আমি শিশিরের সুষমা হতাম।
আগুনের শিখা হতাম।
সমুদ্রের ঢেউ হতাম।
হতাম আকাশে ওড়া পাখিদের মতন সুখি।
শুধু একবার আমার নাম লিখলে
উপন্যাসের কত কালজয়ী চরিত্রের মতন
তোমায় কবিতার আমিও কালজয়ী হতাম।
লিও তলস্তয়ের আনাকারেনিনার দুঃখকে ছাপিয়ে
আর একটা ষ্টেশন
আরো কিছু গভীর গোপন দুঃখ হয়তোবা আমাদের নেই।
ইবসেনের নোরা,
যার দম আটকানো অদ্ভুত এক পুতুলের মতন জীবন যাপনের ইতিহাস ও আমাদের নয়।
ডল'স হাউসের শেষ দৃশ্যে নোরার চলে যাওয়া।
দরজাটার বন্ধ হওয়া।
এমন কিছু ঘটবার জন্য আমাদের কোন দুঃখ স্মৃতি জমা নেই।
তবে আমাদের আরো অনেক কিছু আছে!
আমাদের দুজনের বানানো নক্ষত্রের চাদর আছে।
আমাদের রেলগাড়ি আছে।
রেলগাড়িতে বুফে কার আছে।
(যেখানকার পুডিং তোমার ভারী পছন্দ)
আমাদের ভোরের স্বপ্ন আছে।
যে স্বপ্নে গায়ে চাদর দিয়ে দিয়ে তুমি আর আমি
শীতের সকালে চায়ের দোকান খুঁজে বেড়াই।
চায়ের কাপ থেকে চা ঢেলে খাওয়া ম্যানার্স এর বাইরে
অথচ স্বপ্নে আমরা সুরুৎ সুরুৎ শব্দ করে চা খাই।
আমাদের স্বপ্ন গুলোতে অনেক গাছের সমাহার।
তুমি গাছ ভালোবাসো বলে তোমাকে ডাকি ইউক্যালিপটাস।
তুমি আমার কোন নাম দাওনি।
বলেছো তার জন্যই নাম দিতে হয় যার নামটা সুন্দর নয়!
এ কথা শুনে আমি অহংকারী ময়ূর হয়ে যাই।
আমি তোমার জন্য দূর্বাঘাসের মালা বানাই।
ঘন কুয়াশায় হাঁটতে হাঁটতে আমরা অনেকদুর চলে যাই।
আমাদের নিঃশ্বাসের সাথে ধোঁয়া বের হয়।
আমি সান্দ্রা বুলকের মতন সুখটান দিতে থাকি।
তুমি হাসতে হাসতে বসে পড়ো।
কত ছোট ছোট সুখ আমাদের পথে জমা হতে থাকে ।
সান্দ্রা বুলককে আমার ভারী পছন্দ! তোমারও তাই?
ছেলেদের মধ্যে পছন্দ হ্যারিসন ফোর্ড আর রিচার্ড গিয়ার।
তোমার আর ও একজন পছন্দ,
জুলিয়া রবার্টস্।
আমারও তাই।
আমাদের কত মিল।
আমাদের কত মিলে যাওয়া সুখ।
অথচ আমরা কত দুর!
তুমি জোনাকী হলে আমি হই রোদ্দুর।
তুমি হরপ্পায় গেলে আমি যাই মোহনপুর।
শুধু তুমি আমাকে নিয়ে যদি একবার কবিতা লেখো
আমি মেনে নিতে পারি আমাদের নির্বাসন।
আমাদের যেনো আন্দামান নিকোবরে কোন দ্বীপে পাঠানো হয়।
তুমি দীনমান কবিতা লিখবে।
আর আমি মেঘের ভেলায় ভাসাবো আমার স্বপ্নলোকের ডিঙা!
তুমি শুধু একবার নাম লিখে দেখো।
আমি কিংবদন্তী হবো তোমার কবিতায়!