সেই তালগাছ আজও আছে এক পায়ে দাঁড়িয়ে
সেই তালগাছ আজও আছে এক পায়ে দাঁড়িয়ে
শহরপাণে তৃষ্ণাতুর দৃষ্টি ছড়িয়ে
তার খেলার সাথী আসবে ফিরে
পীচঢালা পথ ছেড়ে এই মেঠোপথ ধরে।
আসবে ফিরে তার কাছে এই তাল-তমালের গাঁয়ে
বাবুই এর নীড়ে দুলবে দু’জনে গোধূলী বেলার বায়ে।
সেই বেণুবন, সরষেক্ষেত মটরশুটির ডাকে
খেলার সাথী তার আসবেই ফিরে এই রাখালিয়া বাঁকে।
বন্ধু তার হয়তো ভুলে গেছে সেই তাল-তমালের সারি
বহুদূর গাঁ থেকে চেনা যেত যে বাড়ি।
সে বাড়িও আজ তেমনি আছে ঘন বাঁশঝাড়ের আলিঙ্গনে
আজও সেথায় সন্ধ্যা নামে লক্ষী পেঁচার ডাকে।
আজও সেথা রাত নিঝুমে হুক্কা-হুয়া শিয়াল ডাকে
জোনাকজ্বলা রাত গভীরে আজও সেথা কেউ প্রহর গুণে।
সেই জোনাকজ্বলা প্রহরগুণা
লক্ষীপেঁচার সন্ধ্যা নামা
ঘু ঘু ডাকা নিঝুম দুপুরে
ষোড়শী বালিকার জলকেলীতে
কাখের কলসী ঘাটে রেখে
উদাসী বধূর মনাহারা মন ছুঁয়ে
আজও আছে সেই তাল গাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে।
বরষায় ভরপুর তালতলার ক্ষেতে
সেই যে হয়েছিল মিতালী মাছেদের সাথে
বন্ধু, দূর প্রবাসী হয়তো ভুলে গেছে সবই
কিন্তু ভুলেনি সে, হয়ে আছে কালের সাক্ষী
আজও তাই সেই তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িয়ে।
গ্রাম-মাঠ-পথ-নদী পার হয়ে
সুদূর শহরের পাণে দৃষ্টি ছড়িয়ে
খেলার সাথী তার আসবেই ফিরে
স্বর্ণালী এই শৈশবের ঘরে।
আজও তার অপেক্ষা আশাভরা দৃষ্টি নিয়ে
বন্ধু তার আসবেই, সে যে এখনও একপায়ে দাঁড়িয়ে।