করোনার সংক্রমন বাড়লে সবার প্রথমেই স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয় যেটার সাথে অনেকেই এখন দ্বিমত পোষন করেন। ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে এই জায়গায় বাড়তি নজর প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের প্রচন্ড মেধাবী কর্তা ব্যক্তিরা খুব আনন্দের সাথে এ কাজটি করে শিক্ষা ব্যবস্থার বারটা বাজাচ্ছেন! (সভা সমাবেশে আবার ১০০ জন পর্যন্ত অংশগ্রহণ করতে পারবে! বাণিজ্য মেলাও চলবে গাদাগাদি করে!) এর অবসান হওয়া খুবই প্রয়োজন। প্রয়োজনে সব শিশুকে টিকা দিয়ে হলেও স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় চালু রাখা দরকার। আর মাস্ক পরার বিধি বিধান যদি মানা হয় তবে সবচেয়ে ভালভাবে মানা হয় স্কুলগুলোতেই!
পাশাপাশি আমি আরো কিছু ব্যাপারে শিক্ষাবিদ এবং কর্তাব্যক্তিদের কাছে কিছু প্রশ্ন রাখতে চাই।
বিভিন্ন স্বনামধন্য স্কুল যেমন রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল, সেন্ট জোসেফ বা ক্যাডেট কলেজে এডমিশন টেস্টের জন্য যে কয়েক ক্লাস ওপরের পড়া বাচ্চাদের অনেকটা অত্যাচার করে পড়ানো হচ্ছে কোচিং সেন্টারগুলোতে, মানে ক্লাশ ফাইভের একটা বাচ্চাকে ক্লাশ সিক্স, সেভেন বা এইটের অংক কষতে হবে, এটা আসলে শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য কতটুকু স্বাস্থ্যকর বলে মনে করেন? আদতে এতে জাতি কতটা লাভবান হচ্ছে? একটা বাচ্চার মেধা যাচাইয়ের জন্য তার যতটুকু পাঠ্য সেখান থেকেই প্রশ্ন করা বা পরীক্ষা নেয়াটাই কি যথার্থ নয়?
এভাবে ওভার টেলেন্টেড বাচ্চাদের বেছে নিয়ে স্কুলে ভর্তি করে এবং তারপর সেসব বাচ্চাদের নিজের পরিশ্রমের ফল (+ এক গাদা কোচিং/টিউটর এবং বাবা-মায়ের পরিশ্রম) দিয়ে স্কুলের মান মর্যাদা বাড়ানোর যে প্রাকটিস সেটা আসলে কতটুকু নৈতিক? পত্রিকা মারফত জানতে পেরেছি রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ ২৩ জন ছাত্র/ছাত্রীকে ছাড়পত্র দিয়েছে পরীক্ষায় ফেল করাতে!! এখানে কি স্কুলের দ্বায় নেই? উল্লেখ্য, গত বছর লটারিতে ছাত্র ভর্তি করাতে স্কুল শুধু মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের নির্বাচন করতে পারে নি!
আমার সন্তানরা মাইলস্টোন স্কুলে পড়ে, এখানেও পরীক্ষার ছড়াছড়ি, CT, MT, এরপর টার্ম পরীক্ষাগুলো!
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মনজুরুল ইসলাম স্যার বলেছিলেন, "আমাদের দেশে এখন আর কোন শিক্ষার্থী নেই, আছে শুধু পরীক্ষার্থী"...
এই শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে আমরা আসলে কি অর্জন করছি যেখানে ব্যবসাটাই মূখ্য ??