somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বৈশ্বিক অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি। তবে এই ধারণা মিথ্যা হলেই ভাল। ১৯৭১ এ স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশের কথা ছিল গর্ব করার মত একটি রাষ্ট্রে পরিণত হবার। কিন্তু তা আর হয় নি। কারণ সংবিধানে লেখা হল- গণতন্ত্র। বাস্তবে দীর্ঘ সময় চলল স্বৈরতন্ত্র। যদিও-বা গণতন্ত্র মুক্ত হল তথাপি প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বারা গণতন্ত্র ধর্ষিত হচ্ছে। ফলে গোটা রাষ্ট্রেই এইচআইভি আতংক।
সংবিধানে ছিল-জাতীয়তাবাদ। জাতীয়তাবাদ বলতে এখানে আছে উগ্র জাতীয়তাবাদ। কেউ কেউ মুসলিম জাতীয়তাবাদও প্রচার করছেন। এই জাতীয়তাবাদের মধ্যে বাংলাদেশকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
সংবিধানে বলা হল- সমাজতন্ত্র। সমাজতন্ত্র থাকলে শোষন চলবে কী করে ? শাসকরা স্বার্থ উদ্ধার করবে কী করে ? তাই সংবিধান থেকে কেবল সমাজতন্ত্রকে ঝেটিয়ে বিদায় করাই হয় নি বরং দেশে যারা সমাজতন্ত্রের কথা বলে তাদেরও যথাসম্ভব দমিয়ে রাখে রাষ্ট্র। তাছাড়া সমাজতন্ত্র ও কমিউনিস্টদের তো ইসলামে না-জায়েজ ঘোষণা করা হয়েছে। সুতরাং ইসলাম কান্ট্রি বাংলাদেশে এদের প্রাপ্য কেবল চাপাতি।
সংবিধানে বলা হল- ধর্ম নিরপেক্ষতা। হায় হায় ! মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশে কিসের ধর্ম নিরপেক্ষতা ? কারণ ইসলামে ধর্ম নিরপেক্ষতার অনুমোদন নেই। তাই রাষ্ট্রেরও ধর্ম হল। একটি নির্দিষ্ট ধর্মের অনুসারীদের খুশি রাখতে কেবলমাত্র ধর্মীয় বিষয় বিবেচনা করে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি ঘোষণা করা হল, সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহ’ জুড়ে দেয়া হল, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে আযান দেয়ার বিধান চালু করা হল। ফলে সাম্প্রদায়িকতা ধীরে ধীরে পরিপুষ্ট হতে লাগলো। জনগনের মনস্তাত্বিকতাও দখল করে নিল এসব। রাজনীতিতে চলল এসবের ব্যবহার। সমৃদ্ধ হল জামাত., হেফাজত, আনসারউল্লাহ, হরকতুল জিহাদ....তালেবান....সর্বশেষ আইএস এর তৎপরতা।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী এসব দেখেই বলে দেয়া যায় ? একদমই না। কারণ এর সাথে আরো কয়েকটি বিষয় যুক্ত রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদের পদলেহনকারী। সাম্রাজ্যবাদীরাও আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সুযোগ নেয়। অন্যদিকে অশান্ত অবস্থা বজায় রেখে ফায়দা লোটার জন্য জামাতসহ ধর্মান্ধগোষ্ঠিকে গোপন অর্থ দিয়ে পরিপুষ্ট রাখছে এই সাম্রাজ্যবাদীরাই, যেমনটি তারা সৃষ্টি করেছিল তালেবান। ধর্মান্ধ গোষ্ঠিরা তাই ভেতরের অনুকুল অবস্থার পাশাপাশি আভ্যন্তরীন শক্তিগুলোর সমর্থন তো পাচ্ছেই, সেই সাথে বাহ্যিক ভিত্তিটাও তাদের রয়েছে।

দেশে প্রতিনিয়ত মুক্তমনাদের হত্যা করা হচ্ছে, যুক্তির বদলে চলছে চাপাতি আগ্রাসন। এর সাথে যুক্ত হচ্ছে নতুন বিষয়। ইতালীয় নাগরিক খুন, আইএসের দায় স্বীকার, তার মানে বিদেশিরাও নিজেদের এখানে আর নিরাপদ ভাবতে পারছে না, পাকিস্তানের মত বাংলাদেশেও খেলতে আসা নিয়ে বিদেশিরা নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলছে।

এখন স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাণের মিত্র সাম্রাজ্যবাদীরা বলেতেই পারে- বাংলাদেশ জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে। সুতরাং ঐ অঞ্চল সুরক্ষিত রাখতে মার্কিন সৈন্য অথবা ন্যাটো বাহিনী প্রেরণ করা হল। তারপর নজর চলে যাবে ভূগর্ভস্থ তেল-গ্যাস-কয়লার দিকে.......
তারপর ইরাক, আফগানিস্তানে যা হয়েছিল তাই হবে।

এভাবেই বাংলাদেশ পরিণত হবে ব্যর্থ রাষ্ট্রে। কারণ সাম্রাজ্যবাদ ও মৌলবাদের বিকাশ ঘটাতে রাষ্ট্রই সহায়তা করেছে। এখন এটা এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে সহজে নিস্তার মিলবে না। তাছাড়া রাষ্ট্রের সদিচ্ছাও নেই। আর তাইতো অর্থনীতিতে ভেঙে পড়া গ্রিস যেটা করতে পেরেছে আমরা সেটা করতে পারি নি। প্রতিবেশি ক্ষুদ্র দেশ নেপাল ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ভাষা প্রশ্নে যে দৃষ্টান্ত দেখালো আমরা তাও করতে পারি নি।

অথচ আমাদের রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের মত ঘটনা যা আমাদের অহংকার। কিন্তু সবই হয়তো বৃথা যাবে। কারণ রাষ্ট্র পরিচালনার প্রধান নিয়ামক রাজনীতি, সেই রাজনীতিই বড্ড বেশি নোংরা। হুমায়ূন আজাদ যথার্থই বলেছেন, ‘একদিন সব নষ্টদের অধিকারে যাবে’।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সংস্কারের জন্য টাকার অভাব হবে না, ড. ইউনূসকে ইইউ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইইউর রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×