যদিও সেই নির্মম করুণ ইতিহাসের সাক্ষী ছিলাম না;
জন্মগতভাবে পৃথিবীর আলো’কেও স্পর্শ করিনি
তবু ইতিহাসের রক্তাক্ত পাতা থেকে পাশবিকতা-ভয়াবহতা’র দুঃসহ
স্মৃতি শ্রদ্ধাবনচিত্তে রোমন্থন করে
নির্মোহ সত্য বলতে মেরুদণ্ড শক্ত করে
বিবেকের মঞ্চে এসে স্থির হয়ে দাঁড়িয়েছি।
কতটা বর্বরতা, বন্য পশুর হিংস্র থাবার মতোন আক্রমণ,
মানুষরূপী জানোয়ারের বেয়নেটের তীব্র খোঁচায় খোঁচায় নিষ্পেষিত
আর বুক বুলেটের ঝাঁঝরা আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত!
যে পবিত্র মাটির বুকে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার
পরাশক্তির দোসেরের নির্মম হত্যাযজ্ঞ
সে মাটি’র প্রতিটি কণা পরিপূর্ণতা পেয়েছিল
লাখো শহীদের পূন্যস্নাত রক্তে,
আর জেলহাজতে ধুঁকে ধুঁকে নিপীড়িত
চার শহীদের বীরত্বগাঁথা’র রক্তের শোকমালায়!
জাতির প্রধান কাণ্ডারীর অদূরদর্শী আত্মসমর্পনে
সমগ্র ভূখণ্ড নিমগ্ন নেতৃত্বহীনতায়!
যখন আজকের অপরাজনীতির ব্রক্ষ্মাস্ত্র মহাগর্বের ‘মুক্তিযুদ্ধ’
দ্বিধা-দ্বন্দ্বে, আত্মক্ষমতা রপ্তের ছেলেখেলা’র
মোহাচ্ছন্নে ফিকে হয়ে আসছিল,
তখন কাণ্ডারীরূপে অবর্তীণ হয়ে প্রকৃত দেশপ্রেমের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত
বিশ্ব দরবারে স্থাপন হল সেই চার নায়কের
মূল নায়কের সুদৃঢ় দিকদর্শী নেতৃত্বে-পরিকল্পনায়।
রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পাঁয়তারায়
নির্মম হত্যাযজ্ঞের মূল নেতৃত্ব নীল সিনেমার পর্দার আড়ালে থেকে
যে হায়নার পা চাঁটা কুত্তা’র দল দিয়েছিল
সেই তো উড়ে এসে জুড়ে বসে স্বাধীনতার অপশক্তিকে
বাংলার বুকে চিরতরে আশ্রিত করেছে
মাথা গোঁজার ঠাই দিয়ে।
ছাপান্নো হাজার বর্গমাইলের সোনার খনি’কে
শত-সহস্র বছর প্রতিক্রিয়াশীলতার দিকে পা বাড়িয়ে
শুধু আত্মক্ষমতা ও আত্মনাম প্রতিষ্ঠা করার ধ্বংসযজ্ঞে
লিপ্ত সেই মূল হটকারী, নির্মম-বর্বর ইতিহাসের স্রষ্টা।
কী অর্জন হয়েছে অন্ধকারচ্ছন্নতায় ভরা
বেয়নেটের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত রক্তাক্ত রাতের জন্ম দিয়ে?
সবকিছু হারিয়ে জমাট বাঁধা রক্ত বুকে বহন করে
বাংলাদেশ আজও বড়ই নিঃস্ব থেকে নিঃস্বতর!!!
“মুক্তিযুদ্ধ” –অর্জিত পবিত্র শব্দটিকে নিয়ে রাজনীতিকগণ রমরমা প্রতিহিংসার জবাহবৃত্তি ব্যবসায় ভরপুর
ক্ষমতায় আসার মহাদৌরাত্মে দলের প্রতিষ্ঠাতার নাম
কবিরাজী ঔষধ হিশেবে বেচে!!!
আবারো বলছি সাক্ষী ছিলাম না
সেই পাশবিকতার-নির্মমতার;
যা রক্তের কালিতে ইতিহাসের পাতায় পাতায় খচিত।
তাই, মহাকালের বর্তমান সাক্ষী হিশেবে
সেকালের সাথে একালের করুণতা
বলপয়েন্ট কলমের কালিতে-ই লিখে গেলাম নির্ভয়ে-নিঃসঙ্কোচে।