যেন।
আমস্টারড্যাম, নেদারল্যান্ডস: ২০১৫ সালের সেফ সিটি ইন্ডেক্সের মতে ইউরোপের নিরাপদ শহরের মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে আমস্টারড্যাম। নারীরা এখানে নিরাপদ। তবে খুব বেশি এক্সপেরিমেন্ট করতে যাবেন না। একটু রয়ে সয়ে। বাজেট হলিডে প্ল্যান করতে চাইলে এখানে রয়েছে হস্টেলের ব্যবস্থা। কঙ্গনার ছবি কুইন-এর কথা মনে আছে তো? হস্টেলের ব্যবস্থা এখানে তেমনই। তবে মহিলাদের জন্যে আলাদা হস্টেলেরও ব্যবস্থা আছে। চাইলে নিশ্চিন্তে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন এখানকার রেড লাইট অঞ্চল ওড কার্কে। কোনও রকম অপ্রিতিকর অভিজ্ঞতা হবে না।
রেকজাভিক, আইসল্যান্ড: আন্তর্জাতিক রারী পর্যটন কেন্দ্র আইসল্যান্ডকে মহিলাদের জন্যে সব থেকে নিরাপদ পর্যটন কেন্দ্র বলে ঘোষণা করেছে। যৌন নির্যতন বা হেনস্থার কোনও শঙ্কাই নেই এখানে। প্রকৃতির নিবিড় সান্নিধ্য যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের জন্যে পারফেক্ট ডেস্টিনেশন আইসল্যান্ডের এই শহর। আর আপনি যদি ভাগ্যবান হন, তাহলে দেখা পেতে পারেন সুমেরুজ্যোতির।
হো চি মিন সিটি, ভিয়েতনাম: পুরনো এবং নতুনের মেলবন্ধন ঘটেছে এই শহরে। তবে এই শহর ঘুরে দেখার সব থেকে ভালো উপায় হল সাইকেল। চাইলে পায়ে হেঁটেও এদিক ওদিক দেখতে পারেন। আর ইতিহাসে যদি আপনার আগ্রহ থাকে তাহলে আপনাকে যেতেই হবে রিইউনিফিকেশন প্যালেস এবং ওয়ার রেমেন্যান্টস মিউজিয়ামে। শপিং করতে চাইলে সোজা চলে যান সাইগঁ স্ক্যোয়ারের বেন থান মার্কেটে।
কুইনসটাউন, নিউজিল্যান্ড: লেক ওয়াকাতিপুর পাশেই রয়েছে এই শহর। নানা রকম অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস যাঁরা ভালোবাসেন তাঁদের জন্যে আদর্শ জায়গা নিউজিল্যান্ডের এই শহর। স্কিয়িং, বাঞ্জি জাম্পিং, প্যারাগ্লাইডিং, স্কাইডাইভিং সবেরই সুযোগ আছে এখানে। আন্তর্জাতিক নারী পর্যটন কেন্দ্র কুইনসটাউনকে নারীদের জন্যে এ দেশের তৃতীয় নিরাপদ শহর বলে ঘোষণা করেছে।
পর্যটন সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে আমার ব্লগ একবার ঘুরে আসতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:২১