আমাদের দেশে আমাদের জাতির পিতা, স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যে নোংরামি চলে তা জাতি হিসেবে চরম লজ্জার। এরকম ঘটনা পৃথিবীর আর কোন সভ্য দেশে আছে বলে মনে হয় না। এটার জন্য আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিই মূলত দায়ী।
আমাদের দেশে যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে তাহলে দেখা যাবে সমস্ত অফিস-আদালত থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি টেনে হিচরে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অতীতে এরকম হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে। এমনকি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম, পাঠ্যপুস্তকসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম সরিয়ে ইতিহাস বিকৃতি করতেও বিবেকে বাঁধেনি তাদের। বিএনপি কখনোই বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিতে যায় নি। জাতির পিতা হিসেবেও স্বীকার করে না। বরং বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু দিবসে বিএনপি নেত্রী ভূয়া জন্মদিন পালন করে শোক দিবসের তাৎপর্য এড়াতে চাইছেন।
আবার আওয়ামীলীগও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কম যায় নি । এমনিতেই বর্তমানের আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধের কথা বললেও বিন্দুমাত্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে না। এমনকি মুক্তিযুদ্ধকে পুঁজি বানিয়ে স্বার্থ উদ্ধারে তৎপর। সেই আদর্শহীনতার কারণে বঙ্গবন্ধুর চেতনা থেকেও তারা সরে গেছে দূরে। যত্র তত্র বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুকে একদম সস্তা বানিয়ে ফেলেছে এই দলটি। শুধু তাই নয় বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধুর নাম বসিয়ে বঙ্গবন্ধুর মহিমা প্রচার করতে চেয়েছে। কিন্তু এতে করে কতটুকু গৌরব বেড়েছে তা বোধগম্য নয়।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের দিকে তাকানো যাক- সেখানে কংগ্রেস বা বিজেপি যারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসুক তাদের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীকে সবাই সমান শ্রদ্ধা করে। তাঁর ছবি কখনো হিংসার আঘাতে দেয়াল থেকে ছিটকে পড়ে না। সোনিয়া গান্ধী কিংবা নরেন্দ্র মোদি সমানভাবেই মহাত্মা গান্ধীর প্রতিকৃতিতে করজোড়ে প্রণিপাত করেন, শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অথচ আমাদের দেশে ?
মূল সত্যটি হল, আমরা এখনও কতকগুলো মৌলিক বিষয়ের মিমাংসা করতে পারি নি। এদেশে মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। যতদিন না পর্যন্ত আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু প্রশ্নে একমত হতে পারবে ততদিন পর্যন্ত চলমান এই নোংরা রাজনৈতিক সংস্কৃতি চলতে থাকবে। রাজনীতিতে ভিন্ন মত থাকবেই। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সবার উপরে। তিনি কেবল আওয়ামীলীগের নয়, তিনি আপামর জনসাধারণের।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৮