সবাই একজোট হয়ে ভয়াবহ ভাইরাসের আক্রমণ মোকাবেলা করার যুদ্ধে নেমেছি ।শ্বাসরুদ্ধকর এই সময়ে কেমন যে আছি কিছুই বুঝতে পারছিনা। নিউইয়র্ক সিটি লকডাউন করলো।পৃথিবীর বড় বড় শহরগুলো থমকে গেছে ভাইরাসের ভয়ে। আজ সকালে প্রয়োজনীয় কিছু কেনাকাটা করার জন্য সুপারমার্কেট যেতে হোল। থমথমে পরিবেশে সবাই খুব আতঙ্কিত। কি নিয়ে আমরা এতো আতংক করছি ? মৃত্যু নিয়ে ? মৃত্যু তো অনিবার্য। তবে কি নিয়ে? মানসিকভাবে অসুস্থবোধ করছি। কেমন এক বিষাদময় সময়। সারাক্ষণ ধোয়ামোছা করছি । সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিচ্ছি। নইলে ক্লিঞ্জিং প্যাড দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিচ্ছি। কোন ফাঁক গলে পৃথিবীজুড়ে এমন মরণ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ল ? বৈজ্ঞানিক কল্প কাহিনীতে ভাইরাসের তান্ডব নিয়ে এমন অনেক মুভি দেখেছি। চোখ বন্ধ করে যখন এসব ভাবি মনে হয় চোখ খুললেই দেখব আগের মতন স্বাভাবিক পৃথিবী। প্রাণ উচ্ছ্বাসে ভরপুর চারপাশ।
দীর্ঘ দুই মাস বাংলাদেশ কাটিয়ে ফেব্রুয়ারির তিন তারিখ ২০২০ সালের বিকেলে জেএফ কে ল্যান্ড করলাম। বাংলাদেশ থেকে ফিরে আসার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই বিভিন্ন নিউজে জানতে পারলাম যে "করোনা" নামে এক মরনঘাতি ভাইরাস চীনের উহান শহরে মহামারী হিসেবে দেখা দিয়েছে। ব্যাপারটা তখন অব্দি চীন ও ইরানে ছড়িয়েছিল ।
ঢাকা থেকে ফিরে আসার তিন দিন পরেই ঠান্ডা কাশি জরে আক্রান্ত হই। টনসিলের ব্যাথা বেড়ে যাওয়াতে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়। ডাক্তারকে বললাম যে আমি ঢাকা থেকে ফিরেই অসুথ হয়েছি । ডাক্তার আমার কাছে জানতে চাইল আমি চীন গিয়েছিলাম কিনা। জে এফ কে এয়ারপোর্টেও আমাকে এই একই কথা জিজ্ঞেস করেছিল। তারমানে তত দিন পর্যন্ত ভাইরাসটি শুধুমাত্র চীনেই ছিল। এই দেড় মাসে এমন একটি জটিল প্রাণঘাতী ভাইরাস সারা পৃথিবীজুড়ে কেমন করে ছড়িয়ে পড়ল!! আমেরিকার জন্য এই ভাইরাসটির ভয়াবহতা টের পাওয়া অসম্ভব কিছু ছিলোনা! তারপরেও কেন এমন গাফেলতি করলো ট্রাম্প প্রশাসন?
ঘরবন্দী সময়ে কত রকমের কত শত কথা যে মনে আসে! তবে খুব বেশী অসহায় বোধ করছি প্রিয় স্বদেশের কথা ভেবে। সৃষ্টিকর্তার কাছে কায়মনোবাক্যে একটাই প্রার্থনা "হে প্রভু, হে করুণাময় এই মরণ ব্যাধি থেকে আমাদের সকলকে নিরাপদ রাখো সুস্থ রাখো ।
রাবেয়া রাহীম
নিউইয়র্ক
২১/০৩/২০২০
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০২০ ভোর ৬:৫৮