সুন্দর মায়াময় এই পৃথিবীতে আরও কিছুদিন বেঁচে থাকার প্রচন্ড আকুতি নিয়ে অন্যান্য সবার মতন আমিও গৃহবন্দী জীবন কাটাচ্ছি। সম্পূর্ণ প্রটেকশনে আছি! তবুও টেনশান কাজ করছে। নিউইয়র্ক সিটিতে করোনা আক্রান্ত রোগীর বিস্তৃতি সবচেয়ে বেশী। তবে আশার কথা হচ্ছে ১৪ দিন লকডাউন থাকার পর মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ইচ্ছায়- নিউইয়র্কে করোনা ভাইরাস নিম্নমুখী দেখাচ্ছে। ইতিমধ্যে হারিয়েছি পরিচিত বেশ কয়েকটি মুখ।
গত নয়দিন সম্পূর্ণ বন্দী অবস্থায় ঘরে ছিলাম।আবার বাহিরে না গিয়েও উপায় থাকেনা।নয়দিন পর আজ দরকারি কিছু কেনাকাটা করার জন্য একবার বাড়ীর বাইরে যেতে হয়েছিল। চারদিকে কি সুনসান নীরবতা! ব্যস্ততম চেনা শহরটি আজ খুব অচেনা লাগলো।একদম শান্ত, নীরব। অনেক দূরে দূরে দুই কি একজন পথচারী নজরে এলো।গাড়ির চলাচলের সংখ্যাও খুব কম।
এখন এপ্রিল মাস।দীর্ঘ শীত ঘুম ভেঙ্গে গাছে গাছ ম্যাগ্নলিয়া আর চেরি ফুল ফুটে আছে। পরিষ্কার নীল আকাশ দেখে বুঝার কোন উপায় নেই যে নিউ ইয়র্কের উপর দিয়ে কি পরিমান দুর্যোগ বয়ে যাচ্ছে।
আমার পাশ দিয়ে সাইরেন বাজিয়ে এম্বুলেন্স চলে গেলো এল্মহারস্ট হাসপাতালের দিকে। হয়ত এম্বুলেন্সের ভেতরে তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে কেউ একজন মৃত্যু ভয়ে আতঙ্কিত! ভাবছি এখন পর্যন্ত আমার অনেক সৌভাগ্য যে এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়নি। মহান আল্লাহ, আমাদের সকলকে ক্ষমা করে দিন।
আমি বাতাসে বুক’ভরে শ্বাস নিলাম।খোলা আকাশের নীচে টাটকা সতেজ বাতাস আমার ফুসফুস ভেদ করে কোষে কোষে বহুদূর অবধি ছড়িয়ে যাচ্ছে!
আহ! সুস্থ শরীরে বেঁচে থাকাতে কি আনন্দ!
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:০৮