এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের বঙ্গভূমির আনাচে-কানাচে, গাছতলাম, বাথরুমে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে লীগ অভ সেডোও'র সদস্যরা। দেশের বিভিন্ন ঘটনা-অঘটনে তারা দিন দিন ধরা কে সরা জ্ঞান করছে। আর এইসব লীগ অভ সেডোও'র সদস্যদের আগলে রেখেছে প্রিয়জন হারানোর ব্যথায় ব্যথিত আমাদের সবার পরিচিত "আয়রন লেডি"। বর্তমান ডিজিটাল প্রজন্ম অবাক হয়ে দেখছে তার লৌহ-কঠিন হাত আর অবাক হচ্ছে কি করে এই আয়রন লেডি'র উত্থান হল! কারণ আয়রন লেডি'র হাত ছিল লৌহের মত কঠিন এবং আইনের হাতের মত লম্বা।
কোন কোন দুষ্টলোক বলে থাকেন এই আয়রন লেডি তার সকল ক্ষমতা লাভ করেছে মূলত তার পিতার কাছ থেকে। আয়রন লেডি'র পিতা এ বঙ্গবাসীর অফিসিয়াল জন্মদাতা এবং তার সুবিখ্যাত "ডেড হ্যান্ড" হল লেডির শক্তির মূল উৎস। তাই রাস-রা-গুল কিংবা বেন নয়, মিরান্দার মত আয়রন লেডিই লীগ অভ সেডোও সহ বঙ্গের প্রতিটি এমনকি ঝোপ ঝাড়ের হর্তাকর্তা।
কিন্তু তারপরও পৃথিবী বাসী অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখে এই পুরুষ-শাসিত সমাজে, ১০ বছরে ৫,৭৮০ টি ধর্ষণ এবং অসংখ্য নারী নির্যাতনের দেশে কিভাবে একজন লেডি সকলকে ঘোল খাইয়ে দিল, সকল রাজনীতিককে নুপংসুক বানিয়ে ছেড়ে দিল!! আজ পর্যন্ত একজনও লেডি'র বিরুদ্ধে দাড়াবার মত সক্ষমতা লাভ করতে পারল না!! এমনকি তেতুল হুজুরও শেষে আইরন লেডি এবং লীগ অভ সেডো'র দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বল, "আমরা সবাই ভাই ভাই, আয়রন লেডি'র সনদ চাই"।
আয়রন লেডি'র হাত থেকে রক্ষা পেতে বঙ্গভূমির সবচেয়ে বড় সুপুরুষ, গল্ফ্ খেলায় চ্যাম্পিয়ান, রোমান্টিক কবি এরস্বাদ ঘোষণা দিল, "প্রয়োজনে আমি সুইসাইড করব, কেউ আমারে মাইরালা!!" কিন্তু তারপরও আয়রন লেডি'র এ মায়ার বাঁধন কাটাতে পারল না সে কোনদিন, সেও যোগ দিল লীগ অভ সেডোও'তে। তখন জনপ্রিয় ব্যান্ড শিরোনামহীন গান গাইল,-
সেদিন ঝড়ের রাতে
আততায়ী খুন হয়ে গেল প্রেমিকার হাতে
সেদিন মধ্যদুপুরে
স্বপ্নের নায়ক থমকে গেল নগরীর বাঁকে
শুধু কি তাই? কেয়ার-টেকার গভর্নমেন্ট উঠিয়ে দিয়ে চুশীল সমাজকে জব্দ করে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন বঙ্গভূমি নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার শুধু তার এবং কেবলি তার। কঠোর হস্তে তিনি যখন গদি আকড়ে ধরেন তখন দেশের এক শ্রেণীর দুষ্ট তরুণ দাবী করে ফেলল এইবার দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে কলংক মুক্ত করতেই হবে। আয়রন লেডি তাদের দাবীর প্রতি সাড়া দিলেও শুরু হয় নানান তাল-বাহানা। তখন বঙ্গভূমির আরেক ব্যান্ড Nemesis গুরুত্বপূর্ণ এক গান রচনা করে শোনান,-
"শক্তমুঠো করে রেখেছ
পিছি হাটার হাল ধরে বসেছো
আর কতবার শুনবো প্রচার
হবে বিচার আর কতবার?
তবে আমায় কি দিবে
জলে ডোবা স্বপ্ন দাও ভাসিয়ে
আশা আমার নিশ্বাসে
হাআআআআরিয়ে...."
কেউ কেউ বলে থাকেন এই কয়েক লাইনের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা লুকিয়ে আছে। এমনকি খুজলে আয়রন লেডির ভারতপ্রীতির কথাও পাওয়া যাবে। What a genius !!
তো এভাবে আয়রন লেডি অপ্রতিরদ্ধ গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে। ব্যর্থ হয় সকল আন্দোলন, বিপ্লব-প্রতিবিপ্লব। কেউ আর একটা টু শব্দ করার সাহস পায় না আয়রন লেডির বিরুদ্ধে। পুরান পাগল থেকে শুরু করে ফেসবুকের পাগলের প্রলাপ বকে স্ট্যাটাস দেয়া কেউ তার সম্পর্কে কোন কথা বলার সাহস পায় না মামলা হবার ভয়ে। কারণ এ কথা কে না জানে, আয়রন লেডি'র হাত আইনের হাতের চেয়ে এক মাইক্রো মিটার বেশি লম্বা। আসলে তিনিই হলেন আইন। নয়তো সবাই কি এমনি এমনি নুপংসুক হয়ে পরে থাকে? তাদের শান্তনা দিতেই বুঝি শিরোনামহীন আবার গাইল,-
"লাল-নীল গল্পে তোমাদের দেখা যায়
তোমাদের পরাজয় আমাদের গল্প হয়ে যায়
গল্পে তোমরাও যেতে পার সীমানায়
সীমানার সংঘাত ছাড়বে না ছাড়বে না তোমায়...."
তবু স্বপ্নালু মানুষ স্বপ্ন দেখে সম্ভাবনার। ভাবে একদিন এক "বীর" এসে আয়রন লেডির কালো হাত ভেঙ্গে দিয়ে দেশকে মুক্ত করবে একজন হোয়াইট কিংবা ডার্ক নাইটের মত। তখন দেশে বিরাজ করবে অবিরাম শান্তি, ক্ষমতার অপব্যবহার হবে না, লোডসেডিং নিয়ে "ফাইজলামী" হবে না, গুম-অপহরণ হবে না, ছিনতাই হবে না, দেশ ভারতের তাবেদার হবে না, পদ্মাসেতুর দূর্নীতি হবে না (যদি ততদিনে পদ্মা বলে কোন নদী থাকে), হিংসা-হিংসী হবে না, দেশে গণতান্ত্রিক আবহ বিরাজ করবে.....
আর সেই বীরের প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেই Nemesis-এর গান,-
"কোথায় আছ যে
এলাম তোমারি খোঁজে
সূর্যের আলোতে
আর নাহয় মেঘেরই ভেতরে
কোথায় আছ যে
পারবে কি আমায় জানাতে
মনের ভেতরে
পারবে মন নতুন বানাতে......
........আলোকিত হয়ে ওঠো
আছে সবাই আলোড়িত
জেগে ওঠার কথা বল
কিরণ মেলায় নেবে চল"