আমি জানিনা আমার পূর্ব পুরুষ আমার জন্য কী কী আশীর্বাদ বয়ে এনেছিল। তার পুরোটা আমার
হাতে এসে পৌঁছেনি। পাখির পালকের মত খসে পড়েছে মধ্যপথে। দুর্ভাগ্য আমার! তবুও আবার খুঁজতে চাই পিতৃপুরুষের ভিটেয়, পাবো হয়তো খুঁড়ে শতাব্দী
পুরোনো দীর্ঘশ্বাস। বড় পুকুরের পাড়ে, মাছের ঘের পাহারার মাচানে একদা ঝিমুনো যৌবন
দেখেছিলাম। দেখেছিলাম তার অন্তরালে হাতড়ানো শৈশব। বুকের গহীনে আজও অগাধ শূন্যতা।
ঈশ! যদি আশীর্বাদে প্রাপ্ত সে 'শৈশব' আবারও ফিরে পেতাম! তিন অক্ষরের ছোট্ট শব্দে নিখোঁজ হয়েছে কতকগুলো মানুষ, ঘর বসতি, মাটির বারান্দায় পাতা পিঁড়ি অথবা হোগলা পাটি,
ধুলো ওড়া পথ,পাশের গাঁয়ে
বিয়ের নিমন্ত্রণ, চাঁদের আলোয় কালচে ঘাসে গল্পের আসর,কিংবা ভীষন শীতের রাতে খড়ের বিছানায় গাদাগাদি শুয়ে উষ্ণতা ভাগাভাগি।
ভাবতে অবাক লাগে, পৃথিবীতে আজো চাঁদ ওঠে, ধানক্ষেতে বাসা বাঁধে রোদশালিকেরা, কোনো না কোনো প্রান্তে আজো বিয়ে হয়, হয় গান-গল্পের আয়োজন...তবু শৈশবের সেইদৃশ্যগুলো আর রচিত হয় না আমাকে ঘিরে।
ধাঁধাঁর সবগুলো টুকরা যেন আর মেলানো যায়না।
আমি জানিনা নির্জন দুপুরে মাদুরে বসে এখনও
কোন অজানা শৈশব খেলা করে কিনা! কিন্তু আমার
শৈশবকাব্য আমি হারাতে দেব না। একদিন ফিরে
যাব ঠিক! বাস্তুসাপের মাথার মণিতে গচ্ছিত রেখে
দেব সব। আজ থেকে অনিদির্ষ্ট বছর পর যেদিন
কোনো উত্তর পুরুষ
খুঁজতে আসবে তার উত্তরাধিকার, জ্বলজ্বলে
রত্নের মত তুলে দেব তার হাতে এই সাত রাজার
ধন... আমার পূর্ন আশীর্বাদ!