রায় শুনে কেউ উৎফুল্ল..
আবার হয়তো কেউবা বিষন্ন..
কারণ, এমন এক ব্যক্তির দন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে তাকে বাংলার মানুষ দু’ভাবে চিনে।
কেউ চিনেন তাকে ‘রাজাকার’ হিসেবে...
আবার কেউ জানেন তাকে একজন প্রখ্যাত ‘ওয়ায়িজ’ হিসেবে...
তার এ দুটি চরিত্রের বৈপরীত্য সাধারণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করে। আর এ থেকে ষোলআনা ফায়দা লুটতে চায় দেশের রাজনৈতিক দল ও রাজনৈতিক নেতারা।
কিন্তু আমরা জানি, ইবলিসের কথা; যে কিনা তার ইলমের কারণে এক সময় ছিল ফেরেশতাদের উস্তাদ। কিন্তু সময় তার অপবিত্রতা প্রকাশ করে তার কুৎসিত রূপকে প্রকাশ করেছে।
ঠিক একইভাবে বালআম বিন বাউরা নামক দরবেশের কথাও জানি। যার কথা পবিত্র কুরআন শরীফ-এর মধ্যে আছে, যাকে আল্লাহ পাক কুকুরের সাথে তুলনা করেছেন। সেও একসময় ছিল ‘মুস্তাজাবুদ দাওয়াত’ মাক্বামের দরবেশ। অর্থাৎ যার দোয়া অবশ্যই কবুল হতো। কিন্তু বালআমের অন্তরের অন্তঃস্থলে থাকা অপবিত্রতা লোভের বশবর্তী হয়ে প্রকাশ হয়ে গিয়েছিল। যা তাকেও উলামায়ে ‘সূ’র স্তরে নিয়ে গিয়েছে।
ঠিক একইভাবে ইবলিসের মতো যুগে যুগে অনেক অনেক উলামায়ে ‘সূ’ ধর্মব্যবসায়ীরা এসেছে, অনেক গুমরাহীমূলক কাজ করে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে; মানুষের ঈমানকে নষ্ট করেছে। মোঘল সম্রাট আকবরের আমলের মোল্লা মোবারক নাগোরী, আবুল ফজল, ফৈজী তারাও একই প্রবাহে সৃষ্টি করেছে দ্বীনে ইলাহীর মতো বিভ্রান্ত পথ।
আর বর্তমান সময়েও একইভাবে দুটি বিপরীত চরিত্রের মিশ্রণ দেখতে পাই আলোচ্য কথিত ‘মাওলানা’, ‘আল্লামা’ ‘মুফাসসিরে কুরআন’ উপাধি ধারণকারী সাঈদীর ক্ষেত্রেও।
যে কিনা ১৯৭১ সালে ছিল ৩০ বছরের নওজোয়ান। জীবনযুদ্ধে এই সময়টাই একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব প্রকাশের চূড়ান্ত সময়।
আর এই সময়েই এই সাঈদী তার চরিত্রের সমস্ত কলুষতা, নাপাকীকে উগড়ে দিয়েছে। যার ফলে সম্ভ্রমহরণ, লুটপাট এমনকি খুন করতেও সে কুণ্ঠাবোধ করেনি। পাকিস্তানি বাহিনীর যুলুমে সহায়তা তার নাপাকীকে দিয়েছে উন্মত্ততা।
সময়ের আবর্তনে এই সম্ভ্রমহরণকারী, এই খুনিই হয়ে গেলো ‘মাওলানা’ ও ‘মুফাসসিরে কুরআন’!
কিন্তু আমরা যদি ইসলামের দৃষ্টিতে দেখি তার মাওলানা হওয়া ও মুফাসসিরে কুরআন হওয়ার যোগ্যতা কি এবং সে কতটুকু ইলম অর্জন করেছে এবং কুরআন শরীফ-এর কতটুকু সঠিক তাফসীর করতো? তাহলে তার কুৎসিত হাক্বীক্বত উন্মোচিত হতো।
সকলেই জানেন, এই সাঈদী রাজনৈতিক দল হিসেবে জড়িত ছিল মওদুদীবাদী জামাতে ইসলামী’ নামক আরেকটি ধর্মব্যবসায়ী দলের সাথে।
আর এই মওদুদীবাদী জামাতের ওহাবী মার্কা আক্বীদার দায়ভার কি সাঈদী এড়াতে পারবে?
এছাড়া রাজনৈতিক কারণে হোক আর ব্যক্তিগত কারণেই হোক সে বহুবার প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে বেপর্দা মহিলাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ ও মিটিং করেছে। একজন হক্কানী আলিমের পক্ষে কি কখনও প্রকাশ্যে কুরআন শরীফ উনার আদেশ এভাবে লঙ্ঘন করা সম্ভব?
এছাড়াও তার ওয়াজে সে যেভাবে ইসলামের বিভিন্ন সম্মানিত বিষয়ের বিষোদগার করেছে; যা শুনলে প্রত্যেক ঈমানদার মুসলমানেরই গা শিউরে উঠবে।
আবার মহিলাদের চালচলন নিয়ে যে ধরনের অশ্লীল কথা তার ওয়াজে বলতো সেটাতো চটির ভাষাকেও হার মানায়..
সম্প্রতি তার চারিত্রিক বিষয় নিয়ে যে কলঙ্কিত অডিও প্রকাশ হয়েছে, যার কারণে তাকে মেশিনম্যানও বলা হচ্ছে...এই অডিও প্রকাশনা কেউ মিথ্যা প্রমাণও করতে পারেনি। এটা কি কোনো আলেমের চরিত্র হতে পারে?
এরকম আরো ভূরি ভূরি অপকর্ম প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে জনমানুষের জানা আছে.......তাহলে আমরা কি এই কথাই আজ বলবো না- কোনো আলিমের নয় এক উলামায়ে ‘সূ’র দন্ডাদেশ দেয়া হয়েছে.....ফাঁসির রায় দেয়া হয়েছে।
আমরা শীঘ্রই এই নিকৃষ্ট ধর্মব্যবসায়ীর প্রকাশ্য ফাঁসি কার্যকর দেখতে চাই....
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৯