গল্প-১:
এক মুনি বনের মধ্যে আশ্রমে বাস করতেন। তার একটি ইঁদুর ছিল। কিন্তু কিছুদিন পর দেখা গেল ইঁদুরটি বিড়ালকে ভয় পায়। তাই মুনি মন্ত্র বলে ইঁদুরটিকে বিড়ালে রূপান্তর করলেন। কিছুদিন পর আবার বিপত্তি। মানে বিড়ালটা কুকুর দেখলে ভয় পায়। তখন মুনি বিড়ালটিকে মন্ত্র বলে কুকুরে রুপান্তর করলেন। যাঃ বাবা ! কিছুদিন পর আবার সমস্যা। মানে কুকুরটি বাঘ দেখলে ভয় পায়। অবশেষে মুনি কুকুরটিকে মন্ত্র দ্বারা বাঘ বানিয়ে দিলেন।
অতঃপর একদিন বাঘটি মুনিকেই খেতে উদ্যত হল। উপায়ান্তর না দেখে মুনি তখন “পুনঃ মুষিক ভবঃ” অর্থাৎ আবার তুমি ইঁদুর হও বলে বাঘটিকে পুনরায় ইঁদুরে পরিণত করলেন।
এখন কথা হচ্ছে- এদেশের জনগন দিনে দিনে বুর্জোয়া শ্রেনীর হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়ে ইঁদুর থেকে হিংস্র জন্তুতে পরিণত হবার সুযোগ দিয়েছে এবং এখনও কিছু দলকানা বুদ্ধিজীবি তাদের পাশে থেকে আহ্লাদ দিচ্ছেন। এবং তারাও যখন এই হিংস্র জন্তুদের আক্রমনের শিকার হন তখন আক্ষেপ করেন। কিন্তু “পুনঃ মুষিক ভবঃ” মন্ত্রটি কি তারা জোরেশোরে বলতে পেরেছেন কখনও ?
গল্প-২:
‘চিৎকার’ ব্যান্ডের নাম আমরা কম বেশি অনেকেই জানি। তাদের গানও অনেকেই আমরা শুনেছি। ব্যান্ডটির নাম ‘চিৎকার’ রাখার পেছনে একটি দর্শন রয়েছে। এখানেও সেই ইঁদুরের প্রসংগ। গল্পটি চীনা ভাষা থেকে নেওয়া। একটি ইঁদুরকে একটি বিড়াল তাড়া করেছে। প্রাণভয়ে ইঁদুরটি ছোটাছুটি করছে। অবশেষে ইঁদুরটি একটি দেযালের সামনে বাধা পেল। পেছনে দেয়াল, সামনে বিড়ালের থাবা। ইঁদুরটি নিশ্চিত জানে সে মারা যাবে। তবু শেষ বারের মত সে একটি কাজ করবে। বলুন তো কি ? ঠিক ধরেছেন, জোরেশোরে একটা চিৎকার দেবে।
এখন কথা হচ্ছে- অপরাজনীতি, মৌলবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, জ্বালাও পোড়াও সহিংসতা ক্ষমতার লড়াইসহ নানা অসংগতিতে আমাদেরও দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। প্রশ্ন হচ্ছে- আমরা কি পারি না অন্তত জোরেশোরে একটা চিৎকার দিতে ?
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫১