দক্ষিণভঙ্গের "ক" জেলার ক-৫ আসনের উপনির্বাচন।
প্রায় বারো বছর একটানা শায়েস্তা-খানি শাসনের পর এই আসনের নির্বাচিত প্রতিনীধি আলহাজ্ব মোহাম্মদ রফিক রফিক ভাই সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এভারেস্ট হাসপাতালে ইন্তেকাল করলে এ আসন শূণ্য গোয়ালের মত শূণ্য হয়ে যায়। ফলে নিয়ম অনুযায়ী ডাকা হয় নির্বাচন।
সকলের দৃষ্টি তাই এখন ক-৫ আসনের দিকে। বিরোধী দল বলে বেড়াচ্ছে, - জনগণ গত দু'বছরের দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি এবং লুটপাটের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবে এই নির্বাচনে।
আর সরকারী দল তাদের মান-সম্মান বজায় রাখার জন্য উঠে পরে লেগেছে যেন এ নির্বাচনে তাদের প্রতিনীধী জয়ী, নিজের পুটু বাচানোটাই তাদের কাছে অগ্রাধীকার পাচ্ছে। তারা বলছে, - বিরোধী দল এলাকার পুতুপুতু জনগণকে ভূতের গল্প বলে ভয় দেখাচ্ছে। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না।
বিরোধী দল পালটা জবাব দেয়, - ক্ষমতায় তো আছেন আপনারা। র্যাব, পুলিশ, মিলিটারী, বন্দুকের নল সব আপনার হুকুমে নড়ে চড়ে। এক সময় আমরাও তাদের ব্যাবহার করছি আপনাদের পুটু মারার জন্য, কিন্তু এখন আপনারা পুটু মারছেন। আমরা কেমনে ভয় দেখাবো?
যাই হোক, উত্তেজনাকর পরিবেশেই নির্বাচন শেষ হল। কিন্তু ফলাফল দেখে বঙ্গভূমির ষোলকোটি জনতা টাস্কিত, এমনকি দুই বছরের পিচ্চিটাও মাথায় হাত দিয়া ভাবে, -এও কি সম্ভব!!
নির্বাচনে জয়ী হয়েছে মৃত রফিক রফিকের পোষা বলদ রুপাই রুপাই। জানা যায় তার বঊ-বাচ্চা-আত্মীয়-স্বজন-বন্ধু-বান্ধব-গার্লফ্রেন্ড কাউকে না পেয়ে তার সমর্থক এলাকার পোলাপানরা পোষা বলদটাকে নির্বাচনে দাড় করায়। কেউ একজনকে তো দাড় করাতেই হবে, নইলে জিতবে কেমনে?
এই খবরে সরকার আর বিরোধী দলে ছি ছি পরে গেল। সবাই বলল ক'এর মানুষগুলা আসলেই বলদ, নইলে কি আর বলদকে ভোট দে? বিরোধী দলের লোকেরা বলে, - শালা সরকারের কাজে যদি অতীষ্ট লাগে, তাইলে আমাদের লোকেরে ভোট দিলেই হইত। এইভাবে মুখে চুঙ্কালী দিলি! সরকারী দল মাথায় হাত দিয়ে বলে, - এই দেশের মানুষ আসলেই ভোট দিতে জানে না।
বিশিষ্ট সুশীল টক-শো'তে বলল, - এটা জনগণের একটি প্রতিবাদ। তারা দেখেছে দুই দলের কাছে মানুষ নিরাপদ না। তাদের প্রতি অনাস্থা এবং তাদের অযোগ্য প্রমাণের জন্য তারা একটা বলদকে ভোট দিয়েছে। আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। এমন একটি বাংলাদেশই আমরা চেয়েছিলাম।
এত কথা যখন প্রচার হয়ে গেল তখন নিউজ চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজে আসে ক-৫ আসনে ভোটারদের বিক্ষোভের খবর। তারা বলদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয় এবং ওটা জবাইইয়ের দাবী জানায়। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে যা জানা গেল তা অনেকটা এরকম,
- গত কয়েকদিন ধরে রফিক রফিকের সমর্থকরা রুপাই রুপাই বলদের নামে মিছিল করায় ভোটাররা ভেবেছিল রুপাই রুপাই মনে হয় মৃত সাংসদেরই পরিবারের কেউ। পোস্টারে বলদের ছবি দেখে তারা ভেবেছিল ওটাই মার্কা। এ কারণে তারা বলদের উপরই ছিল মারে রফিক রফিক ভাইয়ের পারিবারিক শাসন বজায় রাখার জন্য। কিন্তু কে জানত সেই পরিবারে বলদটা ছাড়া কেউ নেই?
তাদের দাবী অবিলম্বে আবার নির্বাচন দেয়া হোক। এবার তারা শফিক শফিক ভাইয়ের পরিবারকেই ভোট দিবে।