শব্দগুলো চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেল দু'চোখের সামনে
দৃষ্টির সান্নিধ্যে অজস্র দাঁড়ি, কমার উন্মুক্ত উল্লাস !
ঠিক যেমন অঙ্গগুলো আমার দেহ থেকে ছুটি নিয়ে
নিজেরা চলে গিয়েছিলো নিজস্ব অধিকারে
যেতে যেতে ওরা আমার অবহেলা ব্যাখ্যা করেছিলো
তারা ধিক্কার দিয়েছিলো আমায় থু থু ছিটিয়ে
আমিও যেন সেদিন করেছিলাম অনুভব- আপন বক্ষের দূষিত বাতাস !
একে একে আমি হারিয়েছিলাম সকল আশ্রয়
সমস্ত অধিকারের নির্লজ্জ অমঙ্গল করেছিলাম বলে ।
'ক্ষমা' ক্লান্ত দেহে বিদ্রোহী হয়ে চলে গিয়েছিলো
সেদিনই আমি অনুভব করেছিলাম 'ক্ষমা' নামে আমার এক বন্ধু ছিলো,
আর সে চলে যাচ্ছে আজ পরাজিত হয়ে.....
আজ নিরাশ্রয় আমি ইতিহাসের পাতাগুলো উল্টাই
যা মূলত প্রয়োজন মনে করি নি কখনো উল্টানোর
সেখানে অজস্র কালির অহেতুক নির্যাস খেলা করছে
সবকিছু যেন পচে গলে ঝরে পড়ছে কোন অন্ধকার ড্রেনে
অথচ আমি পারি নি সহ্য করতে নিজস্ব ইতিহাস !
তাই শেষ পাতা থেকে শব্দগুলো উপড়ে ফেলতে চেয়েছি
শব্দগুলো যেন উড়ে যাচ্ছে নিজ থেকেই
আমি উপড়ে ফেলছে, আর ওরা উড়ছে
গান গাইছে, করছে নৃত্য- যেন দীর্ঘ নরকবাস থেকে মুক্ত হয়ে !
তখনো হৃদয় চাইছে আমার- এক স্বার্থবাদী নতুন উন্মোচন
তার দরকার সাদা পৃষ্ঠা, যেখানে হবে লেখা নতুন করে গোছানো ইতিহাস !
এভাবে শব্দগুলো উপড়ে ফেলতে ফেলতে এলো চলে প্রথম পৃষ্ঠা
যেখানে হয়েছিলো উদয় একটি নিষ্পাপ হৃদয়ের জনম
প্রথম পৃষ্ঠাও হয়ে গেলো শেষ- একটি নষ্টময় ইতিহাসের আত্মঘাতী বিনাশ !
অনুভব করতে লাগলাম নিষ্পাপ হওয়ার অমৃত স্বাদ ।
থমকে দাঁড়ালাম, নতুন শুরুর দিকে এগুতে গিয়ে
অথচ সেখানে নেই অবশিষ্ট কোন পৃষ্ঠা ! তারাও যে,
উপড়ে ফেলা শব্দগুলোর সাথে উড়ে গিয়েছিলো টুকরো টুকরো হয়ে !
আমি হলাম বন্দি কাঁটাতারে মোড়ানো অজস্র কক্ষের একটি কক্ষে।
বস্তুত নেই কারোর জন্য দ্বিতীয় জীবন, যে স্বপ্ন দেখা
এ এক পৃথিবী- জীবন মৃত্যুর সঙ্গমে
ওরা বলেছে, এখানে নেই মুক্তি অস্তিত্ব বিনে একফোঁটা নিঃশ্বাসেরও ।
আমি এখন খুঁজি নির্মমভাবে উপড়ে ফেলা সেই শব্দগুলো
কারণ লেগে আছে তাদের সাথে আমার অস্তিত্ব
খুঁজে পাই যদি,
অন্তত মিলবে তো আমার নরক....
ছবি কৃতজ্ঞতা- নেট ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৩৪