আমি পারি না লিখতে, সত্য আমি পারি না
ইদানিং ইচ্ছে হয়, কলমকে চিবিয়ে লেখা বের করে আনতে !
আমার ইতিহাস দিন দিন পুরিয়ে যাচ্ছে
নিঃশেষ হচ্ছে কালির সাথে সাথে আমার বহমান রক্তও।
আসে না কোন অক্ষর, আসে না কোন শব্দ
একলা একা জেগে করি চেয়ার টেবিল এলোমেলো
রাত বাড়ে, ঝুড়ি পুরে, মস্তিষ্ক খালি হয়
টেবিল ল্যাম্পটি নিরলস শ্রম দেয়, মিটার চলে অবিরত
তাপক্লিষ্ট মন মনন হয়ে উঠে অস্থির
অতি আপনকে সে যেন হারিয়ে বসেছে !
অজানা ব্যাথা বাড়ে বুকের মধ্যের
সকল রং মলিন হতে থাকে হৃদয়ের
রক্ত জমে চোখে, ভাঁজ স্পষ্টতর হয় কপালে
চশমাটা হয়ে গেছে পুরানো, খসে পড়েছে রং
মশারিটা ঝুলে থাকে, কখনো টানানো যে হয় নি
কয়েলের ঘ্রাণ বের হয় হৃদপিণ্ড থেকে
কোথাও সুর বাজে সন্তান হারানো বেদনার
আমি দাঁড়িয়ে থাকি বারান্দার কার্নিশে মাথা নুয়ে ।
যায় পেরিয়ে এক একটি রাত, আর আমি কাঁদি চন্দ্র হারিয়ে
সান্তনা দেয় না কেউ, শুধু খোলসে জ্বলে থাকে ছোট্ট লাইটটি
শুধু দেয়ালের খসে যাওয়া কর্কশ রং পড়ে থাকে ফ্লোরে
রাত্রি পূজারিদের পা পড়ে নি কখনো এ কামরায়
ওরা ভাবে না আমায় আপন, ওদের চক্ষুশূল আমি !
এলোমেলো বইগুলোর গায়ে এখন আর নতুন ঘ্রাণ নেই
ওরাও যেন আমার শরীর, গন্ধ বের হয় আমার খসখসে চামড়ার
ওদের মন পালটে নি মোটেও, আমি ঘেঁটে ঘেঁটে তাই পাই এখনো !
কিন্তু আমি পাই না আমার মন, শুধু চামড়া আবৃতে একটি দেহ বৈকি ।
ধোঁয়া উঠা বাহারি রঙের মগ বেড়েছে অনেক
রাত বাড়ে, টেবিলে তারা ভিড় করে একে একে
মাঝে মাঝে ভাবী তাদের মত পারতাম যদি হতে
ওরা ভেঙ্গে গেলে নিঃশেষ, আমিও হতাম তেমনি
হয়তো পারতাম ইচ্ছে করে ভেঙ্গে দিতে নিজেকে !
রাত জেগে জেগে খাটছি বেফায়দা মজুরী
কেবলি এক জায়গার মাটি খুঁড়ে পুরছি অন্য জায়গা
উদ্ধার তো করতে পারি না কেঁচোও একটা
তারা স্থানান্তর হয়ে যায় ক্ষণে ক্ষণে
হয়তোবা মুঠিয়ে গেছে আমার কারিগরিত্ব !
এই অমীমাংসিত রাত, আমায় ছুটি দাও এবার
তোমার মুজরা ফুরিয়ে গেছে, খসে গেছে তার চমৎকারিত্ব
সে এখন দেহহীন খোলস, ছুঁয়ে দিলেই উড়ে যাবে !
বিদায় প্রিয় রাত, অপেক্ষা করছে সকাল
ভয় পেও না, সেখানেও রবে তোমার মত তিমির
চোখ দু'টোর যে বয়স বেড়েছে শুধু তোমায় দেখে !
ছবি কৃতজ্ঞতা- নেট ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৫০