নিউইয়র্কের বাসিন্দারা বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করে চলেছি। ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে নিউইয়র্কের করোনা পরিস্থিতি। ঘন্টায় ঘন্টায় নতুন নতুন মৃত্যু সংবাদের আপডেটে বিপর্যস্ত লাগছে। গত তিন দিনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এল্মহারস্ট হাসপাতালে পরিচিত তিনজনের মৃত্যু সংবাদ শুনেছি অসহায় হয়ে।
একেক সময় মনে হচ্ছে মৃত্যু আলিঙ্গন করেই বেঁচে আছি। আসলে মৃত্যুর ভেতরেই তো আমাদের সকলের বসবাস।
গত মঙ্গলবার বাড়ী থেকে বের হতে হয়েছিল দরকারি কেনাকাটা করার জন্য। যথেস্ট পরিমান সাবধান হয়েই বের হয়েছিলাম। তাজা ফল ও সব্জী আর দুধ ও দুধজাতীয় খাবার সাত দিনের বেশী স্টক করে রাখা যায় না। তাই আজকে আবার সুপার মার্কেটে যাওয়ার দরকার ছিল। সকালে নাশতা করে রেডী হতে যেয়ে মনে এলো তাজা সব্জী খাওয়ার আগেই যদি শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাহলে এই সব সব্জী আর দুধ কে খাবে? এই কথা মনে আসায় সুপার মার্কেট যাওয়া বাদ দিলাম।
আসলে অনেক বেশী আতঙ্কের ভেতর দিয়ে দিনযাপন করতে হচ্ছে। অনলাইনে অর্ডার করতে গেলাম কিন্তু অ্যামাজন থেকে এখন ফ্রেশ গ্রসারী হোম ডেলিভারী দিচ্ছেনা। তাদের এখন বেশী বেশী বিজি টাইম চলছে। তাছাড়া ডেলিভারী পারসনের শরটেজ দেখাচ্ছে।
নিউ ইয়র্কে কখনো যে এমন ভয়াবহ অবস্থায় পড়বো তা কখনো কল্পনাতেও ছিলোনা কারোরই। টাকা দিলে নাকি নিউইয়র্কে বাঘের দুধও পাওয়া যায় এই কথাটা সবসময় শুনে এসেছি।
ধারণা করা হচ্ছে, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়েই যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি হবে। ওই পরিস্থিতি সামাল দিতে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ২৪ হাজার হাসপাতাল বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অন্তত ৬০ হাজার কম। এতে আরও বলা হয়, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি মে মাস পর্যন্ত বর্ধিত হতে পারে। তারপরও যুক্তরাষ্ট্রে আগামী আগস্টের মধ্যে কোভিড-১৯-এ প্রায় ৮২ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
কি এক কঠিন সময়ের ভেতর প্রবেশ করতে যাচ্ছি আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ভালো জানেন। এই কঠিন অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য মহান রবের কাছে শুধুমাত্র প্রার্থনা রইল। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৯:৩৮