কোন এক ক্ষণে মুঠিবদ্ধ কোমল দুটি হাত আলো দেখে কেঁদে ওঠে
আধখোলা মায়াবী চোখে তাকিয়ে থাকে, মিটিমিটি চলে হৃদপিণ্ডের স্পন্দন
পৃথিবীতে এসেছে এক নিষ্পাপ হাজারো ভাগ্য তারা পিঠে বেঁধে
গুটিগুটি পায়ে দ্রুত বেড়ে উঠে চামড়ায় আবৃত দেহ রেখা
ছুটে চলে আঁকাবাঁকা পথ নির্দ্বিধায় সময়কে পেছনে ফেলে ।
সময়ের আগে ছুটে চলা এ যেন বিধাতা থেকে পাওয়া পরম দায়িত্ব
সকল অসামঞ্জস্যতা বুঝে ফেলার এক অকৃত্রিম ক্ষমতা এঁকে দেয় তার সকল লোমকূপে
অতি যত্নে বুঝিয়ে দেয় তাকে তৃষিত পথের তাবৎ সংকীর্ণতা
পথের বাঁকে বাঁকে নেবে কেড়ে তার ভাগ্য তারার ঝুলি
তাই সোপর্দ করে দাও সময়ের হাতে ত্যাগের অকৃত্রিম নিঃশ্বাস
অতঃপর সে এমন এক শিক্ষায় দীক্ষিত হয়- কেউ আমার নয়, আমিই সবার !
একদিন স্মৃতির সকল বন্ধন কান্নায় ভাসিয়ে সে পাড়ি জমায় অজানায়
সেথায় নাকি অরণ্য গড়তে হবে, সূতোয় সূতোয় বুনতে হবে নতুন মায়ার জাল
ছিঁড়তে দেয়া যাবে না, যদিও হয় দিতে নিজস্ব সকল জলাঞ্জলি
এক অদ্ভুত ভোর শুরু হয়,
সিন্দুকহীন এক অদৃশ্য চাবির গোছা আঁচলে বেঁধে যাত্রায় হয় সুর বদল
সকল হাসি মুখের অগোচরে মিলিয়ে থাকে এক মলিন খসখসে চামড়ার ঠোঁট
বুকে ঝুলিয়ে রাখা স্বপ্নগুলোর এক একটা কাটা পড়ে অন্যের রাজ্য সাজানোতে
সে তখন অদ্ভুত এক হাসিতে ফেটে পড়ে- এ আমার জয়, এ আমার জয়।
মসলার কালিমাখা ঘ্রাণ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে প্রত্যহ এক দেবী
ধৈয্যের বিশাল পর্বত নিয়ে মুখজুড়ে থাকে শীতল কোমল হাসি
সময় অসময়ে ছুটে চলা ঘড়ির কাঁটার ইতিহাস সে জানে না
আঙ্গুলের ভাঁজে ভাঁজে মেলে রাখে হিসেবহীন যত্নের রঙিন খাতা
রাতের আকাশে তাকিয়ে সে খুঁজে বেড়ায় তার নিজস্ব আকাশ
চোখের জলে আপ্লুত হয় সে, তার নক্ষত্র তারা সকল এখন স্বপ্নের রাজ্যে
সে ভাবে তাদের স্বপ্নে কী আমি আছি ? সে খুশি হয় এই ভেবে- অবশ্যই আছি !
নারীকে যদি না পারো দিতে সন্মান
তোমার আধা শরীর নিয়ে কীসের এতো জয়গান ?
তাঁদের যদি দিতে না পারো স্বপ্ন পূরণের আশ্বাস
কীভাবে করো নিজেতে তুমি বিশ্বাস ?
কখনো কী করে দেখেছো তাঁদের তরে কিছু নিঃশ্বাস সমর্পণ !
তবে তো তুমি খুঁজে পাবে তাঁদের কোথায় হয়েছে অস্তিত্বের বিসর্জন ।
বিধাতা করেছে যাদের এতো মহান
অথচ তুমি করছো তাদের নিত্যি হয়রান ।
নারী তো নয় শুধু নারী,
যেখানে যত্নের সমুদ্রে লুকিয়ে আছে ভালোবাসার এক অকৃত্রিম বন্ধন
হৃদয়ের গহীনে লুকিয়ে থাকা চক্ষু দিয়ে যদি দেখো একবার তাকিয়ে
নিশ্চিত তুমি হারিয়ে যাবে সুবিশাল মমতার এক বিদগ্ধ আঁচলের ইতিহাসে।
(কবিতায় ব্যবহৃত 'তুমি' শব্দটি দিয়ে নারী এবং পুরুষ উভয়কে ইঙ্গিত করা হয়েছে ।)
ছবি কৃতজ্ঞতা- নেট ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৩