প্রাণোচ্ছল শহরটি মরনব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে এক মৃত্যুপুরিতে পরিনত হলো। সুদীর্ঘ বছর এই শহরে বাস করে শহরটির একটি দৈনন্দিন ব্যস্ততার চিত্র মননে মগজে স্থির হয়ে আছে। দীর্ঘ লকডাউনে হঠাত করেই তার ছন্দ পতন । "ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন" এই কথাটিই আমরা এখন বিশ্বাস করছি। না করেও কি কোন উপায় আছে? যেদিন সি এন এনের ক্যামেরা আকাশে নির্ভীক ভাবে উড়ে বেড়ানো শকুনের ছবি দেখাচ্ছিল সেদিন সত্যিই ভীষণ আতঙ্কে শক্ত হয়ে গেছি। ততদিনে আমেরিকায় মৃতের সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তার কিছুদিন পরেই ব্রুক্লীন হাসপাতালে গলিত মৃত দেহের পচা গন্ধে নিউইয়র্কের বাতাস ভারী হয়েছে।
আজকে দেখলাম আমেরিকায় মৃতের সংখ্যা ৮৪ হাজার ছাড়িয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়াতে লকডাউনে সময় কাটানো কিছুটা সহনীয় হয়েছে।
লকডাউনের আগের সময়ে হলিডে গুলোতে ঘরে রান্না তেমন করা হত না। একবেলা বাইরে খেয়ে পরেরবেলার জন্য একটা আইটেম সাথে করে নিয়ে আসতাম। এখন রেস্টুরেন্টে যাওয়া হয় না অনেকদিন। সমস্ত রেস্টুরেন্টের চেয়ার গুলো টেবিলের উপর তুলে রেখে দিয়েছে যাতে কেউ বসতে না পারে।
সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স মেনে চলতে বলা হচ্ছে সব জায়গায়। দরকারি কেনাকাটার জন্য বড় বড় চেইন সুপার শপ গুলোতে গেলে লম্বা লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হয়। প্রথমে বিশ জন করে ভেতরে ঢুকতে দেয়। এমন করে ভেতরে প্রবেশ করতে যেয়ে প্রায় এক ঘণ্টার বেশী সময় লাইনে দাঁড়াতে হয়। লাইনেই দাঁড়াতে হয় ছয় ফিট দূরে দূরে।
পৃথিবী যখন সুস্থ ছিল সেই সময় গুলোতে ইয়ং ছেলে মেয়ে থ্যাঙ্কস গিভিং ও ব্ল্যাক ফ্রাইডের সুপার সেল থেকে কেনাকাটা করার জন্য এমন লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতো। আমরা বলতাম ভীষণ ভীড়। কখনোই আমরা ওই সময়ে কোন শপিং মলে যেতাম না। তবে এখন আশ্চর্যজনকভাবে এমন পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিয়েছি। আসলেই মানুষকে সব কিছুই পারতে হয়। করতে হয়। বেঁচে থাকাটাই যে ভীষণ প্রিয় ।
এই ভয়ঙ্কর প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে পালানোর কোন উপায় নেই। আমাদেরকে টিকে থাকতে হবে এটার সাথে যুদ্ধ করে। "খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া মোটেও উচিত না। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় উপযুক্ত প্রটেকশান নিয়েই বের হতে হবে"-- এমন সাবধান বানী এখন পৃথিবী বাসীর জন্য।
বাংলাদেশ থেকে নিউইয়র্ক দীর্ঘ প্লেন ভ্রমণের সময় প্লেনের সীট আর বাথরুম যাওয়া আসা করতে হয় । এই লকডাউনে দীর্ঘ সময় ঘরের ভেতর অবস্থান করতে যেয়ে একটা ব্যাপার গভীরভাবে খেয়াল করলাম তা হোল সকালে বিছানা থেকে উঠে সোফা খাবার টেবিল রান্না ঘর আর বাথরুম পর্যন্ত যাতায়াত সীমিত। একেক সময় মনে হয় প্লেনের ভেতরেই যেন বসে আছি। একেক সময় মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়! তবে মাথা খারাপ করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়।
যেহেতু যুদ্ধ করে টিকে থাকার নামই মানব জীবন তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করার উপায় গুলির উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
১) পজিটিভ ভাবনা ও কাজ করা।
২) শরীরীক পরিশ্রম বাড়াতে ব্যায়াম করা।
৩) ভিটামিন সি, জিঙ্ক ও এন্টিঅক্সিডেন্ট সম্মৃদ্ধ খাবার খাওয়া।
৪) মহান রবের সাহায্য কামনায় ইবাদত করা।
মানসিক সুস্থতায় আরও কিছু টিপস যে কেউ কমেন্ট বক্সে এড করতে পারেন।
সবাই অনেক ভাল থাকবেন। নিজেদের যত্ন নিবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০২০ সকাল ৮:৩১