আকাশ জুড়ে সাদা মেঘের ভেলা এক আকাশ মন খারাপ নিয়ে উড়ে চলে ধীর গতিতে
মেঘগুলো ভেসে ভেসে কোনদিকে যায়!
সামনে?
না পেছনে?
পুরনো স্মৃতি, পুরনো বন্ধুর মুখ,
ফেলে আসা জীবন..
সম্মুখে এগিয়ে যাবার সঙ্গে হারিয়ে ফেলি—
হারায় কি?
মধ্যরাতে তাকিয়ে দুরের আকাশে অগুনিত তারা,
আমার মতই একলা জেগে
আমার পানে তাকিয়ে কি?
আবেগ আর অভিমানে হৃদয়ের গভীরে জমা হয় কান্নার যত জল--
হয়ত--ভালোবেসে লীন হওয়ার শেষ ইচ্ছেতেই !
রাতের নিস্তব্ধতা ভাঙ্গে সাগরের গর্জন, তোমার আমন্ত্রণ বুঝি !
কেন জানি ইদানিং হঠাৎ চমকে উঠি,
মনে হয় এই নাম ধরে ডাকলে !
তুমি কেনো ডাকো ?
স্মৃতি হাতড়িয়ে তোমায় খুঁজে পাওয়ার নিরন্তর চেষ্টায়
তোমাতেই হারাই বার বার
প্রচণ্ড শীতকালে তোমার ব্যক্তিগত সন্ধ্যা হতে চেয়েছিলাম,
চাওয়া আর পাওয়ার ব্যবধান আজন্ম হয় কেনো !
সহস্র মাইল দুরের এক শহরে তুমি,
মনে হয় জানালাটা খুলে দিলেই আবার দেখব তোমার সেই চেনা হাসি!
কী দ্রুত বদলে যায় দিন -----
এইতো সেদিন---ভরাট কন্ঠে আবৃত্তি করে যাচ্ছ তুমি
আর খুব কাছেই আপন মনে নিশ্চিন্তে মুগ্ধ আমি--
কোথাও যাওয়ার তাড়া নেই--- নেই কোন পিছুটান
ঘিরে আছে শুধুই আবেশ!
কিছুটা উষ্ণ আবহাওয়া সেই সাথে হাল্কা শীতল বৃষ্টির নরম চাদরে
প্রচন্ড শীতের পর আমেরিকায় এখন বসন্ত উৎসব।
লোকাল খবরের কাগজে পড়লাম তোমার কথা--"কবি অনিকেত নিউইয়র্কে এই শনিবারে" ।
ভাবতেই খুব আনন্দ হচ্ছে তুমি তোমার স্বপ্নের চুড়ায় পৌঁছতে পারলে বলে।
শনিবার সকাল সাড়ে এগারটায় তুমি নিউইয়র্ক আসবে সেই সুদুর বঙ্গদেশ হতে!!
মেঘের ফাঁক থেকে সূর্য্য আধো ঘুম নিয়ে চোখ মেলে তাকানো শুরু করছে মাত্র
শিরায় শিরায় অবাক বোধ জাগানিয়া শিহরণে আমি কাঁপতে থাকি আবার তোমায় দেখবো বলে!
সময় গড়িয়ে যায়---
তোমাকে দেখলাম ধীর পায়ে হেঁটে মঞ্চের দিকে এগিয়ে এলে,
আবারও দেখলাম বহু—বছর পর
হাঁটার ভেতর সেই চির চেনা ছন্দ ।
তোমার মাতাল সুগন্ধ —
ঝিকিমিকি রৌদ্রজ্জল হয়ে চারপাশ ছড়িয়ে পড়ছে কি !
তবে, মঞ্চ তুমি ঠিকই উজ্জ্বল করে রেখেছ তোমার অবাক করা ব্যক্তিত্ব দিয়ে !
চেহারাটা অনেক বদলে গেছে তোমার--
একাকীত্ব আর নিঃসঙ্গতার ছাপ স্পষ্ট ,
ঠোঁটে নিকোটিনের দাগ আরও বেশী গভীর,
সিগারটের সাথে ঘণিষ্ঠতা আবার বেড়ে গেলো কি!
একটু রোগা হয়ে গেছো!
আমি তোমাকে দেখছিলাম কিছুটা দূর থেকে---
কল্পনায় তোমাকে নিয়ে ফ্রেম আঁকছিলাম।
কিছুটা আড়াল করে সেল ফোনে অনেক গুলো ছবি তুললাম,
তুমি জানতেই পারলে না কিছু
এই মুহূর্তে চোখ যেন প্রিয় নদী, বয়ে যাচ্ছে বুকের সমান্তরাল হয়ে।
হঠাত অসাবধানে একটুকরো কাগজ খসে পড়ে তোমার হাত গলে,
ব্যস্ত তুমি মাড়িয়ে যেতেই কুড়িয়ে পাওয়া মানিক যেন তুলে নিলাম।
আহ কি প্রশান্তি!
তোমার ছোঁয়া !
পড়ে যাই আবার তোমাকে অনেক দিন পর।।
অবাক আমি আনন্দশ্রুতে ভাসতে থাকি--এ তো দুজনার একসাথে লেখা কবিতা !!
"উতল জলে কেঁপে উঠে ধরিত্রী বলে,
উদ্দেশ্যহীন চলতে গিয়ে তোমার সাথেই শুরু হল
এ জীবনের চাওয়া-পাওয়া
চলো দুজন দুজনার শ্বাস হয়ে বাঁচি"।।
সত্যি এখনো আমায় মনে পড়ে এভাবে?
অলৌকিক আবেশে এপিটাফের সতেজ ফুলের মতই
তোমায় দিয়ে সাজিয়েছি আমার কবিতার পাতা,
"সমর্পণ" কথাটি বুঝেছি তোমাকে ভালোবেসে!!
বাহিরে ভীষন ঝড় বয়ে যাচ্ছে! দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে গাছ,লতা, গুল্ম,
জানালার সার্সি গড়িয়ে নামে বৃষ্টি ঢল!
তোমার অনুভবের অনুভূতিতে বুদ হয়ে অনায়াসে ভালোবেসে যাই তোমায়,
হৃদয়ের অন্তরালে জমতে থাকে কত শত স্মৃতি কথা
রোমন্থনের মাঝেও কোথায় লাগে যেন ভরসা---
মুছে যায় সব হতাশা,
নেশানেশা ভালবাসা কি একেই বলে !
আজকাল মনে হয় তোমাকে ভালোবেসে যাওয়া ছাড়া,
আমার অন্য কোনও পথ আর নেই।
ঘরোয়া আড্ডায় কবিতার আসরে তোমাকে নিয়ে কথা হয়
আমি আনন্দিত হই,
পুলকিত হই।
আবৃত্তি করি অনিকেত কে-
একটি শেষ না হওয়া গল্পের নায়ক,
যে ভালবেসে ছিলো
ভালবাসতে শিখিয়েছিলো ,
না ছুঁয়েও কি করে সারাক্ষণ ছেয়ে থাকা যায় বুঝিয়েছিলো ----
সে আমার অনিকেত !
নৈঃশব্দ্যের নোনাজল
এটার আগের কবিতা